মাইকেল জ্যাকসন
গান মানুষের আত্মার খোরাক। গান যেমন বিনোদন দেয়, তেমনই জোগায় প্রতিবাদের শক্তি, ভাবিয়ে তোলে জীবন নিয়ে। গান শুনতে ভালোবাসেন না এমন মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে খুবই কম। আর গান দিয়ে জয় করা যায় না এমন জিনিসের সংখ্যাও পৃথিবীতে খুবই কম। প্রেমিকার মন থেকে শুরু করে স্রষ্টার বন্দনায়ও গানের অবদান অপরিসীম।
পৃথিবীতে গানই একমাত্র ভাষা যে ভাষা পৃথিবীর সব ভাষাভাষীর মানুষের খুব চেনা ও জানা। আজ এমনই কিছু গানের কথা বলব যে, গানগুলো সারাপৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষের খুব আপন হয়ে আছে। পেয়েছে সংগীত ইতিহাসের কালজয়ী খেতাব।
বিট ইট
গানের জগতে যেসব গান চিরসবুজ হয়ে আছে এবং মুক্তির পরপরই সারা পৃথিবীকে গ্রাস করে নিয়েছে নিজের দুর্দান্ত আবেদনে সেইসব গানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি গান ‘জাস্ট বিট ইট’। এই গানটি পপ সম্রাট নামে খ্যাত কিংবদন্তি গায়ক মাইকেল জ্যাকসনের গান। তার নিজের লেখা সুর করা ও গাওয়া এই গানটি ছিল মূলত তার ষষ্ঠ একক অ্যালবাম থ্রিলারের একটি গান। জাস্ট বিট ইট গানটি ছিল পপ ঘরানার গায়ক মাইকেলের প্রথম রক গান। যদিও শুরুতে এই গান নিয়ে মাইকেলের তেমন কোনো আগ্রহ ছিল না। তবে থ্রিলার অ্যালবামটির প্রযোজক চাচ্ছিলেন অ্যালবামটিতে ভিন্ন কিছু থাকুক। সেই চাহিদা থেকেই মাইকেল জ্যাকসন গানটি লিখেন। গানটির মুক্তি পরবর্তী ইতিহাসতো সবারই জানা।
বিট ইট’র ধুন্ধুমার সাফল্য প্রমাণ করে দেয় পপ ঘরানার বাইরেও মাইকেল অজেয়। রক এন্ড রোল ধাঁচের এই গানটি মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে শ্রোতারা পাগলের মতো লুফে নেওয়ায় অনায়াসে গানটি বিশ্বজুড়ে টপচার্টের শীর্ষে বসে রাজত্ব করতে থাকে। অসাধারণ কথামালায় সাজানো এই গানের সঙ্গে আরও আকর্ষণীয় যে বিষয়টি ছিল তা হলো গিটার। কিংবদন্তি এডি ভ্যান হেলেনের অসাধারণ গিটারের ঝংকার যা আজও মাইকেল জ্যাকসনের সেরা ১০ গানের একটি হয়ে রাজত্ব করছে।

ইমাজিন
এমন একটা পৃথিবী হবে যেখানে থাকবে না কোনো ধর্ম, বর্ণ, কিংবা স্বর্গ নরক, যেখানে থাকবে না কোনো ক্ষুধা, যুদ্ধ কিংবা দরিদ্রতা। যে পৃথিবীতে মানুষের একটাই পরিচয় হবে। আর সেই পরিচয়টি হলো মানুষ। এমন একটি পৃথিবী কল্পনা করে গানে গানে কিছু কথা শুনিয়েছিলেন বিটলসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আমেরিকান গায়ক জন লেনন। ১৯৭১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এমন সাম্য ও মানবতার বাণীতে ভরপুর এই গানটি শ্রোতাদের মাঝে একটি আলোড়ন তৈরি করেছিল। গানটি এতটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল যে মানুষের মুখে মুখে ফিরতে থাকে।
সাম্যবাদীদের জন্য গানটি যেন জাতীয় সংগীতে পরিণত হয়। আর তারই ফলস্বরূপ মুক্তির পরপরই টপ চার্টের সেরা তিনে চলে আসে গানটি। এটি হয়ে ওঠে জন লেননের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বিক্রীত গান এবং সংগীত অনুরাগীদের হৃদয়ে স্থান পাওয়া গানগুলোর মধ্যে সেরা একটি গান।

লাইক এ রোলিং স্টোন
বিশ্বসংগীতে অন্যতম গানগুলোর একটি তালিকা করলে বব ডিলানের লাইক এ রোলিং স্টোন গানটিকে অবশ্যই শীর্ষ স্থানে রাখতে হবে। পৃথিবীতে জনপ্রিয় খেতাব প্রাপ্ত যে গানগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এই লাইক এ রোলিং স্টোন গানটি। তবে বব ডিলানের লেখা সুর করা ও গাওয়া এই গানটির শুরুর গল্পটি কিন্তু এত সুমধুর ছিল না। বিশেষ করে প্রযোজনা সংস্থা কলম্বিয়া রেকর্ডস তো বলা যায় অসন্তুষ্টই ছিল। ছয় মিনিটের এই গানটি যেমন তাদের বাণিজ্যিকভাবে কতটা লাভবান করবে তা নিয়ে ভাবাচ্ছিল তেমনি গানটিতে ব্যবহৃত প্রচুর ইলেক্ট্রিক সাউন্ডও তাদের এতই দ্বিধায় ফেলে দিয়েছিল যে তারা গানটি প্রকাশ করবে কিনা তা নিয়েই বেশ চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। তবে গান প্রকাশের পর জয় হয়েছিল ডিলানেরই।
বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় বনে যাওয়া এই গানটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান করে যেমন সন্তুষ্ট করেছিল তেমনই ফোক ঘরানার শিল্পী হিসেবে পরিচিত বব ডিলানকে সংগীত অনুরাগীদের সামনে পরিচিত করে তুলেছিল একজন রকার হিসেবে। এই গানটিতে বব ডিলান মূলত একটি গল্প তুলে ধরেছিলেন। এই গল্পটি একাকীত্বের গল্প।
সমাজের একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির একাকীত্ব নিয়ে সাজানো গানটি বব ডিলানের অন্যতম গানগুলোর মধ্যে যেমন অন্যতম। একইসঙ্গে বিশ্ব সংগীতে সেরা গানগুলোর মধ্যে সেরা একটি গান।
