কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনটি কীভাবে প্রাণঘাতী সংঘাতে রূপ নিল, তা আমরা দেখেছি। অনেক ক্ষতি, ধ্বংস, জনস্বার্থ ব্যাহত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় এবং বেসরকারি সম্পদ নষ্ট হয়েছে। 

বহু প্রাণ গেছে। অথচ সুস্থ রাজনৈতিক চর্চায় গড়ে ওঠা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে একটি গ্রহণযোগ্য পরিণতিতে নিয়ে যাওয়া যেত। কিন্তু ছাত্রদের ক্ষেত্রে সরকার যথাযথভাবে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে সরকারি দলের ‘জবাব দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগ প্রস্তুত’ ঘোষণার পরই সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চড়াও হওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে। বিক্ষোভে পুরো বাংলাদেশ কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে।

তবে সব দায় কেবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর চাপিয়ে দিলে হবে না। যারা রাষ্ট্রীয় কিংবা বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস করেছে, তারা অপরাধী সন্দেহ নেই। কিন্তু তদন্তের আগেই ঢালাওভাবে কারও ওপর দায় চাপানো যাবে না। আমরা চাই উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। 

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা সরকারের কাছে যে আট দফা দাবি পেশ করেছিলেন, এখনো তার সুরাহা হয়নি। আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সরকারের কাছে শিক্ষার্থীদের এই দাবি সত্ত্বেও একের পর এক আন্দোলনকারী নিখোঁজ ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ আসছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খোলার সময়সূচি ঘোষণা করতে হবে।