Logo
×

Follow Us

মুক্তবচন

একজন মহিউদ্দিন আহমদ

Icon

জিয়াউদ্দীন আহমেদ

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২২, ১৪:০৭

একজন মহিউদ্দিন আহমদ

মহিউদ্দিন আহমেদ

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সচিব, সাবেক কূটনীতিক ও কলামিস্ট মহিউদ্দিন আহমেদ গত ২০ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার মৃত্যুতে দেশ এক অমূল্য সম্পদ-ব্যক্তিকে হারিয়েছে। মহিউদ্দিন আহমেদের সাথে বঙ্গবন্ধু তথা বাংলাদেশের একটি গৌরবময় ইতিহাসের অংশ জড়িয়ে আছে। যা এখনো অনেকেরই অজানা। শুরুতে আজ সে কথাই বলা যাক। 

একাত্তরের পঁচিশে মার্চ গভীর রাতে পাকিস্তানি সেনারা বঙ্গবন্ধুকে তার বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়ার পরও আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার বাঙালি জাতিকে উজ্জীবিত রাখতে অনবরত বলে যাচ্ছিল ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের সাথে আছেন’। তখন পর্যন্ত অনেকের দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো বঙ্গবন্ধু ধরা পড়েননি, মাও সে তুং বা হো চি মিনের মতো ‘আণ্ডার গ্রাউন্ডে’ অবস্থান করে গেরিলা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সময় গড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথে বাঙালি উপলব্ধি করে যে, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানিদের হাতে বন্দি। পাকিস্তানি কারাগারে বঙ্গবন্ধুর আটক থাকার খবর প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯ জুলাই ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায়। 

বঙ্গবন্ধুকে ঢাকা থেকে তুলে নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের লায়ালপুর ও মিয়ানওয়ালি জেলে এমন প্রকোষ্ঠে রাখা হয় যেখানে রাখা হতো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের। জেলখানার দুর্বিষহ পরিবেশ, দুঃসহ গরম ও নিঃসঙ্গ কারাবাসও বঙ্গবন্ধুর মনোবল গুঁড়িয়ে দিতে পারেনি। রাষ্ট্রদ্রোহ ও যুদ্ধ ঘোষণাসহ বারটি অভিযোগের ভিত্তিতে বেসামরিক ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুর বিচার শুরু হয় কোর্ট মার্শালে। বিশ্বকে ধোঁকা দিতে এই প্রহসনের বিচারে আসামি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে পাকিস্তানের খ্যাতনামা উকিল এ. কে. ব্রোহিকে নিযুক্ত করা হয়। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সেনা ট্রাইব্যুনাল ৪ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করে। 

মিয়ানওয়ালি জেলে দণ্ডাদেশ কার্যকর করার ব্যবস্থা নেওয়া হতে থাকে। যে সেলে তিনি ছিলেন তার পাশে আট ফুট লম্বা, চার ফুট প্রশস্ত ও চার ফুট গভীর কবর খোঁড়া হয়। আদালতের রায় কার্যকর করার আগেই বঙ্গবন্ধুকে জেলের ভেতর হত্যা করার উদ্দেশ্যে প্রচার করা হয় যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজি যুদ্ধে নিহত হয়েছেন এবং তার মৃত্যুর জন্য যে ব্যক্তি দায়ী সেই ব্যক্তি মিয়ানওয়ালি জেলে রয়েছেন। নিয়াজি ছিলেন মিয়ানওয়ালি জেলার বাসিন্দা, আর জেলের অধিকাংশ কয়েদি ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলো মিয়ানওয়ালির অধিবাসী। এই পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খাজা তোফায়েল বঙ্গবন্ধুকে ১৬ ডিসেম্বর রাতে জেলখানা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যান। 

ইত্যবসরে ভুট্টো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ২৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুকে জেলখানা থেকে বের করে বাহাত্তরের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত রাওয়ালপিন্ডির বাইরে এক বাংলোয় অন্তরীণ রাখেন। বাংলোয় ভুট্টোকে দেখে বঙ্গবন্ধু জানতে চাইলেন, ভুট্টো তার মতো বন্দি কী না। ভুট্টো জানালেন, তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু ঠাট্টা করে বললেন, ‘আমি আপনার চেয়ে দ্বিগুণ আসন পেলাম, অথচ আপনি প্রধানমন্ত্রী!’ ভুট্টো বললেন, ‘ইচ্ছে করলে আপনিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন’। ভুট্টো ইরানকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে একটি সমঝোতার প্রচেষ্টা নিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়তায় তা ব্যর্থ হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধুর অনুরোধে জেলখানা থেকে ড. কামাল হোসেনকে এনে বঙ্গবন্ধুর সাথে বাংলোয় থাকতে দেয়া হয় এবং করাচি থেকে ড. কামালের স্ত্রী ও তাদের দুই মেয়েকে এনে বঙ্গবন্ধুর জন্য নির্ধারিত বিমানে তুলে দেয়া হয়। 

ভুট্টো ও বঙ্গবন্ধুর মধ্যে যখন বাংলোয় কথা হচ্ছিল তখনো সারা বিশ্ব ও স্বাধীন বাংলাদেশ নিশ্চিত হতে পারেনি যে, বঙ্গবন্ধু জীবিত, না মৃত। ভুট্টো ৮ জানুয়ারি খুব ভোরে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ার লাইন্সের একটি বিশেষ বিমানে তুলে দেন। তখনো বঙ্গবন্ধুর মুক্তির বার্তা বাংলাদেশ বা ব্রিটেনের কেউ জানে না, বিমান অবতরণের এক ঘণ্টা আগে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়ান সাদারল্যান্ডকে প্রথম অবহিত করা হয়। তিনি লন্ডনে বাংলাদেশ মিশনের সিনিয়র কর্মকর্তা রেজাউল করীমকে জানান। 

মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে লন্ডনে পাকিস্তান দূতাবাসের অপেক্ষাকৃত সিনিয়র কূটনৈতিক রেজাউল করীম পাকিস্তান দূতাবাস ত্যাগ করে বাংলাদেশ মিশনে যোগ দেন, পরবর্তীতে তিনি খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হয়েছিলেন। রেজাউল করীম মহিউদ্দিন আহমদকে বঙ্গবন্ধুর আগমন বার্তা অবহিত করে হিথ্রো বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে রিসিভ করতে অনুরোধ করেন। বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী তখন বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। 

মহিউদ্দিন আহমদ ও আরো দুই বাঙালি মিলে হিথ্রো বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে রিসিভ করতে চলে যান। নিরাপত্তার কথা ভেবে বঙ্গবন্ধুর আগমন বার্তা তখনো গোপন রাখা হয়, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কোনো সদস্যও তার মুক্তির বিষয়ে অবহিত ছিলেন না। স্বাধীন হয়েও বাঙালি জাতি তখন স্বস্তি পাচ্ছিল না; গোটা জাতি তাকিয়ে ছিল তার দিকে, যিনি সদ্য স্বাধীন বাঙালি জাতির সম্মুখে উপস্থিত হয়ে বলবেন, ‘ফাঁসির পর যে মরদেহ আমি বাংলাদেশে পাঠাতে ভুট্টুদের বলেছিলাম সেই ফাঁসির রজ্জু ছিঁড়ে বেঁচে আছি।’ আনন্দভরা অস্থিরচিত্তে মহিউদ্দিন আহমদ বঙ্গবন্ধুর আগমন ও দর্শনের অপেক্ষা করতে থাকেন। বঙ্গবন্ধুকে দেখা মাত্রই তাদের সকলের হৃদয় আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠল।

সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ তখনো বঙ্গবন্ধুর জীবনহানির শঙ্কায় কাঁদছে, বিজয়ের আনন্দে পড়েছে কালোমেঘের ছায়া। সেই মুহুর্তে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুর বুকে মাথা রেখে মহিউদ্দিন আহমদ আনন্দে কাঁদছেন; বঙ্গবন্ধু তাকে বুকে টেনে নিয়ে বলে উঠলেন ‘ভয় নেই, আমি এসে গেছি’। এ এক অন্যরকম আনন্দের ইতিহাস। অবশ্য ইতিহাসের এই অংশে ঢুকে যাওয়ার আগেই মহিউদ্দিন আহমদ বাংলাদেশের জন্য নতুন আরেক গৌরবজনক অধ্যায়ের সূচনা করেন। 

১ আগস্ট, ইংরেজ তরুণ-তরুণীদের নিয়ে গঠিত ‘একশন বাংলাদেশ’-এর নেত্রী পল কনেটের উদ্যোগে লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে হাজার হাজার বাঙালি ও ইংরেজদের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে সরকারি চাকরির মায়া ত্যাগ করে মহিউদ্দিন আহমেদ পাকিস্তানের পক্ষত্যাগ করে বাংলাদেশ সরকারের আনুগত্য স্বীকার করে এক সাহসী ঘোষণা দিয়েছিলেন। 

বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী তার ‘প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি’ বইটিতে উল্লেখ করেছেন, ‘পাকিস্তান সরকারে কর্মরত কূটনীতিবিদদের মধ্যে সমগ্র ইউরোপে মহিউদ্দিন আহমদই প্রথম পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। সেই কারণেই অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আমার মারফত তাকে শুভেচ্ছা জানান।’ 

মহিউদ্দিন আহমদের আনুগত্য স্বীকারের সাথে সাথে সমাবেশে উপস্থিত প্রবাসী বাঙালি ও ইংরেজ তরুণ-তরুণীদের মধ্যে আনন্দের যে উচ্ছ্বাস ধ্বনি উত্থিত হয়েছিল তা ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তার ‘পূর্ব-পশ্চিম’ উপন্যাসে উল্লেখ করেছেন। এমন ঘোষণায় ইউরোপসহ সারা বিশ্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে একটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়। 

আবু সাইদ চৌধুরী তার বইতে লিখেছেন, মহিউদ্দিন আহমদ এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে পাকিস্তান দূতাবাস ত্যাগ করতে মনস্থ করেছিলেন। কিন্তু আবু সাইদ চৌধুরী তাতে সম্মতি দেননি; কারণ তখনো প্রবাসী সরকারের কার্যক্রম শুরু হয়নি। ১৯৭১ সনের ১০ এপ্রিল প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয় এবং ১৭ এপ্রিল সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেন। উপরন্তু পাকিস্তানের গোপন তথ্য পাওয়ার নিমিত্তে তার আরো কিছুদিন পাকিস্তান দূতাবাসে থাকার দরকার ছিল। মহিউদ্দিন আহমদ মুজিবনগর সরকারের আনুগত্য স্বীকার করার পরপর ১৭ আগস্ট লন্ডনে বাংলাদেশ মিশন প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সরকার হওয়ার আগেই মহিউদ্দিন আহমদ বাংলাদেশের আনুগত্য স্বীকার করতে চেয়েছিলেন- এমন সাহস সকলের থাকে না। 

মহিউদ্দিন আহমদ ১৯৬৭ সনে পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেয়ার পূর্বে তিনি করাচির পাকিস্তান রেডিওতে অনুবাদক হিসেবে কিছুদিন কাজ করেন, পরে ফেনী কলেজে শিক্ষকতা করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শেষে লন্ডন দূতাবাসে তাকে তৃতীয় সচিব হিসেবে বদলী করা হয় এবং পরবর্তীতে দ্বিতীয় সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান। পাকিস্তান দূতাবাসের লোভনীয় চাকরি ত্যাগ করে মহিউদ্দিন আহমদ তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে পথে নামলেন, থাকার জায়গা ছিল না, খাবার কেনার পয়সা ছিল না। পাকিস্তান দূতাবাস ত্যাগ করার পর কপর্দকশূন্য মহিউদ্দিন আহমদকে লন্ডনে এক বাঙালি তার বাসায় আশ্রয় দেন এবং আবু সাইদ চৌধুরী তাকে প্রতি মাসে যৎসামান্য পাউন্ড দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। 

তিনি দীর্ঘদিন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সার্টিফিকেট নেননি, তিনি সরকার ঘোষিত দুই বছরের এন্টি ডেইটেড সিনিয়রিটির সুযোগ গ্রহণ করেননি। মাত্র দুই বছর পূর্বে বন্ধুদের প্রেসারে সার্টিফিকেট নিতে গিয়ে তিনি আমলাতন্ত্রের উন্নাসিকতায় বিরক্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটি ও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মন্ত্রীর এক জনসভায় কঠোর ভাষায় বক্তব্য দিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মহিউদ্দিন আহমদ সর্বদা গর্ব করতেন। 

মহিউদ্দিন আহমদের দুই মেয়ে- অরু মহিউদ্দিন ও লোরা মহিউদ্দিন। চাকরি জীবন শেষেও তার কোনো সঞ্চয় ছিলো না, তিনি ছিলেন গ্রামের মাইনর স্কুলের এক প্রধান শিক্ষকের সন্তান। তার বাবা এন্ট্রান্স পাস করে কোনো চাকরির প্রত্যাশা না করে ১৯২৬ সনে ফেনীর জিএমহাট এলাকায় একটি মাইনর স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। অবসর নেয়ার পর তার ব্যক্তিগত কোনো গাড়ি ছিলো না, চলাফেরার বাহন ছিল রিক্সা আর বাস। তিনি আক্ষেপ করতেন ছাই বিক্রেতা এক নারীর জন্য, যাকে তিনি বিগত ২০ বছর ধরে তার বাসার সম্মুখের রাস্তা দিয়ে ‘ছাই নেবেন, ছাই’ বলে চিৎকার করতে শুনেছেন। তিনি কষ্ট পেতেন প্রবীণ রিক্সাচালকদের জন্য যাদের রিক্সায় যাত্রী উঠে না; তিনি প্রবীণ রিক্সাচালক দেখলেই তাদের রিক্সা ভাড়া নিতেন এবং গন্তব্যস্থলে পৌঁছে পকেটের সব টাকা ভাড়া হিসেবে দিয়ে দিতেন।

বিগত ২০ বছর যাবত তিনি তার পেনশন ও মুক্তিযোদ্ধার ভাতা তার জিএমহাট এলাকার তালিকাভুক্ত ৩০টি গরীব পরিবারের মধ্যে বিলি করে দিতেন। তিনি ধর্ষণের শিকার মেয়ে ও শিশুদের দেখতে হাসপাতালে গিয়ে তাদের হাতে উপহার তুলে দিতেন। গৃহকর্মীদের ওপর নির্যাতন তাকে বিচলিত করত, তিনি ‘প্রথম আলো’র সম্পাদককে চিঠি লিখে এই সকল নিপীড়িত গৃহকর্মীদের পক্ষে কলম ধরতে অনুরোধ করেছিলেন। 

বিভিন্ন পত্রিকায় তিনি প্রায় পনেরশত কলাম লিখেছেন; তিনি তার লেখার সম্পাদনা পছন্দ করতেন না বলে কলাম লেখা বন্ধ করে দেন। তিনি প্রতিদিন কমপক্ষে ১০টি দৈনিক পত্রিকা পড়তেন। তার প্রিয় পত্রিকা ছিল ‘দ্য ইকোনোমিস্ট’। তার বাসায় কমপক্ষে ১০টি বুক শেলফ রয়েছে। তার শখ ছিল ‘পড়া’। রাস্তায় বের হলে তার কাছে দুটি জিনিস থাকত- একটি কলম আর একটি ছোট নোটবুক।

একাত্তরের স্মৃতি বিজড়িত লন্ডন পুনরায় দেখার খুব আগ্রহ ছিল, কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় তার লন্ডন দেখা আর হয়নি। দশ/বারো বছর পূর্বে তার চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ২০ হাজার ডলার বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জাদুঘরে ফেরত দেয়ার নিমিত্তে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রি করেছিলেন, কিন্তু একটি অনুক্ত কারণে তার আগ্রহ পূরণ হয়নি। 

এই মহিউদ্দিন আহমদ, আমার মেজো ভাই। ২০ জুন, ২০২২-এর সন্ধ্যায় তার মৃত্যুর সাথে একজন সাহসী, নির্ভীক, নির্লোভ, আপোষহীন ও অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযোদ্ধার জীবনাবসান হলো। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫