অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫০ পিএম
আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩ পিএম
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫০ পিএম
অনলাইন ডেস্ক
আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩ পিএম
লেবাননে হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে সংগঠনটি। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ তথ্য জানায় বলে এএফপির খবরে বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহ সংগঠনটির মহান ও অমর শহিদ কমরেডদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন; যাদের তিনি ৩০ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’
এর আগে এক এক্স বার্তায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে লেবাননভিত্তিক শিয়া ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র সংগঠনের নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, ‘হাসান নাসরুল্লাহ আর বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ পরিচালনা করতে পারবেন না।’
রাজধানী বৈরুতসহ লেবাননের বিভিন্ন জায়গায় গতকাল শুক্রবার রাতভর বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
জানা যায়, ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর কমান্ড সেন্টারে সংগঠনের নেতা হাসান নাসরুল্লাহ ও অন্য নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এরপরই হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার খবর জানানো হয়।
হাসান নাসরুল্লাহর (৬৪) জন্ম ১৯৬০ সালে। বেড়ে উঠেছেন বৈরুতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠের বুর্জ হামুদ এলাকায়। বাবা আবদুল করিম ছিলেন একজন সাধারণ সবজি বিক্রেতা। তার ৯ সন্তানের মধ্যে নাসরুল্লাহ ছিলেন সবার বড়।
১৯৭৫ সালে লেবানন গৃহযুদ্ধের মুখে পড়লে হাসান নাসরুল্লাহ শিয়া মুভমেন্ট ‘আমাল’–এ যোগ দেন। পরে ১৯৮২ সালে আরো কয়েকজনের সঙ্গে দলটি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। ১৯৮৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠার কথা জানায় হিজবুল্লাহ। তাতে যোগ দেন হাসান নাসরুল্লাহ।
হিজবুল্লাহ শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে চিহ্নিত করে ‘ইসলামের প্রধান দুই শত্রু’ হিসেবে। সেই সঙ্গে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলকে ধ্বংস করার ডাক দেয় তারা। ইসরায়েলকে মুসলিমদের ভূমি দখলকারী হিসেবে আখ্যায়িত করে হিজবুল্লাহ।
১৯৯২ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে হিজবুল্লাহর প্রধান হন নাসরুল্লাহ। এর আগে ইসরায়েলের এক হেলিকপ্টার হামলায় নিহত হন তার পূর্বসূরি আব্বাস আল–মুসাবি। হিজবুল্লাহপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর মুসাবি হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া ছিল হাসান নাসরুল্লাহর প্রথম কাজ। সে অনুযায়ী ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট হামলার নির্দেশ দেন তিনি।
নাসরুল্লাহ লেবাননের দক্ষিণে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গেও তার যোদ্ধাদের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। একপর্যায়ে ২০০০ সালে সেখান থেকে পিছু হটে দেশে ফিরে যান ইসরায়েলি সেনারা। তবে নাসরুল্লাহর ব্যক্তিগত ক্ষতিও কম হয়নি। ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রাণ দিতে হয় তার বড় ছেলে হাদিকে।
নাসরুল্লাহর নেতৃত্বে হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধাদের পাশাপাশি ইরাক ও ইয়েমেনের মিলিশিয়াদের প্রশিক্ষণগত সহায়তা দিয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহারের লক্ষ্যে ইরানের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেটের এক সমৃদ্ধ ভাণ্ডার রয়েছে হিজবুল্লাহর।
দখলকৃত লেবাননি ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের তাড়াতে প্রথমে একটি মিলিশিয়া দল হিসেবে গড়ে উঠেছিল হিজবুল্লাহ। পরে এ দলকেই লেবাননের সেনাবাহিনীর চেয়ে শক্তিশালী এক বাহিনীতে রূপ দেন নাসরুল্লাহ। সংগঠনটি এখন দেশের রাজনীতিতেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তারকারী একটি শক্তি।
সর্বশেষ হিজবুল্লাহ–ইসরায়েল উত্তেজনা বেড়ে যায় গত বছরের ৮ অক্টোবর থেকে। ওই দিন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের রকেট হামলার জের ধরে গাজায় নজিরবিহীন তাণ্ডব শুরু করে দেশটি। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে মাঝেমধ্যেই ইসরায়েলের অভ্যন্তর ও দখলকৃত গোলান মালভূমি এলাকায় রকেট হামলা চালাচ্ছে হিজবুল্লাহ।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh