Logo
×

Follow Us

মুক্তবচন

শারমিন মুরশিদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মন্তব্য এবং ভুল ব্যাখ্যা

Icon

ড. রহমান চৌধুরী

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১১

শারমিন মুরশিদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মন্তব্য এবং ভুল ব্যাখ্যা

শারমিন মুরশিদ পত্রিকান্তরে বলেছেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীন হলো। কিন্তু এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। তাদের সুস্থ করতে পারিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের খালি হাতে খালি পায়ে গ্রামে ফিরে যেতে হয়েছিল। দেশটাও গত ৫০ বছরে গড়েই উঠল না। গণতন্ত্র, সাম্য, সমাজতন্ত্র, ন্যায়বিচার সবই আড়ালে থেকে গেল। আমাদের রাজনীতি নিশ্চয় ত্রুটিপূর্ণ ছিল। সেই রাজনীতি ভুল ছিল বলেই চব্বিশ ঘটেছে।’ শারমিন মুরশিদের এই বক্তব্যকে বিকৃত করে কিছু বিভ্রান্ত মানুষ তার বিরুদ্ধে বিষোদগার করে চলেছে। বুঝতে অসুবিধা হয় না এটা চক্রান্তমূলক। মুক্তিযুদ্ধ কোনো ধর্মগ্রন্থ নয় যে তার সমালোচনা করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এর চেয়ে অনেক বেশি সমালোচনা হতে পারে। তবে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-জামায়াতের মুখে আমরা সে সমালোচনা শুনতে রাজি নই। কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধের শত্রু। তাদের সমালোচনা সব সময় একপেশে চালাকিপূর্ণ, নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের সুবিধা নেওয়া। 

কিছুই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। বিশ্বের সব বিপ্লব, বিপ্লবী এবং অন্যান্য ইতিহাসবিদ বা ব্যক্তির নানা সমালোচনা রয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধও তাই সমালোচনার বাইরের কিছু নয়। যারা বহু বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধকে কেনাবেচা করে লুটপাট করেছে তারা এবং প্রধানত হাসিনা গং মুক্তিযুদ্ধকে একটা স্পর্শকাতর বিষয় এবং শেখ মুজিবকে একজন পয়গম্বর বানিয়ে ফেলেছেন। মানে তাদের কথায় এসবের সমালোচনা চলবে না। অথচ মুক্তিযুদ্ধের নামে সব রকম লুটপাটকে জায়েজ করা হয়েছে গত ৩৫ বছর ধরে এসব কথা বলে। 

যখন ভারত স্বাধীন হয়, সেই প্রথম দিন কলকাতা শহরে সাধারণ মানুষ স্বাধীনতার পক্ষে স্লোগান দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছিল। মনে করেছিল তাদের জন্য সুদিন আসছে। সেই একই দিন ১৫ আগস্ট সন্ধ্যায় নাট্যাচার্য শিশিরকুমার ভাদুড়ি কলকাতার এক নাট্য মিলনায়তনে পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে ক্ষুদ্র এক বক্তব্য রাখেন। অনেক কথার সঙ্গে তিনি বলেন, ‘লাখো ইনসান ভুখা হ্যায়, ইয়ে আজাদী ঝুটা হ্যায়। কলকাতার মানুষের খুব বেশি দিন লগেনি সেই স্বাধীনতার আনন্দ হতাশায় পরিণত হতে। খুব দ্রুত সমগ্র ভারতের একটি জনপ্রিয় স্লোগান হয়ে দাঁড়াল, ‘লাখো ইনসান ভুখা হ্যায়, ইয়ে আজাদী ঝুটা হ্যায়।’ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ত্রুটি নিয়ে তারপর বহু সমালোচনা চলেছে, বহু গ্রন্থ লেখা হয়েছে, এখনো লেখা চলছে। স্বাধীন ভারতে কংগ্রেসের মুকুটহীন নেতা গান্ধীকে হত্যা করা হয়েছে, কারণ তিনি জিন্নাহ এবং পাকিস্তানের অধিকারের পক্ষে কয়েকটি কথা বলেছিলেন বলে। এটা তো প্রমাণিত, স্বাধীনতা ভারতের মানুষকে মুক্তি দিতে পারেনি। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বানাতে পারেনি- ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে মাত্র।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একই ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযুদ্ধ সম্পন্ন করে এসে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা দেখল, দেশ দখলে চলে গেছে নতুন লুটেরাদের হাতে। স্বাধীনতার লড়াই হয়েছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে, স্বাধীন দেশে তারাই হলো লুটেরা। স্বাধীনতার আগে বলেছিল, চাল প্রতি সের পাওয়া যাবে এক টাকার কম দামে, কিন্তু স্বাধীনতা লাভের চার বছরের মধ্যে দাম হলো চার-পাঁচ-আট টাকা, রাতারাতি দাম বাড়ছিল; মানুষ না খেয়ে মরছিল স্বাধীন দেশে। মানুষ কি সেই রকম স্বাধীনতা চেয়েছিল, যে স্বাধীন দেশে না খেয়ে থাকতে হবে? সরকারি দলের লুটপাট দেখবে। লুটপাটের কারণে দল ভেঙে গেল। পত্রিকার খবরের কাগজে চোখ বুলানো হোক তখনকার, মানুষ তখন বীতশ্রদ্ধ স্বাধীনতা নিয়ে। বাহাত্তর থেকে চুয়াত্তর সালের মঞ্চের নাটকগুলো দেখা হোক, স্বাধীনতার সমালোচনায় ভরপুর সব নাটক। স্বাধীনতা নিয়ে হতাশা মানুষের মধ্যে। বাম-ডান-জাসদ-ডাকসু মিলে ঘোষণা দিয়েছিল, শেখ মুজিবকে তারা আর বঙ্গবন্ধু বলবে না। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান ব্যক্তিত্ব, বিরাট জনপ্রিয় নেতার স্বাধীন দেশে এই হাল হলো কী করে যে, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বললেন, শেখ মুজিবকে আর বঙ্গবন্ধু বলা হবে না। মুক্তিযুদ্ধের ত্রুটি না ধরা পড়লে মঞ্চের নাটকগুলো কেন মুক্তিযুদ্ধের সমালোচনা আরম্ভ করল। মমতাজউদদীন তার এক নাটকের সংলাপে বলেছেন, ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ এত অন্ধকার যে তার আগের বাইশ বছরে এমন অন্ধকার দেখিনি। তিনি কেন এ কথা বলেছিলেন? শারমিন মুরশিদ কি ততটা কঠোর সমালোচনা করেছেন? না, করেননি। মুজিব শাসনে চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের কথা পত্রপত্রিকার পাতায় পাতায় পাওয়া যাবে। রফিক আজাদ কবিতা লিখলেন, ‘ভাত দে হারামজাদা, না হলে মানচিত্র খাবো।’ রফিক আজাদকে সেই কবিতা লেখার জন্য কেউ কখনো স্বাধীনতাবিরোধী বলেনি, বরং সেই কবিতার জন্য তার প্রচার ও জনপ্রিয়তা। রফিক আজাদ বুঝিয়ে দিলেন মানচিত্র, স্বাধীনতা- এসব শব্দের মানে দাঁড়ায় মানুষের পেটে ভাত থাকলে, না হলে স্বাধীনতা, পতাকা- এসব অর্থহীন। 

স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব এবং আওয়ামী লীগের শাসনে মানুষ কী দেখেছে? হত্যা, লুটপাট, বিরোধী দলকে নির্যাতন, সিরাজ সিকদারের মতন একজন মুক্তিযোদ্ধাকে বিনাবিচারে খুন, স্বাধীনতার পক্ষের লোকদের উত্থান, একাত্তরের খুনি ভুট্টোর সঙ্গে শেখ মুজিবের গলাগলি, স্বাধীনতার তিন বছরের মাথায় ভুট্টোকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে এনে বিশাল সংবর্ধনা প্রদান। ভিন্ন দিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান প্রকৌশলী সবচেয়ে ত্যাগী নেতা তাজউদ্দীন আহমদকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। কী প্রমাণ হয় এসব ঘটনায়? পাকিস্তানকে প্রথম আশ্রয়-প্রশ্রয় কে দিয়েছিলেন? পাকিস্তানের দালাল খন্দকার মুশতাককে তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহচর বানালেন শেখ মুজিব নিজেই। কখন বানালেন? যখন তিন বছরের মাথায় তিনি স্বাধীন একটা দেশের সব ক্ষমতা নিজের হাতে নিলেন। মানুষ যে গণতন্ত্রের জন্য বাইশ বছর ধরে সংগ্রাম করেছিল, স্বাধীন দেশে শেখ মুজিব নিজে জনগণের সে গণতন্ত্র কেড়ে নিলেন। সরকারের পক্ষে প্রচারণা চালানোর জন্য চারটি পত্রিকা রেখে বাকি সব পত্রিকা নিষিদ্ধ করা হলো। নিজের কুক্ষিগত দল বাকশাল ছাড়া আর সব দল আইন করে বাতিল করে দিলেন। দেশে নির্বাচন বলে কিছু থাকল না। সেসব ঘটনার সমালোচনা করা যাবে না কেন? সেই সব ঘটনার সমালোচনা করা মানেই কি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা? না। সেসব সমালোচনা করা মানে মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্যকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা। শারমিন মুরশিদের বক্তব্যের ভেতরে সেটাই ছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্যকে কীভাবে বানচাল করা হয়েছিল, তিনি তারই কিছু ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মাত্র। 

বাংলাদেশের তথাকথিত শিক্ষিত মানুষের চিন্তার দৈন্যদশা ফুটে ওঠে শারমিন মুরশিদের একটি মন্তব্য নিয়ে বহুজনের হৈচৈ করা দেখে। শারমিন বলেছেন এক কথা, আর তারা প্রচার করছে ঠিক ভিন্ন কথা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পূর্ব বাংলার বাঙালিদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বিরাট এক সংগ্রাম, বহু মানুষের প্রাণ ঝরেছে সেই যুদ্ধে। বাংলাদেশ নামে নতুন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। কিছু আলবদর, রাজাকার, আলশামস ছাড়া পুরো জাতি এই যুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। জামায়াত, আলবদর, রাজাকাররা তখন পাকিস্তানি জান্তার হত্যা, লুণ্ঠন ও ধর্ষণের সহযোগী ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত কতিপয় গণপরিষদ সদস্য পর্যন্ত তখন পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে কাজ করেছে। যুদ্ধ শেষ হলো ভারতীয় বাহিনীর সহযোগিতায়। তখন আবার দেখা গেল আওয়ামী লীগের দৌরাত্ম্য, নির্বাচনে কারচুপি, ভোট চুরি। গত ১৫ বছরে হাসিনার শাসনে তা আরও ভয়াবহভাবে ঘটেছে। আগের সব লুণ্ঠন, দস্যুতার মাত্রা হাজার গুণ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। হাসিনার পিয়ন, দারোয়ানরা ৪০০ কোটি টাকার মালিক হতে পেরেছে হাসিনার গত দুঃশাসনে। এই হলো আওয়ামী লীগের কাছে মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার চেতনা। এই চেতনা নিয়ে বাংলাদেশের একদল রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বিচারক ও আমলা হাসিনা সরকারের চাটুকারিতা করেছে, উন্নতির গল্প বানিয়েছে আর লুটপাট করে সম্পদের পাহাড় বানিয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আসলে কী সেটা এখন বিতর্কিত বিষয়। মুক্তিযুদ্ধকে এই বিতর্কিত বিষয় বানিয়েছে হাসিনা এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গ, বিশেষ করে শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গনের বড় একটা অংশ। তারাই এখন আবার নানা রকম ষড়যন্ত্রে নেমেছে পুরোনো ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য, বাঙালির সংস্কৃতি, শিল্প-সাহিত্যের কথা বলে নানা রকম নতুন দোকান খুলেছে।

মুক্তিযুদ্ধ একটি মর্যাদাপূর্ণ যুদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা দেশপ্রেমিক মানুষ সর্বদাই মনে রাখবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের নামে যারা স্বাধীন দেশে লুটপাট করেছে তারা অপরাধী। যারা সেই লুটের উচ্ছিষ্ট ভোগ করে তাদের পক্ষে কথা বলে, তারা ঘৃণিত।  

ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার মতন মুক্তিযুদ্ধের আগে-পরে এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বহু ভুলভ্রান্তি হয়েছিল। সেটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ইতিহাসের বড় বড় ঘটনায় তা হওয়াটাই স্বাভাবিক। বহু জন সেসব ভুলভ্রান্তি নিয়ে বই লিখেছেন, স্মৃতিকথায় তা উল্লেখ করেছেন। বহু মুক্তিযোদ্ধার রচনার ভেতরে মুক্তিযুদ্ধের সেসব ভুলের কথা পাওয়া যাবে। 

মুক্তিযুদ্ধের সমরবিদদের একজন এ কে খোন্দকার লিখেছেন, যদি আগে থেকেই স্বাধীনতার জন্য সবাইকে সচেতন এবং প্রস্তুত করে রাখা যেত তাহলে ২৫ মার্চ রাতে এত লোককে প্রাণ দিতে হতো না। বহুজন মনে করেন, ভুট্টো ও ইয়াহিয়ার ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে গড়িমসি করার পরও দিনের পর দিন শেখ মুজিবের আপস আলোচনা চালিয়ে যাওয়া ভুল ছিল; যার পরিণতিতে ২৫ মার্চ রাতে এবং তারপর এত মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছিল। অনেকে মন্তব্য করেছেন, শেখ মুজিবের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ বা ধরা দেওয়া ঠিক হয়নি। মানুষের এসব মন্তব্য উড়িয়ে দেওয়া যায় না। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবার আছে। 

যুদ্ধ চলাকালে নানা রকম সমালোচনা আছে, কিছু উল্লেখ করা যেতে পারে। যুদ্ধ চলাকালে অস্থায়ী সরকারের মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন, কিন্তু তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হয়নি। কারণ শেখ মনি গং ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী মোশতাকের পক্ষে। মণি ছিলেন এই ধূরন্ধর নীতিবিবর্জিত লোকটির পূর্ণ সমর্থক। ভিন্ন দিকে মণি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের বিরুদ্ধপক্ষ। তাজউদ্দীন আহমদকে হত্যার ষড়যন্ত্র পর্যন্ত করা হয়েছিল তখন। মুক্তি বাহিনী গঠিত হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের ভেতরে নানা রকম যুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীকে বিপদগ্রস্ত করে তোলে। কিন্তু শেখ মণি গং মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে বিভেদ লাগানোর জন্য মুক্তি বাহিনীর বিকল্প বা বিরুদ্ধপক্ষ হিসেবে ‘মুজিব বাহিনী’ গঠন করেন। এই মুজিব বাহিনীর ওপর মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ওসমানীর নিয়ন্ত্রণ ছিল না। প্রথমে এ বিষয়ে তাজউদ্দীন আহমদ বা জেনারেল ওসমানী কিছুই জানতেন না। মুজিব বাহিনী ছিল প্রধানত মুজিবনগর সরকারকে এড়িয়ে গিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একাংশ এবং মণিদের নিয়ন্ত্রণে। মণি গং এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে নিয়ে মুজিবনগর সরকারের বিকল্প একটা সরকার তৈরির চেষ্টা চলে। এসব ব্যাপারে দলিলপত্র রয়েছে। 

শারমিন মুরশিদের সঙ্গে আমার খুব ভালো পরিচয় নেই, দু-চারবার দেখা এবং কথা হয়েছে তার স্বামী হুমায়ূন চৌধুরীর সুবাদে। তিনি আমার একজন ভালো বন্ধু, লেখালেখির ভেতর দিয়ে আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। একজন মুক্তিযোদ্ধা সরাসরি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। তিনি ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর জলিলের অধীনে যুদ্ধ করেছেন কালীগঞ্জ, শ্যামনগর, গাবুরা থেকে বরিশাল পর্যন্ত অঞ্চলে। তার সরাসরি কমান্ডার ছিলেন মেজর হুদা এবং ক্যাপ্টেন বেগ। ভিন্ন দিকে শারমিন মুরশিদের পিতা এবং পিতার দিকের সবাই ছিলেন শেখ মুজিব পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। শারমিন মুরশিদ প্রথম আলো বা অন্য পত্রিকায় যা কিছু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে উচ্চারণ করেছেন, তাকেই চক্রান্ত্রকারীরা ঠিক উল্টোভাবে প্রচার করেছেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫