চায়ের নিমন্ত্রণ করে সাংবাদিক নেতাদের সাথে অসদাচরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২০, ২২:১৪

করোনাকালে মানবকণ্ঠ থেকে চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের বকেয়া আদায়ের কর্মসূচি থেকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম তপু বিএফ ইউজের কোষাধ্যক্ষকে চায়ের নিমন্ত্রণ করে ডেকে নিয়ে অসদাচরণ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহার করেছেন মানবকণ্ঠের মালিক নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকার বরুয়া, খিলক্ষেতে আশিয়ান গ্রুপের মালিকানাধীন দৈনিক মানবকণ্ঠ কার্যালয়ের পাশেই আশিয়ান মেডিকেল কলেজ ও হসপিটালে নজরুল ইসলাম ভূঁইয়ার নিজের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মানবকণ্ঠ কার্যালয়ের সামনে বেলা সাড়ে ১১টায় মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে মানকণ্ঠ সংগ্রাম পরিষদ। ৬ থেকে ২০ মাসের বেতন ও অন্যান্য পাওনা পরিশোধ না করে মৌখিকভাবে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে এই কর্মসূচির আয়োজন করে ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও কর্মচারীরা। কর্মসূচিতে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদসহ ডিইউজের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচির এক পর্যায়ে মালিকপক্ষক্ষথেকে আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে কর্মসূচি অব্যাহত রেখে ডিইউজে নেতারা আশিয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম ভূঁইয়ার কার্যালয়ে যান। কিন্তু সেখানে কোনো আলোচনার সূত্রপাত না করে হঠাৎ নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া ও তার লোকজন নেতাদের ওপর চড়াও হন। অফিসের কর্মচারিরা তাকে নিবৃত করেন। এরপরও তিনি অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। হাইকোর্টে দেখা হবে বলেও হুমকি দেন। দেশের কোনো শক্তিই তার কিছু করতে পারবে না বলেও তিনি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেন। এ অবস্থায় ডিইউজে নেতারা বের হয়ে এসে পুনরায় কর্মসূচিতে অংশ নেন।
ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে ডিইউজে সভাপতি বলেন, আমরা মানবকন্ঠের চাকুরিচ্যুত সাংবাদিকদের বকেয়া আদায়ের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করতে। এখানে কোনো মারামারি, হুমকি ধমকি দিতে আসিনি। এই সব আমাদের কাজ না। পাওনা পরিশোধ না করে উল্টা আমরা অসভ্য আচরণের সম্মুখীন হয়েছি। অবিলম্বে পাওনা পরিশোধ করতে হবে। প্রয়োজনে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীর কাছে যাবো। আর কোনো আলোচনার সুযোগ নেই। এবার রাজপথেই এর সমাধান হবে।
ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, মানবকণ্ঠ পত্রিকা অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে। এর আগে আলোচনার নামে সময় ক্ষেপণের পাঁয়তারা করে এসেছে। আর আজ আলোচনার কথা বলে ডেকে নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করা হলো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সব অর্জন আন্দোলনের মাধ্যমেই এসেছে। সাংবাদিকদের দাবিও আন্দোলনের মাধ্যমেই অর্জিত হবে। আমরা হামলা-মামলা সব মোকাবেলা করেই দাবি আদায় করে ছাড়বো। প্রতারক শাহেদ কিংবা হাজী সেলিম আজ কোথায়।
বিএফইউজে কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ বলেন, আপনার অতীত-বর্তমান সব আমরা জানি। কোথা থেকে কীভাবে এই সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন, সাংবাদিকরা লেখা শুরু করলে সব তছনছ হয়ে যাবে। এখনো সময় আছে, ভালোয় ভালোয় সমস্যার সমাধান করুন।
তিনি বলেন, আপনি হাইকোর্টের ভয় দেখান, কয়টা কোর্ট চেনেন আপনি? লোয়ার কোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট- সব কোর্ট আমাদের চেনা। আমরাও আপনাকে দেখে নেব।
মানবকণ্ঠের সিনিয়র সাংবাদিক সাবিরা ইসলামের সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, ডিইউজের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক দুলাল খান, প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সবুজ, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য জুবায়ের চৌধুরী, মানবকণ্ঠের সিনিয়র সাংবাদিক মহিউদ্দিন পলাশ প্রমুখ।
এসময় আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন মানবকণ্ঠের সাবেক সম্পাদক মাহমুদ আনোয়ার।
এদিকে মানববন্ধনের শেষ পর্যায়ে মালিকপক্ষের এক প্রতিনিধি এসে দুঃখ প্রকাশ করে আবার আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন।