
সুজন হোসেন। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের ২০২৪-২৫ মৌসুমের শিরোপা জিতেছে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ইতিহাস আর ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ ক্লাবটির প্রথম পেশাদার লিগ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন সুজন হোসেন। ২৮ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক ২০২০ সাল থেকে মোহামেডানে আছেন। পরিণত হয়েছেন সাদা-কালো শিবিরের আস্থার প্রতীকে। নিজের ক্যারিয়ার আর মোহামেডানের সাফল্য নিয়ে কথা বলেছেন সুজন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আহসান হাবীব সুমন...
প্রথমবারের মতো পেশাদার লিগের শিরোপা জয় করল মোহামেডান। কেমন লাগছে?
সুজন: এই অনুভতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমরা সবাই এখনো একটা ঘোরের মধ্যে আছি।
মোহামেডান লিগ শিরোপা জিতবে, আশা করেছিলেন?
সুজন: অবশ্যই। মোহামেডানের গত ২-৩ মৌসুমের পারফরম্যান্স দেখুন। ২০২২-২৩ মৌসুমে ফেডারেশন কাপ জিতেছি। ২০২৩-২৪ মৌসুমে রানার্সআপ ছিলাম তিনটি টুর্নামেন্টে। চলতি মৌসুমের শুরুতে চ্যালেঞ্জ কাপের শিরোপা লড়াইয়ে এগিয়ে থেকেও হেরেছি, যা ছিল দুর্ভাগ্যজনক। প্রিমিয়ার লিগের শুরুতেই আমরা বসুন্ধরা কিংস আর আবাহনীকে হারিয়ে দিলাম। তখন থেকেই আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা পেরেছি মোহামেডানকে লিগ শিরোপা উপহার দিতে।
মোহামেডানের শিরোপা জয়ের রহস্য কী?
সুজন: আলাদা কোনো রহস্য নেই। ফুটবল টিম গেম। এখানে সবাইকে এফোর্ট দিতে হয়। কোচ, খেলোয়াড়, অফিশিয়াল-প্রত্যেকের কঠোর পরিশ্রমে সাফল্য আসে। মোহামেডানের সাফল্যের পেছনেও প্রত্যেক খেলোয়াড়ের অবদান আছে। কোচ আলফাজ ভাই, কানন ভাই, সেন্টু ভাই, ম্যানেজার নকীব ভাইসহ সবাই কঠোর পরিশ্রম করেছেন। টিম অফিশিয়ালদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। এ ছাড়া মোহামেডানের সমর্থকরা নিয়মিত উৎসাহ দিয়ে গেছে। তাদের অবদানও কম নয়।
নিজেকে কোনো কৃতিত্ব দেবেন না?
সুজন: নিজেকে আলাদা করে কৃতিত্ব দেওয়ার কিছু নেই। কোচ আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। আমি চেষ্টা করেছি আস্থার প্রতিদান দিতে। দলের সাফল্যে যদি কোনো অবদান থাকে, তবে আলহামদুলিল্লাহ।
২০২৪-২৫ পেশাদার লিগে কোন ম্যাচটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে?
সুজন: কুমিল্লায় ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি খুব কঠিন ছিল। দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা সময় ১০ জন নিয়ে খেলতে হয়েছিল। আমরা চাপে ছিলাম। কিন্তু ভেঙে পড়িনি। আমাকেও বেশ কয়েকবার কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। ম্যাচটি হেরে গেলে হয়তো আমরা বিপদে পড়তাম। কারণ ঢাকা আবাহনী ছিল পয়েন্ট টেবিলে আমাদের কাছাকাছি। তাই জিততে না পারলেও ম্যাচ ড্র হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছিলাম।
জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখেন না?
সুজন: জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন প্রতিটা খেলোয়াড়ের থাকে। আমারও আছে। আমি এরই মধ্যে জাতীয় দলের স্কোয়াডে ডাক পেয়েছি। অস্ট্রেলিয়া, লেবানন, ভুটান ও ভারতের বিপক্ষে বেঞ্চে ছিলাম। যদিও দেশের হয়ে খেলা হয়নি। তবে আল্লাহ যদি চায় একদিন দেশের প্রতিনিধিত্বও করব।
দেশের ফুটবলে প্রবাসী খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?
সুজন: আমি চাই দেশের ফুটবলের উন্নতি। দলকে শক্তিশালী করতে প্রবাসী ফুটবলার দলে নিতে সমস্যা দেখি না। তারা প্রবাসী হলেও বাংলাদেশি।
ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন কী ছোটবেলা থেকেই দেখেছেন?
সুজন: আমি ঢাকার আরামবাগে বেড়ে উঠেছি। ছোটবেলা থেকে ফুটবল খেলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছি। ঢাকা ইউনাইটেড আমার প্রথম ক্লাব, ২০১১ সালে যোগ দেই। এরপর ২০১৫ সালে মোহামেডানে যোগ দিই। যদিও ২০১৬ সালেই আমি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে চলে যাই। তিন বছর সেখানে কাটিয়ে পুনরায় ফিরে আসি মোহামেডানে। আমি সব সময়েই স্বপ্ন দেখেছি, মোহামেডান-আবাহনীর মতো বড় দলে খেলার।
দেশে ও বিদেশে আপনার প্রিয় খেলোয়াড় কে?
সুজন: আন্তর্জাতিক ফুটবলে আমার প্রিয় খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। আর বাংলাদেশে আমার আদর্শ জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক আমিনুল হক ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে।
সুজন: ধন্যবাদ আপনাকেও।