পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর জেরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে জনসাধারণের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা মোতায়েনের হুমকি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

গত সোমবার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের  মিনিয়াপোলিস শহরে ফ্লয়েডকে জাল নোট রাখার অভিযোগে হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ। ময়নাতদন্ত রিপোর্টও তাই বলছে। এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে সপ্তম দিনের বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে নিউইয়র্ক, শিকাগো, ফিলাডেলপিয়া ও লস এঞ্জেলসসহ যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক ডজন শহর। 

এ অবস্থায় ট্রাম্প বলেন, শহর ও অঙ্গরাজ্যগুলোতে যদি বিক্ষোভকারীরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তবে জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী পাঠানো হবে ও সমস্যার সমাধান করা হবে।

ছবি: বিবিসি

বিক্ষোভকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি আরো বলেন, দাঙ্গা, লুটপাট, ভাঙচুর, হামলা ও সম্পত্তির অযথা ধ্বংস বন্ধে হাজার হাজার ও ভারী সশস্ত্র সৈন্য, সামরিক কর্মী ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা মোতায়েন করবো।

এ সময় আগের রাতে ঘটে যাওয়া ওয়াশিংটনে বিশৃঙ্খল অবস্থার কথাও তুলে ধরে ট্রাম্প এটাকে ‘সম্পূর্ণ অসম্মান’ বলে অভিহিত করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গভর্নরদের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, বাসিন্দাদের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় যদি শহরগুলোর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আমি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী মোতায়েন করব এবং দ্রুত এসবের সমাধান করব।

এদিকে সহিংসতার মুখে দেশটির বড় বড় শহরগুলোতে রাতে কারফিউ অব্যাহত রয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২ জুন) বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটি লকডাউন করা হয়েছে। আর ওয়াশিংটন ডিসিতে কারফিউ আরো দুই রাত বাড়ানো হয়েছে।

অপরদিকে বিক্ষোভ পাশাপাশি নানা জায়গায় লুটও চলছে। নিউইয়র্কে ম্যানহাটনের ফিফথ এভিনিউতে দেখা গেছে লুট করছে অনেকে। ব্র্যান্ড শপ নাইকির কাঁচ ভেঙে জামা কাপড় বের করতে দেখা গেছে।

সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমসসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫টির বেশি শহর এখন বিক্ষোভে উত্তাল। অথচ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কায় কয়েক দিন আগেও এসব শহরের অনেক সড়ক ছিল জনমানবশূন্য। প্রায় ৪০টি শহরে তো কারফিউ দেয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় গত কয়েক দিনে বিক্ষোভের সময় গ্রেফতার হয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রিজার্ভ মিলিটারি ফোর্স ন্যাশনাল গার্ডকে। -বিবিসি