বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির ‘সংবাদ’ সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গত রবিবার বিকালে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সংবাদ সম্মেলন একটি বিতর্ক তৈরি হওয়ার পর চ্যানেলটি থেকে সংবাদ বন্ধের ঘোষণা এলো।
উপদেষ্টা ফারুকীর ওই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া একাধিক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, যার মধ্যে ছিলেন দীপ্ত টিভির রহমান মিজান।
এরপরে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। এরপরেই দীপ্ত টিভি কর্তৃপক্ষ তরফে সংবাদ বন্ধের নির্দেশনা আসে।
ওই সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর জুলাই মাসের সহিংসতা নিয়ে উপদেষ্টার বক্তব্যের জবাবে তিন সাংবাদিক- দীপ্ত টিভির রহমান মিজান, চ্যানেল আইয়ের বাশার এবং এটিএন বাংলার ফজলে রাব্বি-একাধিক প্রশ্ন করেন।
তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘খুনি’ বলার মতো রায় আদালত দেয়নি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ১৪০০ জন নিহত হয়েছে-এমন দাবির উৎসও জানতে জান তারা।
এই ঘটনার পরপরই ‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স (জেআরএ)’ নামে একটি ফেসবুক পেজে এই তিন সাংবাদিকের নাম-ছবিসহ প্রকাশ করে বলা হয়, “এরা ফ্যাসিস্ট সরকারের দালাল সিন্ডিকেট।”
পেজটির ওই পোস্টে আরও বলা হয়, এই তিন সাংবাদিকের মাধ্যমে ‘উপদেষ্টার কথার বিরোধিতা’ করা হয়েছে এবং তারা ‘আওয়ামী লীগের পক্ষে’ অবস্থান নিয়েছেন।
এই স্ট্যাটাস ছড়ানোর পর দীপ্ত টিভির ‘সংবাদ’ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসে।
চ্যানেলটির পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে টিভির স্ক্রলে উল্লেখ করা হয়, “অনিবার্য কারণবশত দীপ্ত টিভির সকল সংবাদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলো।”
এদিকে সাংবাদিক ফারুকীকে প্রশ্ন করায় চাকরিচ্যুত হয়েছেন দুই সাংবাদিক। তারা হলেন- দীপ্ত টিভির সিনিয়র রিপোর্টার রহমান মিজান ও এটিএন বাংলা’র বিশেষ প্রতিনিধি ফজলে রাব্বি।
রহমান মিজানকে দেওয়া তার কর্তৃপক্ষের চিঠিতে বলা হয়েছে, “আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, আপনি তাৎক্ষণিকভাবে আপনার চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন। আপনাকে অনুরোধ করা হচ্ছে, কাজী মিডিয়া লিমিটেডের করপোরেট অফিস থেকে আপনার বকেয়া পাওনা সংগ্রহ করুন।”
এটিএন বাংলা’র বিশেষ প্রতিনিধি ফজলে রাব্বিকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
তাকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, “আপনি রিপোর্টিংয়ের যথাযথ দ্বায়িত্ব পালন না করায় আপনাকে ২৯ এপ্রিল থেকে চাকুরী হতে বরখাস্ত করা হল।”