ভুল শাস্তি, ৪৩ বছর পরে মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২১, ১২:৩৬
কেভিন স্ট্রিকল্যান্ড
হত্যার দায়ে চার দশকের বেশি সময় ধরে বিনা দোষে জেল খাটার পর মুক্তি পান ৬২ বছর বয়সি এই কৃষ্ণাঙ্গ কেভিন স্ট্রিকল্যান্ড। তবে তাকে কোনও ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে না। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) কেভিনের মুক্তির আদেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্য আদালত।
১৯৭৯ সালে তিনজনকে হত্যার দায়ে কেভিনকে শাস্তি দেয়া হয়। জুরিরা সবাই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। ৪৩ বছর পর সরকারি আইনজীবীরা চলতি বছরের গোড়ায় জানিয়েছিলেন, কেভিন নিরপরাধ। জুরিদের রায় ভুল ছিল। এরপর বিচারক জেমস ওয়েলশ তাকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেন।
সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর কেভিন বলেছেন, আমি রাগান্বিত নই। আমি জানি, যথেষ্ট হয়েছে। কিন্তু আপনাদের মধ্যে আমি আবেগ তৈরি করতে পেরেছি। এই ধরনের আবেগ সম্ভবত আপনাদের মধ্যে আগে আসেনি। আমার আনন্দ, দুঃখ, ভয় সবই হচ্ছে।
কেভিনের বিরুদ্ধে একমাত্র প্রমাণ ছিল প্রত্যক্ষদর্শী সিন্থিয়া স্ট্রিকল্যান্ডের সাক্ষ্য। সিন্থিয়াই ছিলেন একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। আদালতে তিনি জানান, কেভিনকে তিনি দেখেছেন।
পরে সিন্থিয়া বলেছিলেন, পুলিশ জোর করে তাকে দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। তাই তিনি কেভিনের নাম বলেছিলেন। পরে তিনি বারবার এই বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ২০১৫ সালে তার মৃত্যু হয়।
কেভিনের যখন শাস্তি হয় তখন তার বয়স ছিল ১৮ বছর। তিনি বার বার বলেছেন, তিনি নির্দোষ।
এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে আরও দুইজনের শাস্তি হয়। তারাও জানিয়েছিলেন, হত্যার সঙ্গে কেভিন কোনওভাবে জড়িত ছিলেন না। তারা অন্য দুইজনের নাম বলেছিলেন। কিন্তু তাদের শাস্তি দেয়া হয়নি।
প্রথম বিচারের সময় একজন কৃষ্ণাঙ্গ জুরি ছিলেন। তিনি কেভিনকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। দ্বিতীয়বার বিচারের সময় তিনজন জুরিই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। তারা রায় দেন, কেভিন দোষী।
রিপাবলিকান পার্টির দুই নেতা অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্কিমিট ও মিসৌরির গভর্নর মাইক পারসন তখন কেভিনের মুক্তির বিরোধিতা করেছেন। তারা এই মুক্তি আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন।
মিডওয়েস্ট ইনোসেন্ট প্রজেক্টের ডিরেক্টর ট্রিসিয়া রোজো বুশনেল বলেছেন, কেভিনকে মুক্তি দিতে দেরি করা হয়েছে। তিনি যে বিনা দোষে ৪৩ বছর জেলে কাটালেন, তার জন্য কোনো ক্ষতিপূরণও দেয়া হচ্ছে না।
মিসৌরির নিয়ম হলো, একমাত্র ডিএনএ পরীক্ষা করে যদি প্রমাণ হয় কাউকে ভুল করে জেলে পাঠানো হয়েছে, তবেই তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন।
বুশনেল বলেছেন, এটা ন্যায়বিচার নয়। আমার মনে হয়, যারা এই বিষয়টি নিয়ে এত উৎসাহ দেখিয়েছেন, তারা নিশ্চয়ই প্রশ্ন তুলবেন, আমাদের বিচারব্যবস্থা কি এরকমই হওয়া উচিত? -ডয়চে ভেলে ও বিবিসি