কোন দেশ গণতান্ত্রিকভাবে কতটুকু শক্তিশালী, সেটি পরিমাপে যেসব নির্দেশক রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার সূচক। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান কেবলই পিছিয়েছে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকের ২০২৪ সংস্করণেও গত বছরের তুলনায় দুই ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। মোট ১৮০টি দেশের মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৫তম।
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অন্তত নয়টি আইন প্রয়োগ হচ্ছে, যার সবশেষ সংস্করণ ছিল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন; যদিও সম্প্রতি এর নাম ও কিছু ধারা পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছিল; তবু তা গণমাধ্যম ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য হুমকি হিসেবেই থেকে গেছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই এই সময়ে নিজের মতো করে সরকার, কিংবা সরকারদলীয় সুবিধাভোগীদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যেতে পারে এমন প্রতিবেদন প্রকাশে বিরত ছিল।
এর সত্যতা ফুটে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের ২০২২ সালের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে। সেখানে দাবি করা হয়, বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা অভিযোগ করেছেন, তাদের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ‘চাপের ভয়ে’ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করেনি।
তাই সময় এসেছে সাংবাদিকতা, বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও বাকস্বাধীনতা অবাধ করতে দণ্ডবিধি ১৮৬০-সহ সংশ্লিষ্ট সব আইন ও বিধি, বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন ঢেলে সাজানো এবং আধুনিক বিশ্বের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রণয়ন কিংবা পুনঃপ্রণয়ন।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বিভিন্ন দাবি ও প্রস্তাব তুলে ধরেছেন সংবাদপত্রের সম্পাদকরা। স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের কথা বলেছেন তারা। আমরা আশা করি, গণমাধ্যম নিষ্পেষণের জন্য যত কালাকানুন রয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব এগুলো বাতিল করা হবে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : গণমাধ্যম সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ মতামত
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh