Logo
×

Follow Us

অন্যান্য

শ্রম সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট, প্রত্যাশা এবং দায়

Icon

রাজেকুজ্জামান রতন

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ১৫:৫১

শ্রম সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট, প্রত্যাশা এবং দায়

গণ-অভ্যুত্থানের পর শ্রমজীবীদের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে শ্রম সংস্কার কমিশন। এই কমিশনের ৪৬০ পৃষ্ঠার সুপারিশগুলো যেন সরকারের কাছে নীতি, নিয়োগকারীদের কাছে বাধ্যবাধকতা এবং শ্রমিকদের জন্য দরকষাকষির দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়, সেই প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর সংক্ষিপ্ত রূপ থেকেই মূল রিপোর্টের চিত্রটা অনুমান করা যাবে।

যেমন- ১. সকল শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতিদান : দেশের সাত কোটি ৪০ লাখ শ্রমশক্তি যারা প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, কৃষি, গৃহভিত্তিক, স্বনিয়োজিত বিভিন্নভাবে শ্রম দিচ্ছে তাদের জন্য রাষ্ট্র শ্রম আইনের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। সেই লক্ষ্যে নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র, নিরবচ্ছিন্ন কাজ এবং আয়ের নিশ্চয়তা, মর্যাদাপূর্ণ ও শোভন কর্ম পরিবেশ, চাকরির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, অস্থায়ী ও এজেন্সিনির্ভর নিয়োগের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। শ্রমিকের নিজের ও পরিবারের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন উপযোগী ন্যায্য মজুরি (লিভিং ওয়েজ), উন্নয়নে ন্যায্য অংশীদারি ও হিস্যা প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যেকের জন্য নিরাপদ কাজ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ, দুর্ঘটনায় যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং নিজের ও পরিবারের সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার থাকতে হবে। প্রত্যেকেরই অবসর, অক্ষমতা, অসুস্থতা, মাতৃত্বকালীন বা যেকোনো প্রতিকূল অবস্থায় সামাজিক নিরাপত্তা স্কিমে অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা থাকতে হবে। প্রত্যেকের অধিকার সুরক্ষা ও ন্যায্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য সংগঠিত হওয়া, সমষ্টিগতভাবে প্রতিনিধিত্ব করা ও অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ জানানো, প্রতিকার ও ন্যায়বিচার পাওয়ার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, শ্রম শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তন আইআরআই, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ ইত্যাকার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান) সব প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহি, গণতান্ত্রিক চর্চা, স্বচ্ছতা ও তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ৭. স্থায়ী শ্রম কমিশন গঠন : জবাবদিহিমূলক শ্রম প্রশাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতের লক্ষ্যে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে স্থায়ী শ্রম কমিশন গঠন করতে হবে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি ‘জাতীয় সামাজিক সংলাপ ফোরাম’ গঠনেরও প্রস্তাব কর হয়েছে। এই অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে সরকার দেশের সংবিধান, আইএলও কনভেনশন ও কর্মক্ষেত্রে মৌলিক নীতিমালা ও অধিকার সংক্রান্ত্র ঘোষণা, শোভন কাজের মানদণ্ড এবং মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার আলোকে, যথাযথ ত্রিপক্ষীয় পদ্ধতি অনুসরণ করে বর্তমান শ্রম আইনের প্রয়োজনীয় এবং মৌলিক সংস্কার অথবা একাধিক আইন প্রণয়ন করবে। 

২. মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় এবং খাতভিত্তিক মজুরি নিশ্চিতকরণ : মজুরি কোনো দয়া বা করুণা নয়, শ্রমিকের শ্রমের ফলে অর্জিত অধিকার। এই বিবেচনাকে সামনে রেখে শ্রমিক ও তার পরিবারের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন উপযোগী মজুরির অধিকার নিশ্চিত করতে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হবে। একই সঙ্গে মজুরি নির্ধারণ পদ্ধতি উন্নয়ন, মজুরি বোর্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কাঠামোগত সংস্কারে স্থায়ী মজুরি কমিশন গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য ও মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় রেখে জাতীয় ও খাতভিত্তিক মজুরি তিন বছর পর পর মূল্যায়নের মাধ্যমে বৃদ্ধি এবং মর্যাদাপূর্ণ মানদণ্ড নির্ধারণের কথা বলেছে কমিশন।

 ৩. নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ : শ্রমিকের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে খাত ও পেশাভিত্তিক সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। অবহেলাজনিত বা কর্মপরিবেশের ঝুঁকিতে শ্রমিকের মৃত্যু ও অক্ষমতার ক্ষেত্রে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতে হাইকোর্ট নির্ধারিত কমিটির পর্যালোচনা ও আইএলও কনভেনশন বিবেচনায় নিয়ে ক্ষতিপূরণ মানদণ্ড তৈরি করতে হবে। 

৪. শ্রমিকের নিবন্ধন ও তথ্যভান্ডার গঠন : অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত, স্বনিয়োজিতসহ সব শ্রমিকের পেশাগত ও আইনি সুরক্ষা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতে রাষ্ট্র শ্রমিকের স্বীকৃতি, পরিচয়পত্র প্রদান ও নিবন্ধনের ব্যবস্থা নেবে। একটি ‘জাতীয় শ্রম তথ্যভান্ডার’ গড়ে তুলতে হবে। 

৫. সংগঠন ও দরকষাকষি অধিকার : সাংবিধানিক অঙ্গীকার অনুযায়ী সংগঠিত হওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়ন করার বাধা অপসারণ ও দরকষাকষির ক্ষেত্রে অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক কাঠামো নিশ্চিত করতে হবে। 

৬. জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিতকরণ : শ্রম মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামোর পুনর্বিন্যাস, সক্ষমতা এবং সমন্বয় জোরদারের লক্ষ্যে শ্রমিক ও শ্রম খাতসম্পর্কিত সরকারি (শ্রম অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, শ্রম শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তন আইআরআই, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ ইত্যাকার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান) সব প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহি, গণতান্ত্রিক চর্চা, স্বচ্ছতা ও তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

 ৭. স্থায়ী শ্রম কমিশন গঠন : জবাবদিহিমূলক শ্রম প্রশাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতের লক্ষ্যে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে স্থায়ী শ্রম কমিশন গঠন করতে হবে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি ‘জাতীয় সামাজিক সংলাপ ফোরাম’ গঠনেরও প্রস্তাব কর হয়েছে।

৮. কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণ : বেকারত্ব রোধ, দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের প্রসারে কার্যকরী উদ্যোগ রাষ্ট্র গ্রহণ করবে। একই সঙ্গে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরিতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পথনকশা তৈরি করবে। 

৯. সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা : শ্রমিকের সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার প্রাপ্তির (কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, মৃত্যু, কর্ম অক্ষমতা, অসুস্থতা-অবসর, মাতৃত্বকালীন সুবিধা বা যেকোনো প্রতিকূল অবস্থা) সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইএলও এর জীবনচক্রভিত্তিক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রবর্তন, সামাজিক বীমা ব্যবস্থা প্রবর্তনে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 

১০. সম-অধিকার নিশ্চিত ও সহিংসতা ও বৈষম্য দূরীকরণ : নারী-পুরুষ, অন্যান্য লিঙ্গ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠীভেদে মজুরি, ট্রেড ইউনিয়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াসহ শ্রম খাতের সর্বত্র সম-অধিকার নিশ্চিতে কার্যক্রম গ্রহণ করবে। পাহাড়ে-সমতলে আদিবাসী ও জাতিসত্তাগুলোর শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। 

১১. যৌন হয়রানিসহ সব ধরনের হয়রানি ও সহিংসতা প্রতিরোধ : যৌন হয়রানিসহ সব ধরনের হয়রানি ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্র বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সব কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন ও সহিংসতাবিরোধী নীতিমালা, অভিযোগ সেল ও নিষ্পত্তি কমিটি গঠন করা। আইএলও ১৯০ কনভেনশন সমর্থন করতে হবে।

 ১২. সর্বজনীন মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা : সব নারী শ্রমিকের মাতৃত্বকালীন ছুটি সবেতনে ছয় মাস করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে সরকারও সহায়তা প্রদান করবে। 

১৩. শিশু-কিশোর ও জবরদস্তিমূলক শ্রম বন্ধ ও নিরাপত্তা : শিশু-কিশোর ও জবরদস্তিমূলক শ্রম বন্ধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। 

১৪. সুসমন্বিত শিল্প সম্পর্ক ও সামাজিক সংলাপচর্চা : সুসমন্বিত-সৌহার্দ্যপূর্ণ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে শ্রমিক-নিয়োগকারীসহ সব পক্ষের দায়িত্বশীল আচরণ এবং কার্যকর সংলাপের কাঠামো ও প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।

 ১৫. শ্রম আদালত, ন্যায়বিচার ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পতির ব্যবস্থা : শ্রমিকের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য শ্রম আদালতের সংখ্যা বৃদ্ধি, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি ও অযথা হয়রানি বন্ধে সরকার উদ্যোগ নেবে। 

১৬. মর্যাদাপূর্ণ-হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ ও আদালতে বাংলা ভাষার প্রচলন করা : মর্যাদাপূর্ণ শ্রমসংস্কৃতির লক্ষ্যে শ্রেণি, লিঙ্গ, বর্ণ, জাতিভেদে অবমাননাকর ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক ভাষার ব্যবহার রোধ করতে হবে। কর্ম ক্ষেত্রে তুচ্ছার্থে তুই-তুমি সম্বোধন চর্চা বন্ধ করতে হবে। শ্রম আদালতের শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল থেকে হাইকোর্ট ও অ্যাপিলেট ডিভিশন পর্যন্ত সর্বত্র বাংলা ভাষার প্রচলন করতে হবে। 

১৭. সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও প্রতিনিধিত্বে নারী-পুরুষ শ্রমিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ : শ্রমসংশ্লিষ্ট নীতি ও বিভিন্ন জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ বাস্তবায়নে নারী-পুরুষ উভয় শ্রমিক ও তার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। 

১৮. বিদ্যমান তহবিলের স্বচ্ছতা ও আপৎকালীন তহবিল গড়ে তোলা : দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, ব্যবসায় আকস্মিক সংকটের কারণে শ্রমিকের মজুরি ও উৎপাদন অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সরকার জরুরি ও আপৎকালীন তহবিল গঠন করবে। বিদ্যমান শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন, কেন্দ্রীয় তহবিলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। 

১৯. শ্রমিক ইতিহাস-ঐতিহাসিক স্থান সুরক্ষা ও স্মৃতিসৌধ গঠন : শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস ও ঐতিহাসিক স্থান সুরক্ষা, স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর গঠনে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাঠ্যক্রমে শ্রমিকের সংগ্রাম অন্তর্ভুক্ত ও ইতিহাস সংরক্ষণ করতে হবে। 

২০. চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান ও শ্রমিক আন্দোলনে নিহত শ্রমিকদের রাষ্ট্র শহীদের স্বীকৃতি দেবে। শ্রম ক্ষেত্রে আহত শ্রমিকের পুনর্বাসন ও চিকিৎসায় রাষ্ট্র দায়িত্ব গ্রহণ করবে। 

২১. শিল্পের বিকাশ, শিল্পায়ন ও টেকসই ও শ্রমঘন শিল্প প্রতিষ্ঠা, উদ্যোক্তা গড়ে তোলার জন্য ব্যাপক ও পরিকল্পিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এ লক্ষ্য আন্ত মন্ত্রণালয় টাস্কফোর্স গঠন এবং শিল্প, দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসংশ্লিষ্ট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে। 

২২. শ্রমিক ও তার পরিবারের জন্য শিল্পাঞ্চলে নাগরিক সুবিধা ও সেবা বিশেষ করে শিক্ষা, চিকিৎসা, স্বাস্থ্যবিমা, সেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির যথাযথ সরবরাহ ও অন্যান্য খাতগুলো যাতে শ্রমজীবী মানুষের জন্য পরিচালিত হয়, তার উদ্যোগ নেওয়া যাতে শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়। 

২৩. জলবায়ু ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বিবেচনায় নিয়ে কর্মপরিবেশ গঠন : আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি ২০৩০) অর্জন, আইএলও ডিসেন্ট ওয়ার্ক কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও পরিপালন করতে হবে। 

২৪. দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে প্রধান ভূমিকা পালন করে অভিবাসী শ্রমিক তাদের অভিবাসন এবং দেশে ফিরে আসার পর দেশের অর্থনীতি ও সমাজে ভূমিকা পালনের জন্য শ্রম অভিবাসন ব্যবস্থাপনা, শ্রমিকদের অধিকার, কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতে রাষ্ট্র উদ্যোগ গ্রহণ করবে। 

২৫. শ্রম বিষয়ক গবেষণা ও জরিপ : শ্রমশক্তি দেশের অন্যতম সম্পদ। ফলে এর জরিপ, শ্রমসংক্রান্ত গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সরকারের কাছে আলাদা বিভাগ গঠন করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। শ্রম সংস্কার কমিশন রিপোর্ট নিয়ে একদিকে যেমন বিপুল প্রত্যাশা আছে, অন্যদিকে অনেক ভালো কথার কোনো কার্যকারিতা নেই- এই তিক্ত অভিজ্ঞতাও আছে। সুপারিশের ভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি।

লেখক: সহ-সাধারণ সম্পাদক, বাসদ


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫