Logo
×

Follow Us

মধ্যপ্রাচ্য

ক্ষুধায় ভুগছে গাজার ৫ লাখ মানুষ, দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে সবাই

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ২০:৩৪

ক্ষুধায় ভুগছে গাজার ৫ লাখ মানুষ, দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে সবাই

ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও খাদ্য মিলছে না গাজার অনেক বাসিন্দার।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকা গাজার প্রত্যেক বাসিন্দা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি বাধায় ত্রাণবাহী গাড়ি ঢুকতে না পারায় ক্ষুধায় ভুগছেন অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ।

সোমবার পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেইজ ক্লাসিফিকেশনের (আইপিসি) বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্য আল জাজিরা।

এদিকে আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা সেইভ দ্য চিলড্রেনও সতর্ক করেছে, গাজার ৯৩ শতাংশ শিশু, যারা সংখ্যায় প্রায় নয় লাখ ৩০ হাজার জন-সংকটপূর্ণ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।

এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, “অবরোধ শেষ করে খাদ্য ও ওষুধ গাজায় ঢোকার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে ১০ লাখ শিশু দুর্ভিক্ষের মুখে পড়বে। শেষমেশ রোগাক্রান্ত হয়ে তারা প্রাণ হারাতে পারে।”

এতে আরও বলা হয়েছে, ত্রাণ ও খাদ্য না থাকায় ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো বেঁচে থাকার জন্য ‘অকল্পনীয় পথ’ বেছে নিয়েছে।

বিবৃতি সেইভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, উত্তর গাজার বাসিন্দারা বেঁচে থাকার জন্য পশুখাদ্য, মেয়াদোত্তীর্ণ আটা ও বালুর মিশিয়ে আটা খেতে বাধ্য হচ্ছে।

চার সন্তানের মা ২৫ বছর বয়সী এক নারী বলেন, “আমরা জানি, ক্ষুধার যন্ত্রণা কেমন। ইতোমধ্যে আমরা মৃত্যুর স্বাদ পেয়েছি। আমাদের শিশুদের শুধু তাদের মরবার পালার জন্য অপেক্ষা করছে।”

সেইভ দ্য চিলড্রেনের মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের পরিচালক আহমাদ আলহেনদাওয়ি বলেন, “ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের পুরোপুরি অবরোধের আওতায় পরিকল্পনা করে শিশুদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কাছে খাদ্য রয়েছে, ত্রাণ রয়েছে, আমরা জানি কীভাবে অপুষ্টির চিকিৎসা করাতে হয়। আমাদের কাছে যা নেই, সেটি হলো গাজায় ঢোকার সুযোগ।”

তিনি বলেন, “গাজায় যেকোনো মুহূর্তে একটি শিশু-যে কারও কাছে পুরো পৃথিবী, বোমা ও গুলিতে, ক্ষুধায় ও রোগ মরে ডেতে পারে। জীবন বাঁচানোর ত্রাণ ঢোকার জন্য ক্রসিং খুলে দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। চোখের সামনে পুরো একটি জনগোষ্ঠীকে ক্ষুধায় ভুগতে দেখে আমরা দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না।”

ইসরায়েল এরই মধ্যে গাজার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দখলে নিয়েছে। মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত দুই মাসের যুদ্ধবিরতির ভেঙে পড়ার পর তারা আবারও স্থল অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে তারা গাজার ওপর পুরোপুরি অবরোধ জারি রেখেছে এবং সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।

এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের মাধ্যমে। ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, ওই দিনে হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। ওই দিন হামাস ২৫১ জনকে গাজায় জিম্মি করে নিয়ে যায়—যা ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন।

ইসরায়েলের স্থল ও আকাশ হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় ৫২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

গাজায় এখনও ৫৯ জন জিম্মির মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের পরিবার যুদ্ধের কারণে তাদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত। সমালোচকেরা বলছেন, ইসরায়েল সম্ভবত এমন এক গেরিলা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে যার স্পষ্ট কোনো লক্ষ্য নেই।


 


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫