
গ্রাফিক্স: সাম্প্রতিক দেশকাল
দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম মাধ্যম তৈরি পোশাক শিল্প খাত। এই খাতের সম্প্রসারণ দেশে পিছিয়ে পড়া লাখ লাখ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রায় লক্ষণীয় পরিবর্তন সাধন করেছে এবং একই সঙ্গে অর্থনীতিতে রাখছে ব্যাপক অবদান।
কিন্তু আমরা দেখছি খাতটিকে বারবার অস্থিতিশীল করে তোলা হচ্ছে। বিশেষ করে দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে যখন রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলছে, তখন এই শিল্পে চরম অস্থিরতা। গত সাড়ে পাঁচ মাসে বন্ধ হয়ে গেছে শতাধিক কারখানা। এ ছাড়া এ সময়ে গার্মেন্ট শিল্প এলাকায় এক হাজার ১৪৭টি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অগ্নিকাণ্ড, ভাঙচুর, সড়ক অবরোধ, লুটপাট, কর্মবিরতি ও চুরির ঘটনা। এর নেপথ্যে একটি পরাজিত রাজনৈতিক শক্তি জোরালোভাবে সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। পরাজিত ওই শক্তিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এরই মধ্যে ‘ভায়োলেন্স ক্রিয়েটর গ্রুপ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যারা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে অবরোধ, মিছিল, জ্বালাও-পোড়াওসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে।
সংখ্যানুপাতে বিশ্বের সর্বোচ্চসংখ্যক পরিবেশবান্ধব তৈরি পোশাক কারখানা এখন বাংলাদেশে। কিন্তু আগস্টের পর থেকে শ্রমিক অসন্তোষ ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত, ভিয়েতনাম, চীন ও কম্বোডিয়ার রপ্তানি বেড়েছে। রাজনৈতিক ও শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা নির্বিঘ্নে উৎপাদন ও সময়মতো শিপমেন্ট করতে পারছে না। তারা বলেছেন, তৈরি পোশাকের কিছু বিদেশি ক্রেতা কারখানা পরিদর্শন স্থগিত করেছে। আবার কিছু ক্রেতা অর্ডার অন্য দেশে সরিয়ে নিয়েছে।
বেকার সমস্যা সমাধানে এবং অর্থনীতির বিকাশে যে খাতটির এত ব্যাপক ভূমিকা, যেকোনো মূল্যে সে খাতের অস্থিতিশীলতার অবসান করতে হবে। যারা এসবের পেছনে সক্রিয়, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। রপ্তানিমুখী এ শিল্পকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।