
পবিত্র ঈদুল আজহার মাত্র কয়েক দিন আগে পেশ করা হলো ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট। সবার প্রত্যাশা ছিল একটি স্বস্তির, ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবমুখী বাজেট আসবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট পেশ করেছেন, তা আসলে পুরোনো দৃষ্টিভঙ্গিরই পুনরাবৃত্তি। প্রস্তাবিত বাজেটে অনেক ক্ষেত্রেই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষকে চাপের মুখে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ফলে এবারের ঈদ শুধু আনন্দের নয়, বাস্তবতার কঠিন পরীক্ষাও বটে।
জনগণের একটি বড় অংশ যখন আয়হীন, বেকারত্ব বাড়ছে, দ্রব্যমূল্য লাগাম ছাড়া এবং বৈদেশিক রিজার্ভ চাপের মধ্যে, তখন বাজেট বক্তৃতায় জনগণের আয় বাড়বে কীভাবে, কর্মসংস্থান কোথা থেকে আসবে, দরিদ্রতা কীভাবে কমবে, সেসবের কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা নেই। বিভিন্ন খাতে কিছু কমবেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু নীতিগত উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যায় না। দুর্বল রাজস্ব আদায় কাঠামো, অকার্যকর ভর্তুকি ব্যবস্থাপনা এবং অব্যবহৃত উন্নয়ন ব্যয়Ñএসবের সংস্কারে কোনো উদ্যোগই নেই। বরং প্রতিবারের মতো এবারও উন্নয়ন ব্যয় ও সামাজিক সুরক্ষার কথা বলা হলেও বাস্তবায়নের দক্ষতা ও স্বচ্ছতাতার নিশ্চয়তা নেই। ফলে জনগণের মন এখন একদিকে কোরবানির প্রস্তুতি, অন্যদিকে নতুন বাজেটের প্রভাব নিয়ে চিন্তিত।
কোরবানির পশুর হাটেও এ বছর খরচ বেড়েছে। পরিবহন খরচ, শুল্ক, পশুর খাদ্য এবং আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে কোরবানির পশু কেনা এখন অনেকের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। মানুষ এখন প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তব সমাধান চায়। বাজেট সেই প্রত্যাশার পিঠে এক নতুন বোঝা না হয়Ñএটাই আমাদের চাওয়া। আসন্ন ঈদ হোক নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক, পশু কোরবানি হোক পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব, ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সবার ঘরে।