
গ্রাফিক্স: সাম্প্রতিক দেশকাল
সরকারি উচ্চপদের কর্মকর্তাদের অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ার খবর একের পর এক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে নিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে; তখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মতিউর রহমানের ছেলের ছাগলকাণ্ডে দেশ আবার সচকিত। সামান্য বেতনের বিপরীতে দেশে ও বিদেশে এদের বিশাল সম্পদের খবরে সাধারণ মানুষের বিস্ময়ের শেষ নেই।
কথা হচ্ছে উচ্চ পর্যায়ের এই কর্মকর্তাদের, বিশেষ করে দুর্নীতির দায়ভার সরকারের উচ্চ মহল এড়াতে পারে কি? বেনজীর আহমেদ তার প্রায় ৩৫ বছরের চাকরিজীবনে পাঁচবার পুলিশের সর্বোচ্চ পদক ‘বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল’ লাভ করেন। তার কৃতিত্বের মধ্যে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদকও আছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০২০-২০২১ সালে তাকে শুদ্ধাচার পুরস্কার দেয়। এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২১ সালে সেরা করদাতা নির্বাচিত করে।
২০২০-২০২১ সালে বেনজীর যখন শুদ্ধাচার পুরস্কার পেয়েছেন, সে সময় দুদকের তথ্য অনুযায়ী, তিনি ও তার পরিবার ৮৭ একরেরও বেশি জমি ক্রয় করেছেন। ২০২১ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড যখন তাকে সেরা করদাতা নির্বাচিত করে, ওই সময় বেনজীর ও তার পরিবার ১৩৮ একরেরও বেশি জমির মালিক ছিলেন। সরকারের উচ্চমহলের কি বেনজীরের এত অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার কোনো তথ্যই জানা ছিল না? রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাহলে কী করেছে?
এসব অবৈধ সম্পদের খোঁজ আরও একবার প্রমাণ করে দিয়েছে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সরকারি কর্মকর্তা দিনের পর দিন দুর্নীতি করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব কর্মকর্তার পৃষ্ঠপোষক কারা? শুধু দুর্নীতিবাজরাই নয়, যাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে, সেসব পৃষ্ঠপোষকের পরিচয় উন্মোচন করে তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা উচিত। নইলে দুর্নীতি বন্ধ হবে না।