Logo
×

Follow Us

মুক্তবচন

ডিমের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, কারণ চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:১৫

ডিমের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, কারণ চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে

ফাইল ছবি

নিত্যব্যবহার্য প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামবৃদ্ধি এখন নিয়মিত ঘটনা; বিষয়টি নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। তবে আজকের আলোচ্য বিষয় ‘ডিম’। এটি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এর পুষ্টিগুণ ও নানাবিধ ব্যবহারের কারণে। কিন্তু দুর্মূল্যের কারণে ক্রমশ এর ব্যবহার কমছে সাধারণ মানুষের কাছে। দফায় দফায় বাড়তে থাকা ডিমের দাম সম্প্রতি ‘অস্বাভাবিকভাবে’ বেড়ে যাওয়ার পর ডজনপ্রতি ১৫০/১৬০ টাকায় ওঠানামা করছে। মানুষ এখন এটাকেই মূল্য কমেছে বলে সান্ত¡না পেতে চাইছে। অথচ গত এক বছরে ২০-২৫-৩০ টাকা করে ডজনপ্রতি ডিমের দাম বেড়েছে। করোনার সময়েও যে ডিমের ডজন বিক্রি হতো ১০০-১১০ টাকা দরে, সেটা বাড়তে বাড়তে কী করে ১৭০/১৮০ টাকার রেকর্ড ছুঁয়েছে, তার কারণ খুঁজে বের করা দরকার। 

ডিম প্রোটিনের একটি সহজলভ্য উৎস, যেখানে শরীরের প্রয়োজনীয় সমস্ত ভিটামিন, যেমন—ভিটামিন বি ও বি টু, ভিটামিন ডি, সেলেনিয়াম, অ্যামিনো অ্যাসিড ও অতি প্রয়োজনীয় খনিজ থাকে। তাই জাতীয় পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়নের সঙ্গে ডিমের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যে কারণে এর দামকে সর্বসাধারণের সাধ্যের মধ্যে রাখাটা জরুরি। কিন্তু গত এক বছরে যেভাবে ডিমের বাজার অস্থির হয়েছে, তাতে জাতীয় পুষ্টি পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা তো রয়েই যায়। কারণ প্রাণিজ প্রোটিনের আরও যেসব উৎস রয়েছে, যেমন—মাছ, মুরগি, গরুর মাংস, দুধ ইত্যাদির দামও সহনীয় নয়। বরং এসবের দামও ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে, কোনো কিছুই আর সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নেই। সুতরাং ডিমের মতো প্রোটিনের সহজলভ্য উৎসটির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ খুঁজে বের করে এর লাগাম টেনে ধরতে হবে।

কোনো কারণে ‘সাপ্লাই চেইন’ ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। ডিমের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটা ঘটছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। পোল্ট্রি খাতের কমবেশি অর্ধেক খামার নাকি বন্ধ হয়ে গেছে। জানা দরকার, এসব কী কারণে ঘটেছে। এছাড়া এ খাতে ব্যবসার ব্যয় কমিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন—ফিড তৈরির উপকরণ আমদানি সহজীকরণ; বিদ্যুৎ বিলে ছাড় দেওয়া ইত্যাদি। প্রতিবছর নতুন ডিমের খামার তৈরি করাকেও উৎসাহিত করতে হবে। বিনিয়োগবান্ধব ইতিবাচক পরিবেশ পুনরুদ্ধারের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। 

তবে ডিমের দাম ‘অস্বাভাবিকভাবে’ বেড়ে যাওয়ার পেছনে বাজারে অব্যবস্থাপনা যে রয়েছে, তাতে কারও সন্দেহ নেই। একটি ডিমের উৎপাদন খরচ কত আর ব্যবসা করবে কত টাকা, এসব বিষয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট তদারকি নেই। যে কারণে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো হুট করে দাম বাড়াচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে কারণ চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো চক্র যাতে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে না পারে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। না হলে ডিমের দাম যে হারে বাড়ছে তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫