
ফরিদা আখতার। ফাইল ছবি
বিশ্ব জনমত উপেক্ষা করে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচার গোলা বর্ষণ করে চলেছে; হতাহত হচ্ছে নিষ্পাপ শিশু, নারী এবং পুরুষ। শিশুদের কফিনে মোড়ানো ছোট লাশ বুকে নিয়ে যাচ্ছে বাবা দাফন করতে। যেসব শিশু বেঁচে আছে তাদের গায়ে কাদা ও রক্ত মাখা, ক্ষুধা-তৃষ্ণায় ক্লান্ত। মা-বাবা হারা এই শিশুদের কান্না সহ্য করার মতো নয়। তাই বিক্ষোভ হচ্ছে দেশে দেশে। এর মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ অনেক বেশি। পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো ইসরায়েলের পাশে থাকলেও সে দেশের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। খোদ ইসরায়েলের ইহুদি নারীরা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সে হিসেবে বাংলাদেশে আমরা কি পিছিয়ে রয়ে গেলাম?
সর্বশেষ খবর (১৯ ডিসেম্বর) গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ১৯,৪০০ ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের বোমা হামলায় শহীদ হয়েছেন, এর মধ্যে ৭০% হচ্ছে নারী ও শিশু। অন্যদিকে ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে নিহত হয়েছে ১২০০ ইসরায়েলি সৈন্য এবং সাধারণ নাগরিক। কোনো মৃত্যুই গ্রহণযোগ্য নয়। জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা ফিলিস্তিনকে শিশুদের জন্য ভয়ংকর বিপজ্জনক স্থান বলে চিহ্নিত করেছেন, কারণ সেখানে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার শিশু নিহত হচ্ছে এবং আরো হাজার হাজার শিশু পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের শিশুদের জন্য খাবার নেই, পানি নেই, ওষুধ নেই, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে স্বাস্থ্যসেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে। প্রতিদিন বোমা বর্ষণে শিশুদের হাত পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে ; চোখের সামনে মা-বাবা ভাই-বোনকে মরতে দেখছে, কিন্তু সে প্রাণখুলে শোকও করতে পারছে না। তাদের যাবার কোনো জায়গা নেই। হাসপাতালগুলোও নিরাপদ নয়। আমরা ফিলিস্তিনের শিশুদের ছবি দেখি সারি সারি সাদা কাপড়ে মোড়ানো ছোট ছোট লাশ। এই দৃশ্য দেখার মতো নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা বর্ণনা দিয়েছেন যে তারা সারি সারি লাশের ওপর দিয়ে যেতে কদম ফেলতে পারেননি, কিংবা তাদের পায়ে রক্তের দাগ লেগে গেছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা বলছে তারা দেখছে খাদ্য এতই কম যে “মায়েরা সব চেয়ে কম খাচ্ছেন, সন্তানকে খাওয়াবার জন্য”। তারা শেল্টারগুলোতে এমন পরিবেশে আছে যে তাদের মরণঘাতী রোগও হতে পারে, যা প্রতিরোধ করা যেত। তাদের বাড়িঘর সব ভেঙে গেছে। শিশুরা ভয়ে ও আতংকে নির্বাক হয়ে গেছে। তারা খাওয়া দাওয়াও কমিয়ে দিয়েছে।
অনেক গর্ভবতী মহিলা সন্তান জন্ম দিচ্ছেন কোনো প্রকার মেডিক্যাল সহায়তা ছাড়া। আবার যাদের সিজারিয়ান অপারেশন করতে হচ্ছে তাদের এনেস্থেশিয়া দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেক নবজাতক শিশু জন্মের পরই মৃত্যুবরণ করছে।
ইউএন উইমেনের একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ হয়েছে (৩ ডিসেম্বর)। এই সময় পর্যন্ত ১২,৮৮২ নারী ও শিশু নিহত হয়েছে, ৯৫১৪৯০ জন নারী ও কন্যাশিশু ঘরবাড়ি হারা হয়েছে, ২৭৮৪ নারী বিধবা হয়েছে এবং সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে; ১০০২২ শিশু পিতৃহারা হয়েছে, ৫০,০০০ নারী বর্তমানে গর্ভবতী, তাদের মধ্যে ৫৫২২ জনের আগামী জানুয়ারি মাসেই সন্তান প্রসব করার সময়। তাদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা সেখানে নেই।
এখন মায়েরা তাদের শিশুদের হাতে বা পায়ে সিগনেচার কলম দিয়ে নাম লিখে রাখেন যেন ধ্বংসস্তূপ থেকে খণ্ডিত শরীর বের করলেও চিনতে অসুবিধা না হয়। ধ্বংসস্তূপ থেকে বের হয় শিশুদের খেলনা, পুতুল।
খুব উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে হামাসের আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ইসরায়েল সাধারণ নাগরিকদের বোমা মেরে হত্যা করছে, হাসপাতালে বোমা মারছে- এতে বেশিরভাগ নারী ও শিশু মারা যাচ্ছে; এসব জেনেও মারছে। কারণ তাদের অভিযোগ হামাস এই নারী ও শিশুদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। কাজেই তারা হামাসকে মারতে গেলে নারী ও শিশু মারা গেলে তাদের কিছু করার নেই।
বিশ্বব্যাপী স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করা হচ্ছে আর ইসরায়েলের গণহত্যা ও বর্বর আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে। এক একটি র্যালিতে হাজার নয়, লাখ লাখ মানুষ, নারী-পুরুষ সকলে জড়ো হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন From the river to the sea, Palestine will be free। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে রাস্তায় নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে নারীবাদীরা নীরব হয়ে বসে নেই। তারা স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। কেউ নিজেকে ফেমিনিস্ট বা নারীবাদী দাবি করলে তার অবশ্যই যে কোনো নির্যাতন, অবিচার, গণহত্যা, বর্ণবাদ, জাতিবিদ্বেষসহ সকল শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা। তারা উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, সামরিক আগ্রাসন, গণহত্যা ইত্যাদির বিরুদ্ধে থাকবেন এটাই স্বাভাবিক।
গাজায় ইসরায়েলের দখলদারিত্ব শুরু হয়েছে ১৯৬৭ সাল থেকে; নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চলছে সব সময়ই। অথচ এখন ২০২৩ সালে তারা সুযোগ নিচ্ছে হামাসের ৭ অক্টোবর আক্রমণের। মানবতার পক্ষে থাকা মানুষ এই নির্মম হত্যাযজ্ঞের বিরোধিতা করছে। কিন্তু নারীবাদীদের জন্য এটা আরও একটা বাড়তি দায়িত্ব; কারণ এই যুদ্ধে নারী ও শিশুদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে এবং যারা বেঁচে আছেন তাদের জীবন দুর্বিষহ করা হচ্ছে। শারীরিক, মানসিকভাবে কষ্ট পাচ্ছে এবং চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।
আমরা বাংলাদেশে বসে কিছুটা হলেও বুঝতে পারি এই যুদ্ধের অভিজ্ঞতা কেমন হয়। ১৯৭১ সালে আমাদের যুদ্ধ মাত্র ৯ মাস চলেছে, ফিলিস্তিনিরা যুদ্ধ করছে ৭৫ বছর ধরে। তাদের দেশ সংকুচিত হতে হতে ক্ষুদ্র একটি ভূখণ্ড হিসেবে টিকে রয়েছে এবং ক্রমাগতভাবে গাজার নাগরিকদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতিকেও লঙ্ঘন করছে। ইসরায়েল একটি দখলদার জায়নবাদী রাষ্ট্র। এসব নানান দিক বিবেচনায় নারীবাদীদের ইসরায়েলের দখলদারিত্বের বিরোধিতা এবং স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।
ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) একজন সাবেক সদস্য হানান আশ্রাওয়ী একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, “পৃথিবীর বিবেকবান মানুষ, সংবেদনশীল মানুষ এবং সাহসী মানুষের কাছে ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে আমি অবহিত করছি, আমরা ভয়াবহ অবরুদ্ধতা প্রত্যক্ষ করছি, আমরা ধ্বংসলীলা দেখছি, বোমা বর্ষণ এবং গাজার অবরুদ্ধ জনগণের ওপর ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে; যা কয়েক যুগ ধরে অব্যাহত আছে।”
ইসরায়েল এই হামলাগুলো করছে তাদের আত্মরক্ষার অধিকারের দোহাই দিয়ে এবং সে কারণে সে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশের সমর্থন নিচ্ছে। অক্টোবরের ৭ তারিখে হামাসের আক্রমণ দীর্ঘদিনের অবরোধ, নির্যাতন, বঞ্চনার বিরুদ্ধে একটি প্রতিক্রিয়া ছিল। এই আক্রমণে যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি সহানুভূতি সকলেরই আছে, কিন্তু তা ইসরায়েলের পাল্টা আক্রমণে আরও দশগুণ মানুষ হত্যার পক্ষে সাফাই হতে পারে না। নারীবাদীরা এই সাফাই গ্রহণ করে না। ইসরায়েলের এই বোমাবাজি পুরুষতান্ত্রিক দমন পীড়নের নগ্ন প্রকাশ, যা নারীবাদীরা সব সময়ই ধিক্কার জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনের সংগ্রাম কোনোভাবেই ইহুদি জাতিবাদের বিরুদ্ধে নয়, বরং গণহত্যা, একটি জনগোষ্ঠীকে ঘোষণা দিয়ে নির্বংশ করার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে। প্যালেস্টাইন শুধু মুসলমানদের দেশ নয়, এখানে ইহুদি ও খ্রিষ্টান সকলেই বাস করেন। সবার অধিকার এখানে স্বীকৃত। অন্যদিকে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করে না, কাজেই তাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই। খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা বা মৌলিক চাহিদা মেটাবার কোনো অধিকার নেই।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারীবাদী লেখক, দার্শনিক, গবেষক, শিক্ষাবিদরা এগিয়ে এসেছেন ফিলিস্তিনের পক্ষে। কানাডায় বসবাসরত নারীবাদী সুনেরা থুবানি বলেন অক্টোবরের ৭ তারিখে ইসরায়েলের ওপর হামাসের আক্রমণ সেটলার কলোনিয়াল রাষ্ট্রের নৈতিকতা, ন্যায্যতা ও বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেছে যা ফিলিস্তিনিদের নিপীড়িত, অধিকারহীন এবং অপসারিত জনগোষ্ঠীতে পরিণত করেছে। কিন্তু কানাডায় এমন অবস্থা যে যারা ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলে তাদের ওপর আক্রমণ করা হয় এবং কোনোপ্রকার বিবৃতি দেওয়া যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের নারীবাদী দার্শনিক ও জেন্ডার স্টাডিস বিশেষজ্ঞ জুডিথ বাটলার, ফিলিস্তিনের পক্ষে খুবই শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। তিনি নিজে একজন ইহুদি সম্প্রাদায়ভুক্ত, সে কারণে তিনি যখনই ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলেন তখন তাকে প্রশ্ন করা হয়, “কিন্তু হামাস ৭ অক্টোবর যে আক্রমণ করেছে তার নিন্দা জানান কিনা?” তিনি বলেন অবশ্যই তিনি সেই হামলার নিন্দা জানান, এটা একটা ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড। কিন্তু ইসরায়েলের অব্যাহত বোমাবাজি, সব বয়সের মানুষের রাস্তাঘাটে বাড়িতে যে হত্যা, কারাগারে নিপীড়ন, মানুষকে অভুক্ত এবং গৃহহীন করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধেও সমানভাবে নিন্দা জানাতে হবে। এবং এই নির্যাতনের নানান রূপ এমন নিরীহ মানুষের ওপর করা হচ্ছে যারা বর্ণবৈষম্যবাদের (এপারথিয়েড), উপনিবেশী শাসন এবং রাষ্ট্রহীনতার শিকার।
এঞ্জেলা ডেভিস, যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত নারীবাদী দার্শনিক, লেখক এবং রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট, ফিলিস্তিনের পক্ষে সোচ্চার হয়েছেন। এঞ্জেলা ডেভিস দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে কালো মানুষদের সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। তিনি বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রচুর গ্রন্থ লিখেছেন। তিনি স্পষ্টতই ইসরায়েলের জায়নিস্ট আচরণের বিরোধী। তিনি ১৪০ জন নারীবাদী স্কলারের যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় ইসরায়েলের দখলের অবসান ঘটানোর দাবি জানিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।
এঞ্জেলা ২৩ অক্টোবর Black Feminist Writers and Palestine শীর্ষক একটি ওয়েবিনারে বক্তব্য রেখেছিলেন। সেখানে তিনি ২০১১ সালে ফিলিস্তিনে একটি সফরের কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন ফিলিস্তিনের অবস্থা সম্পর্কে তার যা ধারণা ছিল, সেখানকার অবস্থা এর চেয়ে অনেক খারাপ। তিনি বলেন রেডিক্যাল ব্ল্যাক ফেমিনিস্টদের কাজের ধরন হচ্ছে জটিল ও বৈচিত্র্যপূর্ণ সম্পর্ক অন্তর্ভুক্ত করা। সরলভাবে ব্যাখ্যা করে বলা হয় আমাদের সামনে মাত্র দুটি পথ খোলা আছে, এবং সেখান থেকেই যে কোনো একটা পথ বেছে নিতে হবে। ইসরায়েলের সমালোচনা করার মানে এই নয় যে আমরা ইহুদি বিরোধী অবস্থান নিয়েছি। হামাসের আক্রমণের সমালোচনা করেও ইসরায়েল যে ব্যাপক সামরিক হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর সামগ্রিক শাস্তি চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমাদের সংঘবদ্ধভাবে ‘না’ বলতে হবে।
এঞ্জেলা মনে করিয়ে দিলেন, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিনিএপোলিসে আফ্রিকান-আমেরিকান নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডকে পুলিশের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের শিল্পীরা তাদের পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে কালোদের মুক্তির আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছিলেন।
ইসরায়েলের ভেতরেও নারীবাদীরা ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ইসরায়েলের নারীবাদী হানাহ সাফরান প্রশ্ন তোলেন, “আপনি নিজের স্বাধীনতার জন্যে দাবি কেমন করে করতে পারেন যদি অন্যের স্বাধীনতার পক্ষে না থাকেন?” ইসরায়েলের নারীবাদীদের পক্ষে এমন অবস্থান নেওয়া একটু কঠিন ছিল। ইসরায়েল নারীদের নেটওয়ার্ক ১৯৮৪ সালে গঠিত হয়েছিল। তারা সমাজের সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহনের দাবি করে আসছিল। এবং সেখানে তাদের দাবি ছিল সেনাবাহিনীতে নারীদের যুক্ত করা। তারা পাইলট হওয়ার দাবি তুলত। মনে করা হতো যে সেনাবাহিনীতে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে রাজনীতির উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানো। কিন্তু যারা সেনাবাহিনীতে গিয়েছিলেন তাদের অভিজ্ঞতায় তারা বুঝেছেন যে নিপীড়নমূলক প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে সেটলার দখলদারিত্বে ফিলিস্তিনের মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়। নারীরা এমন নিপীড়নের অংশীদার হতে চায়নি।
ডা. রুখামা মার্টন নিজেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন এবং সেনাবাহিনী দ্বারা সংঘটিত নির্যাতন প্রত্যক্ষ করেছেন। যে কারণে চাকরি ছেড়ে দিয়ে মানবাধিকার রক্ষার জন্য সোচ্চার হয়েছেন। তিনি ইসরাইলেই থাকেন এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।
যদিও নারীবাদীদের মধ্যে এখনো অনেকে নীরব রয়েছেন, কেউ কেউ ফিলিস্তিনের পক্ষে বিবৃতি দিতে অস্বীকারও করেছেন। কিন্তু সত্যিকারের অর্থে নারীবাদী হতে হলে তাদের নীতিগতভাবেই যুদ্ধ, আগ্রাসন, বর্ণবৈষম্যবাদ, গণহত্যা, জাতি নির্বংশ করাসহ সকল ধরনের নির্যাতন, অবিচারের বিরুদ্ধে থাকাই বাঞ্ছনীয়।
লেখক: নারীনেত্রী ও কলাম লেখক