
কেশরদাম। ছবি: সঞ্জয় সরকার
সাধারণত যেসব উদ্ভিদের শেকড়বাকড় স্থলে উৎপন্ন হয় কিন্তু এর কাণ্ড ও শাখা-প্রশাখা জলে বিস্তার লাভ করে এমন উদ্ভিদকে উভচর উদ্ভিদ বলা হয়। কেশরদাম তেমনি একটি উভচর উদ্ভিদ।
আমাদের দেশে আগাছা হিসেবে কেশরদাম চাষের জমিতে জন্মে থাকে। এটি পরিপূর্ণ লতানো উদ্ভিদ নয়। কেননা এটি লতার মতো ভূমিতে আনুভূমিক বেড়ে উঠলেও কখনো কখনো দণ্ডায়মান অবস্থাতেও দেখা যায়। বাংলাদেশের নিচু ধানি জমিতে অথবা স্বল্প ডোবা জমিতে বা নালায় এদের হতে দেখা যায়। বর্ষাকালেই এই ফুল ফুটতে শুরু করে। বিশেষ করে শ্রাবণ-ভাদ্র মাসের দিকে এই ফুল সহজে মানুষের নজর কাড়ে। প্রত্যেক ডালের ডগায় সাদা ৪-৫টি পাপড়িবিশিষ্ট ফুল ফুটে থাকে। ফুলের পাপড়ি বেশ নরম ও হালকা। ফুলের ঠিক মধ্য অংশ হালকা হলুদ। ফুলের মাঝখানে ৪-৮টি পুংকেশর থাকে। কখনো কখনো পুংকেশরের গোড়ায় মধুগ্রন্থি দেখা যায়।
সাধারণত বীজ থেকে বংশবিস্তার হয়। ফল ও বীজাধার দেখতে বেলনাকৃতির। বীজ বাদামি বা ফিকে বাদামি। কাণ্ড সবুজ বা হালকা খয়েরি, পাতা সবুজ। কোনো কোনো অঞ্চলে একে শাক হিসেবে খাওয়া হয়। কোথাও কোথাও সালাদ হিসেবে এটি বেশ জনপ্রিয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ludwigia adscendens. চোখের ভাইরাসজনিত চিকিৎসায় এই গাছের রস ব্যবহার করা হয়। আমাশয়, জ্বর, গ্যাস্ট্রিকে এটি দারুণ উপকারী। কখনো কখনো ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। একে মালচা ও পানিডগা নামেও ডাকা হয়। এটি আগাছা হলেও ইনডোর উদ্ভিদ হিসেবে ইদানীং উদ্ভিদপ্রেমীদের নজর কেড়েছে। তাই চাইলে একে টবে রোপণ করেও ফুল ফোটানো সম্ভব।