ভরা মৌসুমেও চালের দাম বৃদ্ধি
সাধারণ মানুষের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার অন্যতম উপকরণ চাল। ফলে দাম যত বেশিই হোক না কেন, তাকে চাল কিনতেই হয়। তাই চালের দাম বাড়লে সীমিত আয়ের মানুষের জীবন ধারণ হয়ে পড়ে কঠিন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম বেড়েই চলেছে। বিস্ময়কর হলো, আমনের ভরা মৌসুমেও চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৭-১০ টাকা। যে কারণে গরিব মানুষের আয়ের বেশির ভাগ ব্যয় হচ্ছে চাল কিনতে।
এর আগে গত বছরেও আমরা একই অবস্থা দেখেছি। সরকারি গুদামে চালের মজুদ ও বাজারে পণ্যটির সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকার পরও ভরা মৌসুমে চালের বাজার ছিল অস্থির। তখন বলা হতো, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরাই কারসাজি করে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে তো এই অভিযোগ নেই। তার পরও পরিস্থিতির পরিবর্তন হলো না কেন? এখন কারা কারসাজি করছে?
বলা হয় বাজারে যখন দাম কম থাকে, তখন বড় ব্যবসায়ীরা চাল কিনে মজুদ করেন। আর দাম বাড়লে বিক্রি করেন। বাজারবিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে চালের অভাব নেই। কিন্তু তার পরও ব্যবসায়ীরা নানা কারসাজি করে দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কারণ অতীতের দাম বাড়ানোর সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয়। অথচ গত পাঁচ মাসে সরকার এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
এই অবস্থার সমাধানের জন্য সরকারকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সরবরাহ বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে দেশের বাইরে থেকে আমদানি করে হলেও ঘাটতি পূরণ করতে হবে। গত নভেম্বরে সরকার চাল আমদানির সব শুল্ক তুলে নেয় এবং বেসরকারি খাতের ২২৭টি প্রতিষ্ঠানকে আমদানির অনুমতি দেয়। যদিও এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব বাজারে দেখা যায়নি।
সুতরাং কারা চালের মজুদ করে বাজার অস্থিতিশীল করছে, তাদের খুঁজে বের করতে হবে। এই বিশেষ গোষ্ঠীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হলে সিন্ডিকেটের সদস্যরা অন্যান্য নিত্যপণ্যের বাজারেও অস্থিরতা সৃষ্টি করবে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh