অনিয়মে জর্জরিত রেল খাত

গণপরিবহনের সবচেয়ে সুবিধাজনক ও কার্যকর মাধ্যম হতে পারত যে মাধ্যমটি, সেই রেল পরিবহন আজ ভুগছে নানা সমস্যায়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে রেলের উন্নয়নে এক লাখ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। লোকসানের পাশাপাশি কমেছে রেলওয়ের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। ফলে সরকারের বিনিয়োগ করা অর্থ ফেরত আসা তো দূরের কথা, ট্রেনের পরিচালন খরচের অর্ধেকও তুলতে পারছে না সংস্থাটি।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অন্যতম সমস্যা ট্রেন সময়মতো পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়া। দেশে নতুন নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু তার সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন ইঞ্জিন কেনা হয়নি। চলতি পথে ট্রেন বারবার বিকল হয়ে যায়, কারণ ইঞ্জিনগুলো অনেক পুরোনো। নতুন কেনা ইঞ্জিনও বিকল হচ্ছে। রেলওয়ের হিসাবে, ২০২৩ সালে ২৭৩ বার চলন্ত অবস্থায় ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রেন বন্ধ হয়েছে। এর আগের বছর, ২০২২ সালে সংখ্যাটি ছিল ২০৩ বার। ২০২৪ সালে চলতি পথে বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রেনের সংখ্যা আরো বেশি।জানা যায়, দেশে বর্তমানে থাকা ৩০৬টি ইঞ্জিনের মধ্যে ১১টি দীর্ঘদিন ধরেই বিকল। বাকি ২৯৫টি ইঞ্জিনের মধ্যে ২৮-৩০ শতাংশ পালাক্রমে মেরামতে থাকে। কার্যত নিয়মিত ব্যবহারের জন্য পাওয়া যায় ২০০টির মতো ইঞ্জিন। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের পরও রেলওয়ের এই দৈন্যদশা প্রমাণ করে, বরাদ্দকৃত অর্থ সঠিক খাতে ব্যবহৃত না হওয়ার বিষয়টি। 

অতি সম্প্রতি দুদকের এক তদন্তেও শতকোটি টাকা হরিলুটের প্রমাণ মিলেছে। শুধু কেনাকাটাতেই নয়, রেলের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নেও ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। দুর্নীতির কারণে প্রায় প্রতিটি প্রকল্পের খরচ দ্বিগুণ এমনকি ১০ গুণও বেড়েছে।

তাই এখন প্রয়োজন এসব দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া। পাশাপাশি অতিরিক্ত খরচ কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং আয় বৃদ্ধি ও ব্যয় সংকোচন নীতি অবলম্বন করা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh