‘জলবায়ু পরিবর্তনের লড়াইটা এখন পুরোপুরি রাজনৈতিক’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ২৩:১৬

বক্তব্য দিচ্ছেন ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ। মঞ্চে বসা (বাঁ থেকে) আবু নাসের অনীক, আমিনুল ইসলাম বকুল, মাহা মির্জা ও অঙ্কন চাকমা। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
জলবায়ু পরিবর্তনের লড়াইটা এখন পুরোপুরি রাজনৈতিক বলে মন্তব্য করেছেন সাম্প্রতিক দেশকাল পত্রিকার সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি যে আমাদের দেশে যারা রাষ্ট্র চালান তারা পুঁজিপতি, তারা বাইরের পুঁজিটা এখানে নিয়ে আসতে চান। জলবায়ু পরিবর্তন একটি প্রাকৃতিক বিষয়, কিন্তু বর্তমানে এটি রাজনৈতিক চরিত্র ধারণ করেছে। বড় বড় রাষ্ট্রগুলো তাদের নীতি আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। তারা জলবায়ুর ক্ষতি করে, আর আমাদের তার ফল ভোগ করতে হয়। আবার তারা কিছু ফান্ড পাঠায় জলবায়ুর নামে, যাতে আমরা মানিয়ে নিতে পারি (জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে)। তবে মজার ব্যপার হচ্ছে, তারা যেই পরিমান ফান্ড পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয়, তার চেয়েও অনেক কম ফান্ড পাঠায়। এই জলবায়ু পরিবর্তনের লড়াইটা এখন পুরোপুরি রাজনৈতিক। চূড়ান্ত ধাপে এই পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে জলবায়ু সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
জাতীয় যুব পরিষদের উদ্যোগে ‘পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থায় জলবায়ু পরিবর্তন, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন তিনি।
আজ শুক্রবার (১০ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর পরীবাগে অবস্থিত সাংস্কৃতিক বিকাশ কেন্দ্রে এই আলোচনা সভা আয়োজিত হয়।
সভায় আরও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- গবেষক ও অর্থনীতিবিদ মাহা মির্জা, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক অঙ্কন চাকমা। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক একেএম মাকসুদ।
সভায় বক্তারা, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক দিক ও এ সংকট মোকাবেলায় সকলের সম্মিলিত প্রয়াস এবং জলবায়ু তহবিলের ব্যয়ের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতা ও স্বচ্ছতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
অর্থনীতিবিদ ও গবেষক মাহা মির্জা তার আলোচনায় বলেন, ‘টিআইবি বলছে, আমাদের দেশের জলবায়ু তহবিলের ৭৫% টাকা যাচ্ছে তা ট্র্যাক করা যায় না। এই যে শাহবাগে ফুটওভার ব্রিজ তৈরি হল, তা জলবায়ু তহবিলের টাকায়। আমি জানি না এটার সাথে জলবায়ুর কি সম্পর্ক।’
মাহা মির্জা আরও বলেন, ‘২০১০ সালের দিকে দেশে জলবায়ু তহবিলের নামে প্রচুর ফান্ড আসতে শুরু করল। এতে যেটা হল, আমাদের একাডেমিয়াতে এনজিওকরণ হয়ে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচুর শিক্ষক ও ছাত্র শুধু জলবায়ু নিয়ে গবেষণা করতে চায়। উত্তরাঞ্চলের যে নদীর সমস্যা, এটার কারণ হচ্ছে ভারতের শতশত বাঁধ। ফলে সেখানে কৃষির উৎপাদন কমে গেছে, এর ফলে সেখান থেকে প্রচুর মাইগ্রেশন হচ্ছে। কিন্তু যারা ফান্ডিং করেন জলবায়ুতে তারা এ বিষয় নিয়ে কাজ করতে চান না।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বকুল, সঞ্চালনা করেন জতীয় যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের অনীক।