
আষাঢ়ী লতা। ছবি: সঞ্জয় সরকার
আষাঢ়ী লতা নামের পাশাপাশি একে কালকেরা, বাঘানখী, বাগানৈম আষারিন, আষাঢ়ীয়া, কালোকোঁয়া ও উল্টো কাঁটা নামেও ডাকা হয়। আষাঢ় মাসের সঙ্গে এই গাছের সম্পর্ক কী তা বোঝা মুশকিল। কেননা শীতের শেষে এই গাছে ফুল আসতে শুরু করে। বসন্ত, এমনকি গ্রীষ্মেও এই ফুলের দেখা পাওয়া যায়। এর ইংরেজি নাম : Indian Caper, Ceylon Caper. ও বৈজ্ঞানিক নাম : Capparis zeylanica.
এটি লতাজাতীয় গাছ, সারা গাছই কাঁটা যুক্ত। কাঁটাগুলো আঁকশি হিসেবে কাজ করে। সাধারণত বড় গাছ জড়িয়ে ঝোপের মতো এটি বেড়ে ওঠে। বাংলাদেশে একসময় সর্বত্র দেখা যেত, বর্তমানে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অধিক দেখা যায়। নানা ঔষধি গুণ থাকায় এটি ডায়রিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। মৌমাছি ও ভ্রমর সারাক্ষণ গুনগুন করে, যা থেকে এই ফুলে মধুর উপস্থিতি সহজে চিহ্নিত করা যায়। এটি একটি দেশীয় লতা। আমাদের গ্রামীণ ঝোপঝাড়ে বেড়ে উঠতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, চীনেও এ লতা জন্মে। ফুলের রঙ গোলাপি-সাদা। দেখতে অনেকটা সেমাইয়ের মতো তন্তু আকৃতির। ফুলে দারুণ সুগন্ধ রয়েছে। উদ্ভিদ বহু শাখাযুক্ত ঝোপময়। ২ থেকে ৮ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। কাণ্ডে বাঁকানো কাঁটা থাকে, যা ধারকে আটকে রাখতে সাহায্য করে। পাতা ২ দশমিক ৫ থেকে ৭ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। পাকা ফল খাওয়া যায়। কচি ফল তরকারি হিসেবে খাওয়া হয় কোথাও কোথাও। সাধারণত বীজের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি হয়। বলধা গার্ডেনে ৭০ বছর আগে লাগানো দুটি ঝোপ রয়েছে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তথা বরিশাল, পটুয়াখালীতে হরহামেশাই এই লতা দেখা যায়। আধুনিক সভ্যতার আগ্রাসী মনোভাবের কারণে এসব বুনোলতা হারিয়ে যাচ্ছে। এসব সংরক্ষণ না করলে ভবিষ্যতে পরিবেশের বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠবে।