বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ার প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি শিক্ষা বর্ষে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতির আশঙ্কা করছেন শিক্ষাবিদরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান অস্থিরতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সময়মতো পাঠ্যবই বিতরণ করতে না পারা, প্রযুক্তির অপব্যবহার এবং আর্থ-সামাজিক নানা চ্যালেঞ্জ শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পড়াশোনায় বাধা সৃষ্টি করছে। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর পর আড়াই মাস পার হলেও এখনো সব বই হাতে পায়নি স্কুল শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে রমজানের ছুটি। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকরাও পাঠদান পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সমস্যায় পড়ছেন। ফলে সিলেবাস সম্পূর্ণ করতে গিয়ে তাদের তাড়াহুড়ো করতে হবে, যা শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে অন্তরায় হতে পারে।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো নানা রকমের উত্তেজনা চলছে। গত সাত মাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ নানা দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে মারামারি, সংঘর্ষেও বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) বড় উদাহরণ। রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনও বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। 

বর্তমানে ছোটখাটো দাবিতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বড় ধরনের আন্দোলন করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এমনকি আলোচনার টেবিলে সমাধান সম্ভব বিষয়গুলোতেও তারা পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলছে এবং ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করছে। যার প্রভাব পড়ছে পড়াশোনায়। সব মিলিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে এক অরাজকতা বিরাজ করছে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বই ছাপানোর কার্যক্রম আগেভাগেই শুরু করা এবং পর্যাপ্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে সরবরাহ চেইন মজবুত করা জরুরি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, শিক্ষা বোর্ড এবং প্রকাশকদের মধ্যে আরো সুসমন্বয় থাকতে হবে, যাতে বই বিতরণ সময়মতো সম্পন্ন হয়।