তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ: কোম্পানির গোয়েবলসীয় প্রচারণা

তামাক জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি ক্ষতিকর পণ্য। এটি নিয়ে বিতর্ক করার অবকাশ নেই।২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য যখনই কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়; তখনই তামাক কোম্পানির গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। তারা বিভিন্ন ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়। সরকার ও নীতিনির্ধারকদেরকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করার জন্য নানা প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়।

তার মধ্যে একটি অন্যতম প্রচেষ্টা থাকে গণমাধ্যমে তাদের অনুগত কিছু সংখ্যক সংবাদ কর্মী ও বুদ্ধিজীবীদের দিয়ে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করা। এর মাধ্যমে সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগ ও পদক্ষেপকে প্রশ্নবিদ্ধ করে নেতিবাচক জনমত গঠনে ভূমিকা পালন করে।

আইন সংশোধনী প্রস্তাবনাকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে তারা জোরেসোরে কয়েকটি বিষয়ে আওয়াজ তুলছে। এর মধ্যে একটি, স্টেকহোল্ডারদের মতামত গ্রহণ না করে মন্ত্রণালয় আইন সংশোধনের খসড়া প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছে। এই বাদ পড়া স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে রয়েছে তামাক কোম্পানি ও তাদের অনুগত তথাকথিত কিছু ব্যবসায়ী সংগঠন।

তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে জনস্বাস্থ্য রক্ষার সাথে সম্পর্কিত। জনস্বাস্থ্যকে রক্ষার স্বার্থেই দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি প্রণয়ন হয়েছে এবং সময়ের দাবিতে আইনটিকে আরো বেশি শক্তিশালী করার জন্য খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। তামাক কোম্পানি প্রত্যক্ষভাবে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় ক্ষতির কারণ।

সেক্ষেত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন এবং তামাক কোম্পানির ব্যবহারিক অবস্থান একে অপরের বিপরীতে। উভয়ের স্বার্থ রক্ষাও বিপরীতমুখী। সেখানে কোন যুক্তিবলে তামাক কোম্পানি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রস্তাবনায় স্টেকহোল্ডার হিসেবে বিবেচিত হবে? তাদের স্টেকহোল্ডার হিসেবে বিবেচিত হওয়ার ন্যূনতম কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। 

ব্যাপারটি অনেকটা এমন, চুরি প্রতিরোধে মহল্লায় সভা আহ্বান করা হয়েছে। সেই সভায় মহল্লার সবাই উপস্থিত, মহল্লায় বসবাসকারী চোরও উপস্থিত। সবাই চুরি প্রতিরোধের জন্য নানা পরিকল্পনা উপস্থাপন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রায় চূড়ান্ত। তখন সভায় উপস্থিত চোরের প্রতিনিধি গলা উঁচু করে বলছে, ‘আপনারা তো সব পথই বন্ধ করে ফেলছেন, একটা পথ তো খুলে রাখুন যাতে আমরা চুরি করাটা অব্যহত রাখতে পারি।

তামাক কোম্পানির আবদারটিও আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে এমন; ওনাদেরকে স্টেকহোল্ডার বিবেচনায় নিয়ে কথা শুনতে হবে। তারা প্রস্তাবিত আইনের সংশোধনীর বিভিন্ন ধারা বিরোধিতা করে প্রস্তাবনা দেওয়ার সুযোগ চায়। যাতে জনস্বাস্থ্য ক্ষতি করার জন্য তাদের সুযোগ নিশ্চিত করা হয়, তাদের জনস্বাস্থ্য ক্ষতির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত আইন সংশোধনের মাধ্যমে সেটি বাধাগ্রস্ত না হয়।

কী চমৎকার আবদার তামাক কোম্পানির! এই আবদারকে ন্যায্যতা দেবার জন্য একপক্ষ নির্লজ্জভাবে তামাক কোম্পানির পক্ষে কাজ করছে দেশের জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়ে। এটা তামাক কোম্পানির চরম দুঃসাহস। এভাবেই তারা প্রতিনিয়তো এফসিটিসির আর্টিক্যাল ৫.৩ ভঙ্গ করে তাদের অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজের জন্য তারা কিছু অনুগত সঙ্গী-সাথীও জোগাড় করেছে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার Guidelines for implementation of Article 5.3 এ বলা হয়েছে, ‘The purpose of these guidelines is to ensure that efforts to protect tobacco control from commercial and other vested interests of the tobacco industry are comprehensive and effective. Parties should implement measures in all branches of government that may have an interest in, or the capacity to, affect public health policies with respect to tobacco control (decision FCTC/COP3(7))’.

বাংলাদেশ এফসিটিসিতে অনুস্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ। সেই অবস্থান থেকে উল্লেখিত গাইডলাইন অনুসারে, বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অথবা তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্য যেকোনো ধরনের কৌশলপত্র নির্ধারণে তামাক কোম্পানির মতামত দেওয়ার ন্যূনতম কোনো সুযোগ নেই। তাদের মতামত গ্রহণ করা অর্থ, এফসিটিসির আর্টিক্যাল ৫.৩ এর ধারা ভঙ্গ করা। সঙ্গত কারণেই আমাদের সরকার সেটি করতে পারে না।

অন্যদিকে তামাক কোম্পানির স্বার্থরক্ষাকারী তথাকথিত কিছু ব্যবসায়ী সংগঠন কোম্পানির সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রস্তাবিত আইন সংশোধনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য অযৌক্তিক বিতর্ক উপস্থাপন করছে। এমন শুধু বাংলাদেশেই নয়; সারাবিশ্বব্যাপী কোম্পানির স্বার্থ রক্ষার জন্য যারা তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে তাদের কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এ ধরনের সংগঠন কাজ করে থাকে।

সংশোধিত আইনের খসড়া প্রস্তাবনায় লাইসেন্সিং ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হওয়াতে কোম্পানির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। এটি নতুন বিষয় নয়। ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকাতে লাইসেন্সিং ব্যবস্থাটি যখন যুক্ত করা হয় তখনই তাদের অপতৎপরতা শুরু হয় এটি বাতিলের জন্য। লাইসেন্সিং বলতে আমরা কী বুঝি? লাইসেন্সিং ব্যবস্থা কার্যকর করা অর্থ শুধুমাত্র বৈধতা প্রদান নয়। তারচেয়েও বেশি, নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। Investopedia তে বলা হচ্ছে, `Such a license is a mechanism for government to oversee and in many cases tax, certain business operators. Liquor is an example of this type’.

তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা ইউরোপ, আমেরিকা এমনকি পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের অনেক রাজ্যে, নেপালেও অনেক পূর্বে চালু হয়েছে। বর্তমানে ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, অষ্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে। এর কার্যকারিতার প্রভাব এরইমধ্যে  সমস্ত দেশে দেখা যাচ্ছে। BMJ জার্নালে প্রকাশিত তথ্যানুসারে, লাইসেন্সিং ব্যবস্থার কারণে ফিনল্যান্ডে পয়েন্ট অব সেলের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ২৮%, ক্যালির্ফোনিয়া কাউন্টিতে ৩১% এবং হাঙ্গেরিতে ৮৩% অস্ট্রেলিয়াতে লাইসেন্স ফি ১৩ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২০০ ডলার করায় খুচরা বিক্রেতার সংখ্যা এক ধাক্কায় কমে গেছে ২৩.% যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোতে %, ফিলাডেলফিয়াতে .% হ্রাস পেয়েছে।

তামাক নিয়ন্ত্রণের একটি অন্যতম লক্ষ্য এর সহজপ্রাপ্যতা হ্রাস করা। তার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ব্যবহার কমিয়ে আনা। লাইসেন্সিং ব্যবস্থা এই উদ্দেশ্য পূরণে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখছে সেটি প্রমাণিত। এরইমধ্যে দেশেরও বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হতে তামাক বিক্রেতারা লাইসেন্স গ্রহণ করে ব্যবসা করছে। ঝিনাইদহ, হরিনাকুন্ডু, মাগুরা, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল সাতক্ষীরাসহ মনোহরদী, সিংড়া সিঙ্গাইর এর মতো বিভিন্ন পৌরসভা শুরু করেছে গত তিন অর্থ বছর থেকেই।

যারা লাইসেন্স গ্রহণ করেছে তারাই বৈধভাবে ব্যবসা করছে। বাংলাদেশকে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত করা এটি সরকারের এসডিজি- বাস্তবায়নের পরিকল্পনার একটি অংশ। আর সেটি বাস্তবায়নের জন্য এর ব্যবহার কমিয়ে আনা আবশ্যক। আর সেটির জন্য অন্যতম কার্যকর পদক্ষেপ লাইন্সেসিং ব্যবস্থা।

জাতীয় ক্ষুদ্র কুটির শিল্প সমিতির বরাতে প্রচার করা হচ্ছে, ১৫ লাখ নিম্ন আয়ের খুচরা বিক্রেতা আছে। এই তথ্যের কোনো সঠিকতা নেই। বলা হচ্ছে, লাইসেন্সিং ব্যবস্থা কার্যকর হলে এদের জীবন-জীবিকা বন্ধ হয়ে যাবে।

কী হাস্যকর যুক্তি! বাংলাদেশ হকার সংগ্রামপরিষদের মুখপত্র জাগো ছিন্নমূল” (সংখ্যা-, মার্চ ২০১১) প্রকাশিত একটি জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, ফেরিওয়ালা বা ভ্রাম্যমাণ হকারের মোট সংখ্যা লাখ ৯১ হাজার যার মধ্যে পান সিগারেট বিক্রেতা মাত্র ৭৯ হাজার ১০০ যা মোট হকারের ১০ শতাংশ।

এদের বক্তব্য অনুসারে মনে হয়, বাংলাদেশে ফেরি করে বিক্রি করার একমাত্র পণ্য সিগারেট। এটা ব্যতীত ফেরি করে অন্য কোনো পণ্য বিক্রি করে তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে না! লাইসেন্সিং ব্যবস্থা গত তিনবছর ধরে চলমান। যারা দ্বৈত লাইসেন্স গ্রহণ না করে তামাক বিক্রি করা ছেড়ে দিয়েছে তাদের কারো জীবন-জীবিকাই বন্ধ হয়ে যায়নি। যেটি হয়েছে সেটা হলো ঐ এলাকাগুলোতে সিগারেট বিক্রি কমে গেছে ছেড়ে দিয়েছে তাদের কারো জীবন-জীবিকাই বন্ধ হয়ে যায়নি। যেটি হয়েছে সেটা হলো ঐ এলাকাগুলোতে সিগারেট বিক্রি কমে গেছে।

আরে ভাই, সরকারের লক্ষ্যই তো তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রি কমিয়ে আনা। সেজন্যই তো আইন করে এই বিক্রিকে কঠিন করে আনা হচ্ছে যাতে সিগারেট বা অন্য তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করতে বিক্রেতা নিরুৎসাহিত বোধ করে। সিগারেটের পরিবর্তে অন্য কিছু বিক্রি করা শুরু করে। তার জন্য তো আর পৃথক লাইসেন্স নেওয়ার কথা বলেনি সরকার।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য বলছে, ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হওয়ার পর পরবর্তীকালে ২০০৫-০৬ এবং ২০০৬-০৭ অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং ৩৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। একই ভাবে ২০১৩ সালের সংশোধনীর পর পরবর্তীকালে ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ২৫ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং ৪৬ দশমিক ৫২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটিদ্য ইকোনমিক কস্ট অব টোবাকো ইউজ ইন বাংলাদেশঃ হেলথ কস্ট অ্যাপ্রোচ গবেষনায় পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, তামাক ব্যবহারের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে প্রায় লাখ ২৬ হাজার লোকের মৃত্যু ঘটেছে, যা সে বছরের মোট মৃত্যুর ১৩. শতাংশ। একই বছরে প্রায় ১৫ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত রোগে ভুগছিলেন এবং প্রায় ৬১ হাজার শিশু পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসার কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তামাক ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্যখাতে মোট ব্যয়ের পরিমাণ ছিলো প্রায় হাজার কোটি টাকা, যার ৭৬ শতাংশের খরচ মিটিয়েছে তামাক ব্যবহারকারীর পরিবার আর ২৪ শতাংশ খরচ এসেছে জনস্বাস্থ্য খাতের বাজেট থেকে, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে সরকারী ব্যয়ের প্রায় শতাংশ।

এছাড়াও, বিভিন্ন তামাক ব্যবহারজনিত অসুস্থতা এর কারণে ঘটে যাওয়া অকালমৃত্যুর ফলে বার্ষিক উৎপাদনশীলতা হ্রাসের পরিমাণ ছিল প্রায় ২২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ফলে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা (.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), যা সে বছরের মোট জিডিপির . শতাংশের সমান।

২০১৮ সালের দামের হিসেবে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপিতে তামাক খাতের মোট অবদান ছিল ২২ হাজার ৯০০ কোটি টাকা (in terms of household final consumption expenditure, private and public domestic investment and net export-পণ্য বিক্রি, সরকারি বেসরকারি বিনিয়োগ রপ্তানী অনুসারে) । যা এই খাতে অর্থনৈতিক ব্যয়, ৩০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকার চেয়ে হাজার ৬৫০ কোটি টাকা কম। অর্থাৎ, তামাক বাংলাদেশের ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ।

তামাক নিয়ন্ত্রণে ধূমপান তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ (সংশোধীত ২০১৩) এর সংশোধনী এখন সময়ের দাবি। সেই দাবি প্রতি সাড়া দিয়েই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নতুনভাবে আইনে যে সব সংশোধনী প্রস্তাবনা যুক্ত করেছে তা অত্যন্ত যুগোপযোগী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে এরইমধ্যে এই ধারাগুলো সংযুক্ত হয়েছে। এবং তারা এর সুফল পাচ্ছে।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের লক্ষ্য তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষা করা না; জনস্বাস্থ্যকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করা। আর তামাক কোম্পানির লক্ষ্য তামাজাত দ্রব্যের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি, বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা; চূড়ান্তভাবে যা জনস্বাস্থ্যকে মারাত্বক ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।

তামাক কোম্পানি তার অনুগতদের দিয়ে আইনের সংশোধন বিষয়ে যে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে তার উদ্দেশ্যই হলো আইনের নতুন ধারাগুলো যেন যুক্ত না হয়। কারণ এই ধারাগুলো যুক্ত হলে তামাক কোম্পানির বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। লাইসেন্সিং ধারাটি তার মধ্যে অন্যতম। সে কারণে এই বিষয়টি নিয়ে তাদের বিরোধিতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে।

আমাদের আগামী প্রজন্মকে তামাকের সর্বনাশা ছোবল থেকে রক্ষা করার জন্য প্রত্যেক নাগরিকের নাগরিক দায়িত্ব তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীর প্রস্তাবনাকে সমর্থন করা এবং তামাক কোম্পানির কূটকৌশলকে প্রতিহত করা।

লেখক: আবু নাসের অনীক, উন্নয়ন কর্মী।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh