Logo
×

Follow Us

মধ্যপ্রাচ্য

মাথায় গুলি লেগে মারা যান সিনওয়ার

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:১৯

মাথায় গুলি লেগে মারা যান সিনওয়ার

হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নিহত হয়েছেন বন্দুকের গুলিতে। গুলিটি লেগেছিল তার মাথায়। অন্যদিকে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য কাটা হয়েছিল তার হাতের আঙুল। সিনওয়ারের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা চিকিৎসকের বরাত দিয়ে এমন তথ্য দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) দক্ষিণ গাজার একটি ভবনে ইসরায়েলি সেনাদের অভিযানে নিহত হন সিনওয়ার। মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষার পর ইসরায়েল এই হামাস নেতার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে।

তেল আবিবে অবস্থিত ইসরায়েলের ন্যাশনাল সেন্টার অব ফরেনসিক মেডিসিনের চিকিৎসক শেন কুগেল বলেছেন, সিনওয়ারের শরীরে ট্যাংকের গোলা কিংবা অন্য কোনো ক্ষেপণাস্ত্রে মারাত্মক আঘাতও ছিল। তবে মাথায় লাগা গুলিতেই হামাস নেতার মৃত্যু হয়েছে।

সিনওয়ারের মৃত্যুসনদে সই করা ডা. কুগেল বলেছেন, ‘সিনওয়ারের মৃত্যুর কারণ মাথায় গুলির আঘাত। তার মাথায় একটি বুলেট ছিল এবং এতে মারাত্মক রক্তক্ষরণ হয়েছিল।’

চিকিৎসকের এমন ভাষ্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ঘটনাস্থলে গোলাগুলি হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তার দাবি, ট্যাংক থেকে গোলা ছোড়ার মাধ্যমে সেখানে বন্দুকযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।

সিনওয়ারের মৃত্যুর সম্ভাব্য সময় জানতে চাইলে এই চিকিৎসক বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মৃতদেহ যখন হাসপাতালে নেওয়া হয়, তার অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে বুধবার শেষ বিকেলের দিকে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।’

ডিএনএ পরীক্ষা করতে কাটা হয় আঙুল

গত বুধবার যখন ইসরায়েলি বাহিনী সিনওয়ারের মতো দেখতে একটি মরদেহ খুঁজে পায়, তখন তার আঙুল কেটে শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষায় পাঠায়। সিনওয়ার ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি থাকার সময় তার যে প্রোফাইল ছিল তার প্রসঙ্গ টেনে ডা. শেন কুগেল বলেন, ‘ল্যাবরেটরি প্রোফাইল তৈরি করার পরে, আমরা সেটিকে সিনওয়ারের আগের প্রোফাইলের সঙ্গে তুলনা করেছি। আমরা শেষ পর্যন্ত ডিএনএ দ্বারা তাকে শনাক্ত করতে পারি।’

২০১১ সালে বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে মুক্তি পাওয়ার আগে সিনওয়ার ইসরায়েলি কারাগারে দুই দশকেরও বেশি সময় আটক ছিলেন।

কুগেল বলেছেন, তারা প্রথমে সেনাদের তোলা ছবিগুলোর সঙ্গে তার দাঁতের মিল খোঁজার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তা পরিচয় শনাক্তে যথেষ্ট ছিল না।

পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিনওয়ারের মৃতদেহ ফরেনসিক সেন্টারে নেওয়া হয়, যেখানে সম্পূর্ণ ডিএনএ পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তারা শতভাগ নিশ্চিত ছিল যে লাশটি হামাস নেতার, বলেন কুগেল।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিনওয়ারের মৃতদেহের যেসব ছবি ও ভিডিও আগে-পরে এসেছে সিএনএন সেসব যাচাই করে দেখেছে, প্রথমে তার বাম হাতে পাঁচটি আঙুল দেখা গেলেও পরে একটি অনুপস্থিত দেখা গেছে।

যেখানে অভিযান চালিয়ে সিনওয়ারকে হত্যা করা হয়, প্রাথমিকভাবে পাওয়া সেখানকার কিছু ছবি সিএনএন বিশ্লেষণ করে সামরিক পোশাক পরা একজন মৃত ব্যক্তির বাম হাতে ঘড়ি ও মাথায় স্কার্ফ পরা অবস্থায় দেখতে পেয়েছে। যা সিনওয়ার সম্পর্কে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দেওয়া বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায়। ওই ব্যক্তির মাথায় আঘাত এবং ডান হাতও ক্ষতবিক্ষত দেখা গেছে।

পরবর্তীতে আবার যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, তখন ওই ব্যক্তির হাত ঘড়ি, সামরিক পোশাক আর স্কার্ফ আর দেখা যায়নি। বাম হাতের একটি আঙুলও ছিল না।

হামাসের হাত থেকে বন্দি জিম্মিদের মুক্ত করতে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃতদেহ ‘দর কষাকষির’ একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে বলে ইসরায়েলের সূত্র নিশ্চিত করেছে সিএনএনকে।

সিনওয়ারের দেহাবশেষ বর্তমানে ইসরায়েলের একটি গোপন স্থানে রাখা হয়েছে।

অন্তত দুটি সূত্র সিএনএনকে বলেছে, সিনওয়ারের মৃতদেহের বিনিময়ে কীভাবে জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা যায়, সেটিই সম্ভবত এখন ইসরায়েলে অগ্রাধিকার দেবে।

গত বছর ইসরায়েলের হামলা চালিয়ে হামাসের যোদ্ধারা ১২০০ মানুষ হত্যার পর ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল। ওই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মনে করা হতো সিনওয়ারকে।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫