২০১০ সালের (সংশোধিত ২০১৩) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষকরা এমপিওভুক্তির সুযোগ পাননি।
যদিও এসব শিক্ষককে পদ সৃষ্টির আগেই মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে বছরের পর বছর ৬৬০ শিক্ষকের ভাগ্য অনিশ্চয়তায় ঝুলে আছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালে নতুন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল ও এমপিও নীতিমালায় কম্পিউটার শিক্ষক পদ না রেখে করা হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পদ।
ওই নীতিমালায় নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক দুটি স্তরেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়। কম্পিউটার শিক্ষক পদটি সমন্বয় করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষক পদে মাধ্যমিক স্তরে এমপিওভুক্তির সুযোগ দেওয়া হয়।
নীতিমালা অনুযায়ী নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে কম্পিউটার শিক্ষক এমপিওভুক্তির সুযোগ পান না। কারণ নিম্ন মাধ্যমিকে কম্পিউটার শিক্ষকের পদ তৈরির আগেই প্রতিষ্ঠানগুলো কম্পিউটার শিক্ষক নিয়োগ দেয়।
ফলে ২০১০ সালের নীতিমালা বা ২০১৮ সালের নীতিমালা অনুযায়ী পদ সমন্বয় করে নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের কম্পিউটার শিক্ষক পদের শিক্ষকরা এমপিওভুক্তি থেকে বাদ পড়েন।
এমন পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের পক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এমপিওভুক্তির আবেদন জানানো হয়।
২০১৯ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন দেশের বিভিন্ন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কম্পিউটার শিক্ষক পদে এমপিওভুক্তির আবেদন করেন।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে, ২০১৮ সালের নীতিমালার আলোকে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) পদে ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর বিশেষ বিবেচনায় এমপিওভুক্তির জন্য মতামত চাওয়া হয়।
এই প্রস্তাবে ২০১২ সালের আগে নিয়োগ পাওয়া নিবন্ধনধারী ও নিবন্ধনবিহীন সব কম্পিউটার শিক্ষকের এমপিওভুক্তির জন্য মতামত দিতে বলা হয়। মতামত চেয়ে সিনিয়র সচিব বরাবর পত্র দেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ওই সময়ের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।
অধিদপ্তরের পত্রের আলোকে মন্ত্রণালয়ে ফাইল উত্থাপনের পর ২০২০ সালের ফাইল অনুমোদন দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এ বিষয়ে কোনো মতামত অধিদপ্তরকে জানায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে ৬৬০ জন শিক্ষকের ভাগ্য এভাবেই ফাইলে ঝুলে আছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
তবে সুবিধাভোগীরা আবেদন করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh