
স্বঘোষিত বিশ্বগুরু অর্থই হচ্ছে বুদ্ধিহীন ক্লিবলিঙ্গ। সবার নেতা হওয়ার মতো যোগ্যতার অধিকারী ব্যক্তি কখনোই নিজকে যোগ্য মনে করেন না। পথ দেখিয়ে যাওয়াকে তারা জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেন এবং কাজ করে যান। ভারতের ইতিহাসে তেমন নেতা ছিলেন মোরারজি দেশাই এবং ইন্দোর কুমার গুজরাল। তবে তাদের শাসনামল দীর্ঘস্থায়ী না হওয়া এটাই প্রমাণ করে, দেশটির বৃহত্তর জনগোষ্ঠী গঠনমূলক উন্নয়নের পক্ষে থাকতে অথবা বুঝতে অক্ষম। অথবা অপশক্তির পেশিশক্তি অধিক।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির খুব একটা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তার দাবি করা শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে অনেক ভারতীয় নির্ভীক সাংবাদিক প্রশ্ন তুলেছেন। বিজেপি দলটি হচ্ছে আরএসএসের রাজনৈতিক শাখা। এই দলে শিক্ষা ও বুদ্ধিমত্তাকে বোঝা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই আমরা দেখি দলটিতে ইতিবাচক মানসিকতার সদস্য সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। অশিক্ষিত এই দলটি বহু বছর ধরে ক্ষমতায় আছে একই কারণে। ভারতে এখনো বিশাল জনগোষ্ঠী শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত। তাদের যা বোঝানো যায় তাই বোঝে। মোদিও ক্ষমতায় দীর্ঘদিন থাকার উদ্দেশ্যে এই সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছেন। তিনি অসংখ্য নেতিবাচক নীতি তাদের গ্রহণ করাতে পেরেছেন।
ফলে আমরা দেখলাম ধর্ম নিরপেক্ষ ভারত গত ১১ বছরে একটি মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হলো এবং দেশে-বিদেশে ব্যাপক ঝামেলা বাধিয়ে ফেলেছে। সেগুলো হ্রাস পাওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না; বরং ক্ষেত্রবিশেষে আরো উসকে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি কথা দিয়েছিলেন, দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান করবেন, মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধান করবেন এবং বিনিয়োগ নিয়ে আসবেন। বাস্তবে তিনি ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের কাছের মানুষের বিভিন্ন ব্যবসা পাইয়ে দিয়েছেন, নীতিগত কারণে বিনিয়োগ আনতে ব্যর্থ হয়েছেন, সাম্প্রদায়িকতা ও সংঘাত ভয়াবহভাবে উসকে দিয়েছেন এবং প্রতিপক্ষকে স্তব্ধ করে দেওয়ার নীতি নিয়েছেন। আমাদের হাসুবুও একই পলিসি অনুসরণ করতেন। মনে প্রশ্ন জাগে, আসলে কে কাকে নকল করতেন! যদিও আমাদের জন ক্ষমতায় আরোহণ করেছিলেন আগে।
মোদির নেওয়া অভ্যন্তরীণ নীতিগুলোর প্রতিফলন ঘটেছে তার পররাষ্ট্রনীতির মধ্যেও। অশিক্ষার কারণে তিনি বিশ্লেষণ করতে পারেননি যে বিশ্ব তার আকাক্সক্ষা অনুযায়ী চলে না। ফলে সব প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। বহির্বিশ্বে তিনি তিন পরাশক্তির সঙ্গেও সম্পর্ক নষ্ট করেছেন। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ঐতিহ্যগত সুসম্পর্ক ছিল। মোদি এসে নৌকার মুখ শ্যাম চাচার দিকে ঘুরিয়ে দেন, চাচাজির ইতিহাস না পড়েই। ফলে রাশিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা হারান। ওদিকে শ্যাম চাচা হিসাব করে দেখলেন, ভারত তার কোনো কাজে আসছে না। তাদের না আছে তেল, রেয়ার আর্থ মিনারেল অথবা শেখার মতো কোনো প্রযুক্তি। আবার চীনের কার্যকর প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়াতেও ভারত অক্ষম। তাই বলতে গেলে ট্রাম্প ভারতকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। ভারত তাতে নাখোশ, কিন্তু চাচাজি তা থোরাই কেয়ার করেন। এদিকে চীনের সঙ্গে তো স্বাধীনতার পর থেকেই ঝামেলা লেগে আছে।
তাহলে কি দাঁড়াল! ভারত প্রতিবেশীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ এবং কোনো সুপার পাওয়ারের গুডবুকে ঢোকার অযোগ্য। ভারতে অনেক বুদ্ধিমান মানুষও আছেন। তারা সাহস করে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন এবং ইতিবাচক পরামর্শ দিচ্ছেন। নরেন্দ্র মোদির সরকার সেগুলো আমলে নেবে বলে মনে হয় না। তারা নিজেদের অজান্তে হয়তো নো-ম্যানস ল্যান্ডেই থেকে যাবেন। ভবিষ্যৎই বলে দেবে আলটিমেটলি ভারত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়!