দীর্ঘদিন ধরেই দেশের গণপরিবহনে অব্যবস্থাপনা চলছে। বিশৃঙ্খলার কারণে ঢাকায় যানজট বাড়ছে, রয়েছে পরিবহনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা, প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। অকালে ঝরে যাচ্ছে বহু প্রাণ, পঙ্গুত্ববরণ করে প্রতি বছর দুর্বিষহ যন্ত্রণার জীবন বরণ করছে শত শত মানুষ। 

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিগত সরকারের নেওয়া কোনো পদক্ষেপই সেভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারও রাজধানীসহ সারা দেশে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু নানামুখী চাপে সেসব উদ্যোগও ভেস্তে যেতে বসেছে। রাজধানীর গণপরিবহনকে শৃঙ্খলায় আনতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ঢাকা নগর পরিবহনকে সক্রিয় করতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো নিজেদের মতো করেই সড়কে বাস পরিচালনা করছে মালিকপক্ষ। রাজধানী ঢাকা ও শহরতলি ঘিরে ৩৮৮টি বাস রুটকে ৪২টি রুটে নামিয়ে আনা এবং সেই রুটে আলাদা বাস কোম্পানি গঠন করে সড়কে বাসের রেষারেষি বন্ধ করাই ছিল এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি এতে বাদ সাধছে। তা ছাড়া ঢাকা নগর পরিবহনে যুক্ত হতে গেলে আধুনিক, মানসম্পন্ন বাস দিতে হবে বাসমালিকদের। কিন্তু তারা অধিকাংশই দিচ্ছেন মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেসবিহীন বাস। 

বাস রুট রেশনালাইজেশন ছাড়া ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানোর বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটিকেই সমাধান খুঁজতে হবে। পুলিশের কেউ কেউ পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারা যেন নিজ স্বার্থে নগরবাসীকে জিম্মি না করতে পারে, সে জন্য পরিবহন মালিক এবং পুলিশের বিষয়গুলো সরকারকে কঠোরভাবে জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে।

পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য বন্ধে সড়কে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ত্রুটিযুক্ত যানবাহন তুলে দিয়ে মানসম্মত যানবাহন নামাতে পরিবহন মালিকদের বাধ্য করা, চালকসহ সংশ্লিষ্টদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষার মাধ্যমে কাজের অনুমতি প্রদান, যাত্রী সাধারণকে সড়কে সঠিকভাবে চলাচলে বাধ্য করা এবং প্রয়োজনে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।