
বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতে সরকার পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের পথরেখা তৈরিতে কাজ করবে।
বহুদিনের প্রত্যাশা পূরণে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ এতদিন জনগণকে নিজেদের করের টাকা দিয়ে শুধু সরকারের গুণগান শুনতে হয়েছে। কিন্তু বিটিভি ও বেতার স্বায়ত্তশাসিত হলে গণমাধ্যম মানুষের কথাও বলবে, মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান দেখতে পারবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কমিটি কি সত্যিই কাক্সিক্ষত সংস্কার আনতে পারবে?
আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে দেশের বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যম আজ্ঞাবহ মাধ্যমে পরিণত হয়েছিল। যে কটি সংবাদমাধ্যম স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা করার চেষ্টা করেছিল, তাদের গলা টিপে ধরার সব চেষ্টাই বিগত সরকার করেছে। অন্যদিকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো বিটিভি ও বেতারের স্বায়ত্তশাসনের অঙ্গীকার করেছিল। পরে ক্ষমতার অংশীদার হওয়া রাজনৈতিক দল সেসব অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এবার সংস্কারের যে সুযোগ এসেছে তা হাতছাড়া করা যাবে না।
স্বায়ত্তশাসন মানে শুধু প্রশাসনিক, সম্পাদনাগত ও বাজেট ব্যবস্থাপনার স্বাধীনতা নয়, নিয়োগপ্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অবসানও জরুরি। বেতার ও বিটিভির সংবাদ কখনোই সরকার প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে খবর প্রচার করতে পারেনি। কারণ বিটিভির বার্তাকক্ষের একটি বড় অংশের নিয়োগ ছিল রাজনৈতিক বিবেচনায়। ফলে সব সরকারের আমলেই খবর ও অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ভেতরে ও বাইরে দলীয় ব্যক্তিদের প্রভাব ছিল।
তাই বিটিভি ও বেতারকে মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতার জায়গায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য দলীয় নয়, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম হিসেবেই এদের গড়ে তুলতে হবে।