Logo
×

Follow Us

মুক্তবচন

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ: কলকাতার মতো আমরা পারছি না কেন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৩, ১২:৪৯

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ: কলকাতার মতো আমরা পারছি না কেন

ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল

কমবেশি ৩২৫ কিলোমিটার দূরত্বের দুটি শহর- ঢাকা ও কলকাতা। এই দুটি শহরেই অধিক মাত্রার জনসংখ্যা বাস করে। নগরায়ণ ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের দিকে থেকে শহর দুটির ব্যাপক সাদৃশ্য রয়েছে। আবার এই দুটি শহরের ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের ইতিহাসও খুবই কাছাকাছি। কলকাতায় ডেঙ্গু মহামারি আকারে দেখা যায় ১৯৬৩ সালে এবং সে সময় প্রায় ২০০ মানুষ প্রাণ হারায়। কিন্তু সেখানকার রাজ্য সরকার ও মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের কার্যকরী ভূমিকার জন্য এই মহামারির প্রকোপ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। চলতি বছর সেখানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২৬০ জন আর মৃত্যু হয়েছে একজনের।

অথচ ঢাকাতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ১৯৬৫ সালে শুরু হওয়ার পর এই সময় এসে তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। আর সাম্প্রতিক কয়েক বছরে বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু এক মহা-আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এর প্রাণসংহারী ভূমিকা এখন আর রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ নেই; ছড়িয়ে পড়েছে দেশের প্রায় সর্বত্র। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের ২৫ জুলাই পর্যন্ত ২০১ জন ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছেন। আর ৩৭ হাজার ৬৮৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা সামনের দুই মাসে আরও বাড়বে।

এখন প্রশ্ন হলো, কলকাতাসহ বিশ্বের অনেক শহরই ডেঙ্গুর মতো মশাবাহিত প্রাণঘাতী সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে আমরা পারছি না কেন? এর মূল কারণ হিসেবে দেখা যাবে যে, কলকাতাসহ অন্যান্য শহরে মিউনিসিপ্যালগুলো ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধের জন্য বহু আগে থেকে কার্যকর ভূমিকা খোঁজার চেষ্টা করেছে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এখনো ডেঙ্গু প্রতিরোধে ফগার মেশিন এবং জরিমানার মতো মান্ধাতার বিষয়গুলোর বাইরে নতুন কিছু ভাবতে পারেনি। অর্থাৎ তাদের দিনের পর দিনের গড়িমসি ও গাফিলতিতে ডেঙ্গু এখন দেশব্যাপী মহামারিতে পরিণত হচ্ছে। 

গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সিটি করপোরেশন যে ওষুধ ছিটাচ্ছে, তাতে মশা মরে না। যে ওষুধে মশা মরবে, সেটাই ছিটাতে হবে। সেক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন কলকাতা ও অন্যান্য শহরের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের সফলতার পদ্ধতির অনুসরণ করতে পারে। আবার সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি নাগরিকদেরও যথাযথ দায়িত্ব রয়েছে। নাগরিকদের মনে রাখতে হবে, একজনের অবহেলা অনেকের ক্ষতি, এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

আবার ঢাকা শহরের সব এলাকায় সমানভাবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটছে না। ইতোমধ্যে বিশেষজ্ঞরা ঢাকা শহরের ১১টি এলাকাকে রেডজোন ঘোষণা করেছেন। এখন সিটি করপোরেশনের উচিত হবে উপদ্রুত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। ঢাকার বাইরে যেসব এলাকায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি, সেখানেও জোরদার কর্মসূচি নিতে হবে। ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের যথাসময়ে যথাযথ চিকিৎসাসেবা নেওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গাফিলতির কোনো অবকাশ নেই। কলকাতা যদি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফল হতে পারে, তাহলে আমরা পারব না কেন?

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫