
গ্রাফিক্স: সাম্প্রতিক দেশকাল
প্রতি বছর পবিত্র রমজানকে কেন্দ্র করে মূল্যবৃদ্ধির সিন্ডিকেট সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে যেভাবে নিজেদের উদরপূর্তি করে, সেদিক থেকে এবার ছিল ব্যতিক্রম। রমজান ও ঈদ এবার সাধারণ মানুষ বেশ স্বস্তিতে পার করেছে। কিন্তু বর্তমানে হঠাৎ করেই বাজারজুড়ে এক ধরনের অস্থিরতা, একের পর এক নিত্যপণ্যে মূল্যবৃদ্ধির নতুন বোঝা মানুষের ওপর চেপে বসেছে। বিশ্ববাজারে ধারাবাহিকভাবে দাম কমলেও দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে।
সরকারিভাবে ১৪ এপ্রিল থেকে প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পরও সয়াবিন তেলের সিন্ডিকেট আরো সাত টাকা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। বেড়েছে ডিম, মুরগি, মাছের দাম। বিদেশ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুল্কমুক্ত চাল আমদানি হলেও বাজারে এর তেমন প্রভাব পড়েনি। বরং প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৮-১০ টাকা। বেড়েছে ডাল, আটা ও সবজির দাম।
মাত্র কদিনের ব্যবধানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এই প্রবণতার কারণ অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই সময় একদিকে যেমন ফসলের ভালো উৎপাদন ছিল, অন্যদিকে বাধাহীন সরবরাহ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সব বিভাগ ও সংস্থার তদারকির কারণে সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য ছিল না বললেই চলে। পাশাপাশি ক্রেতাস্বার্থ রক্ষায় ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের তৎপরতা লাগাম টেনে ধরেছিল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেটের। কিন্তু বর্তমানে আবার ফিরে এসেছে পুরোনো বাজার সিন্ডিকেট। তারা নানা কারসাজি করে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে চলেছে। ফলে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি দামের মাশুল, জনমনে অস্বস্তি দানা বাঁধছে। এ অবস্থা অবিলম্বে শক্ত হাতে দমন করা দরকার।
কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং সাধারণ ভোক্তাস্বার্থ রক্ষার জন্য বাণিজ্য, কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। চালসহ বিভিন্ন পণ্যে শুল্ককর হ্রাস ও ভ্যাট প্রত্যাহার, পর্যাপ্ত পণ্য আমদানি, নিম্নবিত্তদের ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সহায়তা, নিয়মিত বাজার মনিটরিং ইত্যাদির মাধ্যমে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে।