
গ্রাফিক্স: সাম্প্রতিক দেশকাল
কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০২৪-এর পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রদের যৌক্তিক দাবির অনুকূলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন, সরকার সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কারফিউ শিথিল হয়েছে, ধীরে ধীরে অর্থনীতি থেকে শুরু করে দেশের প্রায় সব কার্যক্রম সচল হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ।
গত প্রায় তিন বছর ধরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছিল। এর মাঝেই তীব্র দাবদাহ ও বন্যায় কয়েক দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়েছে। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক-সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষতির শিকার হলো।
ক্লাস-পরীক্ষা, ষাণ্মাসিক পরীক্ষা ও মূল্যায়ন, এসএসসি ও এইচএসসির প্রস্তুতি সব কিছুতেই খারাপ প্রভাব পড়ছে। চলমান এইচএসসি পরীক্ষা কয়েক বার স্থগিত করতে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকেরাও উদ্বেগে আছেন।
এদিকে জুলাইয়ের শুরুতেই সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রত্যয় নিয়ে শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্ম-বিরতিতে স্থবির হয়ে পড়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। এ সময় থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কোটার যৌক্তিক সমাধান চেয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সারা দেশে বিক্ষোভ ও ব্লকেডের মতো কর্মসূচির পর সরকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দীর্ঘ সেশনজটের চক্রে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যেখানে এক দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে লাখ লাখ শিক্ষার্থী ক্ষতির সম্মুখীন হয়, সেখানে দীর্ঘ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্ষতিটা সহজেই অনুমেয়। দফায় দফায় শ্রেণি কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্নতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়ায় অনীহা বাড়িয়ে তুলবে। যা বার্ষিক মূল্যায়ন ও চূড়ান্ত পরীক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। তাই আর দেরি নয়; যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শ্রেণি কার্যক্রমের পরিসর বাড়াতে হবে। স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলো নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রুত সারিয়ে তুলতে হবে শিক্ষার ক্ষতগুলোকে।