
বাপ্পি লাহিড়ী
ভারতীয় বিখ্যাত সংগীত শিল্পী ও সুরকার বাপ্পি লাহিড়ী আর নেই। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে মুম্বাইয়ের জুহুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
গত বছর এপ্রিল মাসে তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। সেই সময় মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। কিছুদিন পর সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরেন।
গতকাল মধ্যরাতে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়াতে (ওএসএ) আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত প্রায় একমাস তিনি বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গত সোমবারই (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাড়ি ফেরেন বাপ্পি। কিন্তু মঙ্গলবারই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরিবারিক চিকিৎসক তাকে ফের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে সেই হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়।
১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে অন্যতম জনপ্রিয় নাম বাপ্পি লাহিড়ী। বলিউডে ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’ প্রভৃতি ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন বহু গান। ২০২০ সালে তার শেষ গান ‘বাগি- ৩’ এর জন্য।
কিশোর কুমার ছিলেন বাপ্পির তুতো মামা। বাবা অপরেশ লাহিড়ী ও মা বাঁশরী লাহিড়ী— দু’জনেই সঙ্গীত জগতের মানুষ ছিলেন। একমাত্র সন্তান বাপ্পিও ছেলেবেলা থেকেই গানের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। মা, বাবার কাছেই পান প্রথম গানের তালিম। মা-বাবা নাম দিয়েছিলেন অলোকেশ, কিন্তু জনপ্রিয়তা পান বাপ্পি নামে।
১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাপ্পি। তারপর দীর্ঘ দিন বাংলা ও হিন্দি ছবির গান গেয়েছেন। সুর দিয়েছেন। সবসময় প্রচুর সোনার গয়না পরতে ভালবাসতেন। বলতেন, ‘আমার ভগবানের নাম সোনা!’ ছিল গায়কির নিজস্ব কায়দা, যা তাকে হিন্দি ছবির জগতে অনন্য পরিচিতি দিয়েছিল। পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার ও সম্মান।
বাপ্পি লাহিড়ী রাজনীতিতেও নেমেছিলেন। বিজেপিতে যোগ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুর কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে লড়েছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে কখনওই স্বাচ্ছন্দ বোধ করেননি বাপ্পি।