Logo
×

Follow Us

উত্তর আমেরিকা

ইউএসএইডের ভবিষ্যৎ কী?

Icon

মো. ইমরানুর রহমান

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৪৭

ইউএসএইডের ভবিষ্যৎ কী?

ইউএসএইডের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করতে চান ইলন মাস্ক। সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত বেসামরিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএইডের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। তাদের ওয়েবসাইটও এরই মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সেও সংস্থাটির উপস্থিতি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন প্রশ্ন উঠেছে এর ভবিষ্যৎ নিয়ে। আসলেই কী এটি অস্তিত্ব সংকটে? 

মার্কিন গণমাধ্যমের বরাতে রাশিয়া টুডে বলছে, কার্যক্রম স্থগিত হলেও সংস্থাটির টিকে থাকার কিছুটা সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। এল সালভাদর সফরকালে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা ইউএসএইডের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, একজন কর্মীর কাছে আপাতত এর দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে সেই কর্মীর নাম প্রকাশ করেননি তিনি। 

ইউএসএইড নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থার প্রভাব বাংলাদেশ সহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পড়তে শুরু করেছে। বিশেষত- যেসব বেসামরিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল। তাদের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। গত রোববার ইউএসএইড বাংলাদেশ কার্যালয়ের পরিচালক রিচার্ড অ্যারন এক চিঠিতে সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সব স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠনকে বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্প ও কর্মসূচির ব্যয় অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। কবে নাগাদ পুনরায় অর্থায়ন চালু হতে পারে বা আদৌ চালু হবে কিনা- এ বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। এ ছাড়া সামগ্রিকভাবে ইউএসএইডের ভবিষ্যৎ কী- সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ বিষয়টি এককভাবে মার্কো রুবিওর উপরও নির্ভর করছে না।   

এর আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএসএইডের সাবেক নেতৃত্বকে ‘চরমপন্থী উন্মাদ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। তার মিত্র, বিশ্বের শীর্ষধনী ইলন মাস্কের মতে এটি রীতিমত একটি অপরাধী সংগঠন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন, ইউএসএইড কোনো পোকাযুক্ত আপেল নয় -এটি স্রেফ পোকার দলায় পরিণত হয়েছে। এর মাধ্যমে কার্যত বোঝা যাচ্ছে, ইলন মাস্ক সংস্থাটির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করতে চান। মাস্কের মতামতকেও এখন আর বাতিল করার সুযোগ নেই। কারণ তিনি নতুন গঠিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির (ডোজ) নেতৃত্বে রয়েছে। ডোজের লক্ষ্য হচ্ছে, মার্কিন সরকারের অযৌক্তিক ব্যয় কমিয়ে আনা। 

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পররাষ্টমন্ত্রী মার্কো রুবিও 

তবে মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন, আপাতত এটিকে বন্ধ করার বিষয়ে ভাবছে না সরকার। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এর কিছু কর্মসূচি ভালো হলেও অন্য অনেক কিছু নিয়েই গুরুত্বর প্রশ্ন রয়েছে। সংস্থাটির সবকিছুই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ ও পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।’ 

রুবিও আরও জানান, ইউএসএইডের সব কর্মসূচি যাচাই করে দেখা হবে। যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ, সমৃদ্ধশালী ও শক্তিশালী করবে -সেগুলোই টিকে থাকবে। তবে স্বল্পমেয়াদে ঠিক কী কী পরিবর্তন রুবিও আনতে চান- সেসব বিষয়ে বিস্তারিত তিনি কিছু বলেননি। 

তবে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বৈদেশিক সাহায্যের বিষয়টি যৌক্তিক নয় বলে মনে করেন ইলন মাস্ক। একাধিকবার তিনি এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। তার দাবি, ইউএসএইড এমন অনেক দেশকেই সাহায্য করে- এর মধ্যে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রও নয়। ইলন মাস্ক এর আগে এও দাবি করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউএসএইডের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। ট্রাম্প নিজেও দাবি করেছিলেন, সংস্থাটি জৈব অস্ত্র গবেষণায় অর্থায়ন করেছিল। যার ফলে কোভিড-১৯ সৃষ্টি হয়। 

গত সপ্তাহে ট্রাম্প ইউএসএইডের সব কর্মসূচি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন এবং প্রতিটি কার্যক্রম আলাদাভাবে পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেন। বর্তমানে ওয়াশিংটনে অবস্থিত সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় বন্ধ রয়েছে। কর্মীদেরও অফিসে না আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্কো রুবিওর মতে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ফলে মার্কিন সাহায্য গ্রহণকারীরা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে সহায়তা করার বিষয়ে আন্তরিক হয়েছে। 


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫