বুশকে জুতা ছুড়ে মারায় অনুতপ্ত নন সেই ইরাকি সাংবাদিক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৩, ১৯:০৩

মুনতাজার আল–জাইদি। ছবি: সংগৃহীত
২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসন চালিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোচিত–সমালোচিত হন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। তাই ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের বুশ যখন ইরাকের রাজধানী বাগদাদ সফর ঘিরে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল বাগদাদজুড়ে। এরপরও বিপত্তি এড়ানো যায়নি।
২০০৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাগদাদে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন বুশ। সেখানে এক ইরাকি সাংবাদিক তাঁকে জুতা ছুড়ে মারেন, গালি দেন। ওই সাংবাদিকের নাম মুনতাজার আল–জাইদি। তখন ইরাকের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে কর্মরত ছিলেন তিনি। এ ঘটনা ঘটিয়ে বিশ্বজুড়ে শোরগোল ফেলে দেন জাইদি। তিনিও পরিচিত হয়ে ওঠেন সারা দুনিয়ায়।
এ ঘটনার এক যুগের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এমনকি ইরাকে মার্কিন হামলা শুরুর দুই দশক পেরিয়ে গেছে। এত সময় পরও বুশের প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি, এমনকি ইরাকি রাজনীতিকদের প্রতি মনের মধ্যে ক্ষোভ পুষে রেখেছেন সাংবাদিক জাইদি। বুশকে জুতা ছুড়ে মারা নিয়ে মোটেই অনুতপ্ত নন তিনি।
এ বিষয়ে জাইদি বলেন, ২০ বছর আগে আগ্রাসনকারীদের হাত ধরে যাঁরা ক্ষমতায় এসেছিলেন, তাঁরা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। দুর্নীতির সাগরে ডুবেছে। এরপরও তাঁরা ক্ষমতায় রয়ে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্র খুব ভালো করেই জানে, ওই সময় তারা ভুয়া রাজনীতিকদের ক্ষমতায় নিয়ে এসেছিল।
আরব সংস্কৃতিতে কাউকে জুতা ছুড়ে মারাকে ‘চরম অপমান’ বিবেচনা করা হয়। জর্জ ডব্লিউ বুশকে অপমান করতে ঠিক এই কাজটিই করেছিলেন সাংবাদিক জাইদি।
চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘কুকুর, এটা আপনার জন্য ইরাকিদের পক্ষ থেকে বিদায়ী চুমু।’ ওই সময় বুশের ঠিক পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ইরাকের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নুরি আল–মালিকি।
জর্জ বুশকে জুতা ছুড়ে মারার কারণে গ্রেপ্তার হন জাইদি। ছয় মাস কারাগারে থাকতে হয় তাঁকে। পরে মুক্তি পেয়ে দেশ ছেড়ে লেবাননে পাড়ি জমান। যদিও ২০১৮ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে ইরাকে ফেরেন জাইদি। ইরাকে চলমান লাগামহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে ভোটে দাঁড়ান তিনি। কিন্তু জিততে পারেনি।
এখনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজের লড়াই ও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন জাইদি।