অগ্রাধিকার ঠিক করে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় এগিয়ে যেতে হবে

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:৫১

গ্রাফিক্স: সাম্প্রতিক দেশকাল
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এক মাস পার হয়েছে। পাহাড় সমান প্রত্যাশা নিয়ে যাত্রা শুরু করা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি মানুষের মধ্যে জেগে উঠেছে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের ব্যাপারে বিপুল আশা ও উদ্দীপনা। যদিও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি-অনিয়ম ও দলীয়করণে প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগ, অর্থনীতি থেকে শিক্ষা-সব ক্ষেত্রে যে অব্যবস্থাপনা-স্বল্প সময়ে তার সমাধান কঠিন। তবে এই সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন বক্তব্য, পদক্ষেপ ও পরিকল্পনায় ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে আন্তরিকতার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সামনে আছে আরও অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ, যেগুলো অতিক্রম করতে হবে তাদের।
জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়া সুনির্দিষ্ট করে হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী ও হুকুমের আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার করার প্রক্রিয়া দৃশ্যমান করতে হবে। নতুন করে বিভিন্ন খাতে চাঁদাবাজি দেখা যাচ্ছে, এসব বন্ধ করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি, মব জাস্টিসের ঘটনা ঘটছে। প্রতিষ্ঠানগুলো সেবামূলক কাজ ঠিকঠাক করতে পারছে না; বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে অনেক ক্ষেত্রে দলীয় বিবেচনায় প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগের অভিযোগ রয়ে গেছে; দাগি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী বলে চিহ্নিত বেশ কয়েকজন অপরাধীকে একের পর এক জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কোন প্রক্রিয়ায় তা স্পষ্ট নয়; পুলিশ, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদির সংস্কারের কথা বলা হলেও এগুলো সংস্কারের পদ্ধতিগত দিক স্পষ্ট করা হয়নি, কোনো রোডম্যাপও ঘোষণা করা হয়নি। এই বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ হলো সরকারের কাজের অগ্রাধিকার ঠিক করে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। আমরা আশা করব, বিগত সরকারের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশকে।