Logo
×

Follow Us

মুক্তবচন

আবার বিস্ফোরণ: সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৮

আবার বিস্ফোরণ: সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে

সম্পাদকীয়। ফাইল ছবি

দেশের বিভিন্ন শহরে হঠাৎ করে ভয়াবহ বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা বেড়ে চলেছে। সর্বশেষ ৭ মার্চ গুলিস্তানের বিআরটিসি কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ১৮ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা পরে আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। 

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এগুলো দুর্ঘটনা কিনা তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমাদের র‍্যাব গোয়েন্দা দল কাজ করছে। তদন্ত শেষে আসল ঘটনা বলা যাবে।’ আমরাও চাই সুষ্ঠু তদন্ত শেষে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসুক এবং এসব ঘটনার পুরাবৃত্তি বন্ধ হোক।

এর আগে গত বছরের ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের কেশবপুরে বিএম ডিপোতে আগুন থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত হন ৫০ জন। মাত্র ৯ মাসের ব্যবধানে একই উপজেলার কদমরসুল এলাকার সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেডের প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

ঘটনাটি এতই ভয়ংকর ছিল যে আধা কিলোমিটার দূরে উৎক্ষিপ্ত লোহার পাতের আঘাতে মানুষ মারা গেছে। এ ঘটনায় ৬ জন নিহত ও ২৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এই বিস্ফোরণের রেশ কাটতে না কাটতেই রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় একটি তিনতলা ভবনে বিস্ফোরণে তিনজন নিহত ও আহত হন অর্ধশতাধিক।  

বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের পর সীতাকুণ্ডের ভারী শিল্প এলাকায় অগ্নিনিরাপত্তাসহ কর্মসহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতে তদারক শুরু করেছিল ফায়ার সার্ভিস। এরপরও সেখানকার বিভিন্ন কারখানায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগে থাকা ও মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

প্রতিবছর দেশে অন্তত ৯ লাখ গ্যাস ও বিদ্যুৎসংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনা ঘটছে। এরপরও সুরক্ষা নিশ্চিতে যত্নবান হচ্ছেন না কেউ। নিমতলীর রাসায়নিক বোঝাই গুদামঘর, তাজরীন গার্মেন্টস, সেজান জুস কারখানা, বিএম ডিপো, সীমা অক্সিজেন কারখানা, সায়েন্সল্যাব এলাকার তিনতলা ভবন থেকে সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণ- প্রকৃত ঘটনা যা-ই হোক, একটি বিষয় স্পষ্ট যে, দায়িত্ব অবহেলার কারণেই বারবার এমন দুর্ঘটনা ঘটছে।

প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। কারখানাগুলোর লাইসেন্স থেকে শুরু করে উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা কোথাও নজরদারি ও জবাবদিহিতা নেই। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আরও সতর্কতার সঙ্গে, জন-গণসম্পৃক্ত এই বিষয়গুলো নিয়মিত তদারকি করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হবে- এটাই প্রত্যাশা।

আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, প্রতিটি বিস্ফোরণের ঘটনার পর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, সিআইডিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং একটি করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অনেক সময় তদন্ত প্রতিবেদন আসতেই লম্বা সময় পেরিয়ে যায়। আবার যাদের গাফিলতির তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় তাদের কারও বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। 

আমরা আশা করব এসব বিস্ফোরণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। ঘটনায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে মানবিক মর্যাদা নিয়ে দাঁড়াবে রাষ্ট্র। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫