Logo
×

Follow Us

মুক্তবচন

আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও আজকের রাজনীতির পথ

Icon

আহমেদ কামাল

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২২, ১৫:২৫

আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও আজকের রাজনীতির পথ

আব্দুল হামিদ খান ভাসানী

কমরেড মুজাফ্ফর আহমদ ‘দ্বৈপায়ন’ ছদ্মনামে কাজী নজরুল ইসলামকে ‘ধূমকেতু’র প্রথম বর্ষ-১৩শ’ সংখ্যায় চিঠি দিয়ে বলেছিলেন, ‘কৃষক শ্রমিকের কথা কখনো ভেবেছ কি? একটা কথা সোজা তোমায় বলে দিচ্ছি, যদি ওদের কথা ভাবতে না শেখো তাহলে তোমাকে দিয়ে দেশের কোনো সেবাই হবে না, প্রাণ দিলেও না। ওরাই দেশের শক্তি। ওদের না জাগালে, আত্মবোধ না শেখালে তোমাদের তথাকথিত ভদ্দরলোকেরা কিছুই করতে পারবে না। কোনো ক্ষমতাই তাদের নেই।’ 

এই চিঠির মর্মবাণী মওলানা ভাসানী তাঁর রাজনীতির প্রয়োজনে প্রয়োগ করেছিলেন সারাজীবন। মওলানার রাজনৈতিক জীবনের বিস্তারিত বিবরণ আমি দিতে চাই না। কারণ আমি ধরে নিচ্ছি, সেটি পাঠক কম-বেশি জানেন। আমি কয়েকটি প্রশ্ন তুলতে চাই সমাজ রূপান্তরের লড়াইয়ের কর্মী বাহিনীর জন্য।

এর আগে মওলানার রাজনীতি একটি সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন করে নিতে চাই। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা মওলানাকে নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করি না। যেটুকু করি তাও নতুন কোনো দিগন্ত উন্মোচন করে না, অনেকটাই গতানুগতিক। মওলানা এ দেশের বাম ধারার রাজনীতির ব্যর্থতা ও সফলতার প্রতীক।

মওলানা ভাসানী আনুমানিক ১৮৮৫ সালে সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হাজি মোহাম্মদ শরাফৎ আলী খান এবং মা মোসাম্মৎ মজিরন বিবি। পিতা-মাতার দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন। শৈশবে তার ডাক নাম ছিল ‘চেকা মিয়া’।

ছোটবেলায় মওলানা ভাসানী ইসলামী শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। প্রচলিত আছে ১৯০৭ থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের বিখ্যাত দেওবন্দ মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছেন। সেখানে তিনি মওলানা হোসেইন আহমদ মাদানির কাছে কোরআন ও হাদিস সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করেন। ধারণা করা হয়, বাল্যকালে দেওবন্দের প্রভাবেই সারা জীবন তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ও জনগণের কল্যাণ সাধনে ব্রতী ছিলেন। অবশ্য দেওবন্দ মাদ্রাসায় যোগাযোগ করেও এই তথ্যের নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মওলানা ভাসানী প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ১৯১৭ সালে। ওই বছর চিত্তরঞ্জন দাশ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ময়মনসিংহে আসেন এবং এখানেই মওলানা ভাসানী তার সাহচর্যে আসেন। এরপর ১৯১৯ সাল থেকে তিনি সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন এবং মওলানা মোহাম্মদ আলীর অনুপ্রেরণায় জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন। 

রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের পর থেকেই জমিদারি শোষণের বিরুদ্ধে তার মন বিষিয়ে ওঠে। এ কারণেই বাংলার কৃষকদের জমিদারি শোষণ থেকে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করেন। ফলে অল্পদিনেই তিনি জমিদারদের কোপানলে পতিত হন। জমিদারদের ষড়যন্ত্রে টিকতে না পেরে তিনি আসাম চলে যান। ১৯২৪ সালে আসামের ধুবড়ি জেলার ভাসানচরে তিনি বহিরাগত বাঙালি কৃষকদের এক বিশাল সম্মেলন করেন। ওই সম্মেলনের সাফল্য থেকেই লোকজন তাকে ভাসানীর মওলানা ডাকতে শুরু করে। বিশের দশক থেকে আসামে তার দুটি পরিচয় ছিল। একজন সাহসী কৃষক নেতা এবং একজন সাহসী আধ্যাত্মিক পীর। তার এ দুটি পরিচয় জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অক্ষুণ্ণ ছিল। মওলানা ভাসানী কর্তৃক আয়োজিত প্রথম ঐতিহাসিক কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৩২ সালের ডিসেম্বরে সিরাজগঞ্জ জেলার কাওয়াখালীতে। এই সম্মেলনের পর সারা দেশে মওলানা ভাসানী পরিচিত হয়ে ওঠেন। তবে মওলানার সাধারণ মানুষের মধ্যে কাজ করার সত্যিকার অভিজ্ঞতা হয় আসামে। সেখানে তিনি ‘লাইন প্রথার’ বিরুদ্ধে এক দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। ১৯৪৭ সালের ১৭ মার্চ ‘আসাম দিবস’ উদযাপন করতে গিয়ে মওলানা প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হন। জেলজীবনের এই অভিজ্ঞতায় তিনি কোনোদিন মুষড়ে পড়েননি। 

১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত সিলেট গণভোটে মওলানা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তার অক্লান্ত চেষ্টায় সিলেট দেশভাগের সময় পূর্ববাংলার সঙ্গে যুক্ত হয়। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট যখন পাকিস্তান স্বাধীন হয় মওলানা তখন আসামে কারারুদ্ধ ছিলেন। সেপ্টেম্বরে কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে তিনি টাঙ্গাইলে আসেন। টাঙ্গাইলের সন্তোষে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন এবং আমৃত্যু এখানেই ছিল তার আবাস। এই সন্তোষ থেকেই বাকি জীবন নেতৃত্ব দেন বিভিন্ন আন্দোলন। পরিচালনা করেন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড। মওলানা জমিদার-জোতদার-মহাজনদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন, ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন, পাকিস্তানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথমে আওয়ামী মুসলিম লীগ, পরে আওয়ামী লীগ ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করেছেন, কৃষক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠন গড়ে তুলেছেন।

নেতৃত্ব দিয়েছেন কৃষক-শ্রমিক আন্দোলনে, লড়াই করেছেন সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, ক্ষেপে উঠেছেন ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সংগ্রাম করেছেন সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, চেষ্টা করেছেন বিশ্বে যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়। শিক্ষা বিস্তারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। আল আজহারের আদর্শে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। অনাড়ম্বর, সাধারণ জীবনযাপন করেছেন। বিলাসিতা সহ্য করতে পারতেন না। কোনো সরকারি পদ কোনো দিন গ্রহণ করেননি। অসাধারণ এই অনলবর্ষী নেতাই সূচনা করেছিলেন ঐতিহাসিক ঊনসত্তরের গণআন্দোলন। ’৭১-এ হানাদার বাহিনীর হাত থেকে পালিয়ে তিনি ভারতে চলে যান এবং স্বাধীনতা যুদ্ধেও অন্যতম সংগঠক হিসেবে অবস্থান নেন। বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি গঠনে বিশেষ উদ্যোগ নেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনিই ছিলেন একমাত্র সাহসী কণ্ঠ, যিনি নির্ভয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেন। সাপ্তাহিক ‘হক কথা’ প্রকাশ করে তিনি স্বাধীনতা-উত্তর আওয়ামী লীগ সরকারের অপশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছেন। ১৯৭৬ সাল তার মৃত্যুর বছর। ওই বছরের মার্চে গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে তিনি ফারাক্কা লং মার্চের নেতৃত্ব দেন।

মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক অবদানের মূল্যায়ন করতে হলে যে বিষয়টি মুখ্য হয়ে ওঠে সেটি হচ্ছে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধিকার আন্দোলনে তার ভূমিকা। ১৯৫৫ সালের ১৭ জুন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তিনি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসকদের ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে বিচ্ছিন্ন হওয়ার হুমকি দেন। ১৯৫৬ সালের ১৫ জানুয়ারি, ’৫৭ ও ’৭০-এর নির্বাচনের আগেও দক্ষিণাঞ্চলে জলোচ্ছ্বাসের ধ্বংসলীলার পরও তিনি বিচ্ছিন্ন হওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। প্রকাশ্য জনসভায় এসব হুমকি জনগণের মধ্যে স্বাধিকার বোধকে তীক্ষ্ণ করে তুলেছিল। ’৭১-এর জানুয়ারি থেকেই তিনি স্বাধীন সার্বভৌম পূর্ব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার কথা বিভিন্ন জনসভায় বলে বেড়াতে শুরু করেন। তার বক্তৃতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সমর্থন, স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতিতে অনেকখানি সাহায্য করেছিল। 

যদি এক কথায় মওলানার অবদানকে মূল্যায়ন করতে হয় তাহলে বলা যায়, পূর্ব বাংলার জাতীয় মুক্তির প্রশ্নকে মওলানা রাজনৈতিক কর্মসূচির শীর্ষে নিয়ে এসেছিলেন। এ কারণে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরিতে খুব বিলম্ব ঘটেনি। মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি পূর্ব বাংলা ও বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনীতিকে সব সময় প্রভাবিত করেছে। বাম রাজনীতিতে তার প্রভাবএভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, মওলানা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে যত বড় হয়েছেন, বাম রাজনীতি তত বড় হয়েছে। অন্যদিকে মওলানা যত ছোট হয়েছেন, বাম রাজনীতি তত ছোট হয়েছে। তাকে ছোট করার কাজটা বামপন্থীরাও কম করেনি।

তার রাজনৈতিক জীবনের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে উল্লেখ করলে যা দাঁড়ায় সেটি হচ্ছে- তিনি শ্রমিক, কৃষকের শোষণ মুক্তি চেয়েছেন; সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করেছেন; ভারতবর্ষের ঔপনিবেশিক শাসনামলে সংখ্যালঘিষ্ঠ মুসলমানদের অধিকার রক্ষার আন্দোলন করেছেন; ব্রিটিশ শাসনের অবসানে পাকিস্তান রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধিকারের জন্য আন্দোলন করেছেন;একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য ছিলেন সার্বক্ষণিক যোদ্ধা; ইসলামের সাম্যের বাণী আর বাম রাজনীতির সাম্যবাদের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখেননি। চেষ্টা করেছেন সেতুবন্ধন তৈরি করতে। এভাবে ইসলাম আর বাম রাজনীতির মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে বাংলার শোষিত মানুষের প্রিয় ‘মওলানা’ হয়ে উঠেছিলেন। সাধারণ কৃষকের কাছে তিনি ছিলেন আধ্যাত্মিক নেতা, তাদের ‘পীর’। আর মধ্যবিত্ত বামপন্থী কর্মীদের কাছে ছিলেন সাম্রাজ্যবাদ, স্বৈরাচার, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের পক্ষের প্রধান রাজনীতিবিদ।

মওলানাকে নিয়ে আমরা কেন লিখব? যে সময়ে মওলানা রাজনীতি করেছেন, যে কৃষক-শ্রমিকের সমস্যা নিয়ে তিনি আন্দোলন করেছেন সেই কৃষক-শ্রমিকের চেহারা এখন কি ওই সময়ের মতো আছে? বিশ্বের ক্ষমতা কাঠামো সেই সময় যেমন ছিল, আজও কী তেমনটি আছে। তবে তার রাজনীতি থেকে কি শিক্ষা নেবো আমরা?

আমি মনে করি, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা আমরা তার কাছ থেকে পেতে পারি। সর্বপ্রথম তিনি যে রাজনৈতিক শিক্ষা রেখে গেছেন সেটি হচ্ছে, যে মানুষের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন তাদের মধ্যেই সারাজীবন থেকেছেন। সারাজীবন সন্তোষের ওই কুঁড়েঘরে কৃষক, শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে তিনি তার রাজনীতি নির্ধারণ করেছেন। তিনি তাদের ভাষা বুঝতেন, তারাও তার ভাষা বুঝতো। তিনি তাদের চৈতন্য, তাদের অবদমিত আত্মমর্যাদাবোধ, সর্বোপরি তাদের ঈমান বা বিশ্বাসকে অনুধাবন করতে পারতেন।

আজ এই জীর্ণ সমাজকে যারা পরিবর্তন করতে চায় তাদের বুঝতে হবে, এই সমাজের কে বা কারা পরিবর্তন চায়। আমাদের সমাজের মানুষের মধ্যে সামাজিক অবস্থানে ঘূর্ণায়মান ওঠানামা (সাইক্লিক্যাল মোবিলিটি) তীব্রতর হচ্ছে। কিন্তু মৌলিক শ্রেণিগুলোর মধ্যে পার্থক্য সুষ্পষ্ট হচ্ছে না বা সমাজ দুই ভাগে ভাগ হয়ে স্থির হচ্ছে না। বিশ্বায়ানের ফলে সমাজে শ্রেণি উত্তরণের সুযোগ বেড়ে গেছে। এটি সম্ভব হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজার, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি লুণ্ঠন, ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থা, শ্রমবাজারের বিস্তৃতি, নতুন প্রযুক্তি সর্বোপরি তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লবের কারণে। অন্যদিকে বৃদ্ধি পেয়েছে জনগণের ওপর শোষকের প্রায় ঐশ্বরিক নজরদারিসহ দমন-পীড়নের নয়া কৌশল।

এর পরিপ্রেক্ষিতে সমাজ পরিবর্তনের রাজনীতি কী হবে? সেটি মওলানার পথ ধরে শোষিত মানুষের পাশে থেকে জানতে হবে। সব রাষ্ট্রীয় যন্ত্র আজ এক দানবীয় চেহারা নিয়েছে।

রাষ্ট্রের অধিপতি আজ সামরিক-বেসামরিক আমলারা। তারা কোন শ্রেণিভুক্ত? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। খোঁজ নিতে হবে ’৪৭-এর পর এ পর্যন্ত সব রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির মালিকানার কতো অংশ আমলাদের দখলে গেছে? আজ জাতীয় বুর্জোয়া কারা? শ্রমিক শ্রেণির চরিত্র কী? জাতিরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব কীভাবে নির্ধারিত হচ্ছে? সীমানা দিয়ে না বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ দিয়ে? স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মধ্যে সম্পর্কের ধরন কী? 

যে ইসলামের ওপর বেশির ভাগ মানুষের বিশ্বাস সেই ইসলামের প্রকৃতি কী? সবাই কি একই ইসলাম অনুসরণ করে? বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমাদের দেশে ইসলামের চেহারা কীভাবে পাল্টাচ্ছে? মওলানার ইসলামের সাথে তার পার্থক্য কী? মওলানার ইসলামের সঙ্গে সমাজ পরিবর্তনের রাজনীতির সম্পর্ক কী হবে? এগুলো সবই আজকের এজেন্ডা। এসব প্রশ্নের মীমাংসা না করে সমাজ পরিবর্তনের রাজনীতি এগোবে না। আজ কৃষক আন্দোলন নেই, কৃষক সংগঠন নেই। তবুও জনগণের মধ্যে সামাজিক ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা তীব্রতর হচ্ছে।

সর্বোপরি সমাজে যত দিন শোষণ থাকবে, যত দিন অন্যায় থাকবে, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম তত দিন চলবে। সেই সংগ্রামকে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর প্রক্রিয়া চালু থাকতে হবে। সেই খাপ খাওয়ানোর শিক্ষা মওলানা দিয়েছেন। এই শিক্ষা নিতে হবে জনগণের কাছ থেকে। মনে রাখলে ভালো হয়, যে ট্রেন ছেড়ে গেছে সেই ট্রেন ধরার জন্য পেছনের স্টেশনের দিকে না দৌড়ে সামনের স্টেশনের দিকে দৌড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ। 


লেখক : সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫