
গ্রাফিক্স: সাম্প্রতিক দেশকাল
দেশের অর্থনীতিতে ব্যাংকিং সেক্টর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ। কোনো কারণে ব্যাংক খাত বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে, সেই দেশের অর্থনীতি সংকটে পড়তে বাধ্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, বহু বছর ধরেই আমাদের দেশের ব্যাংকিং সেক্টর নানা সমস্যায় ধুঁকছে; যার মধ্যে অন্যতম খেলাপি ঋণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রথমবারের মতো খেলাপি ঋণ দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিসংখ্যান গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক কেলেঙ্কারি ও অনিয়মের শিকার হওয়া ব্যাংক সেক্টরের নাজুক অবস্থাকে তুলে ধরেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় খেলাপি ঋণের প্রকৃত তথ্য আড়াল করে কমিয়ে দেখানো হতো। এখন সব তথ্য প্রকাশের চেষ্টা করায় দ্রুতগতিতে বেড়ে যাচ্ছে খেলাপি ঋণের অঙ্ক। একই সঙ্গে গত আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে ব্যাংক থেকে
নামে-বেনামে বের করে নেওয়া ঋণ এখন খেলাপি হচ্ছে। ফলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক থেকে বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশই খেলাপি হয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব মিলে ৯ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৯ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির হিসাব অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণ এখন ছয় লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা, দুর্দশাগ্রস্ত এই ঋণ সাত লাখ কোটি টাকায় ঠেকতে পারে।
এমন একসময়ে এইসব চিত্র সামনে আসছে, যখন আইএমএফ খেলাপি ঋণ কমানোর শর্ত দিয়েছে। এ অবস্থায় খেলাপি হওয়া ঋণের অর্থ যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধারে তৎপরতা চালানো উচিত। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে নতুন কোনো খেলাপি যাতে সৃষ্টি না হয়।