বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর পর ইতিমধ্যে দুই মাস পূর্ণ হয়েছে। জুলাই-আগস্ট- এই দুই মাসে বিগত সরকারের বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত অনেকে এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন পর্যন্ত আন্দোলনে এক হাজার ৪২৩ জনের মৃত্যু এবং প্রায় ২২ হাজার আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
পঙ্গু বা অঙ্গহানি হয়েছে- এমন মানুষের সংখ্যা ৫৮৭ জন। গুলি লেগে আংশিক বা সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন ৬৮৫ জন। তাদের মধ্যে ৯২ জন দুই চোখেই গুলি খেয়েছেন বা দুই চোখই নষ্ট হয়ে গেছে। আন্দোলনে আহত-নিহতদের একটা অন্যতম অংশ শ্রমজীবী। তাদের অনেকেই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ফলে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে এবং ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে পুনর্বাসন ও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত ঘোষণা এসেছে এবং সরকারি কোষাগার থেকে চিকিৎসাখরচ জোগানো হচ্ছে; কিন্তু চিকিৎসাব্যয়ের পাশাপাশি তাদের আরও যেসব ব্যয় আছে, সেসবের জোগান নিশ্চিত না থাকায় পরিবারগুলো অনিশ্চয়তায় দিনযাপন করছে। তা ছাড়া ঢাকার বাইরেও সারাদেশের যে অসংখ্য ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন এখনও তাদের সবার চিকিৎসা-সুবিধা নিশ্চিত হয়নি। তাদের অনেকেই অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে পঙ্গুত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ইতিমধ্যে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দল হাসপাতালে রোগীদের অবস্থা পরীক্ষা করছে। আমরা আশা করব-গুরুত্ব বিবেচনা করে যাদের চিকিৎসাসেবা দ্রুত প্রয়োজন, তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ সরকার নেবে। যাদের রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি, তাদের যেন আমরা ভুলে না যাই।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh