নতুন বন্দোবস্তের রাজনীতিতে ‘সংস্কৃতি’র স্থান কতটা

ইমরান মাহফুজ
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩১

ফ্যাসিবাদ যেমন দীর্ঘ হয়েছে সাংস্কৃতিক রাজনীতির আবর্তে, তেমনি চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে সংস্কৃতির ভূমিকাও ছিল অসামান্য দরদি। ছড়া, গান, কবিতা স্লোগানে সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে প্রেরণা দিয়েছে ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে। এভাবে উনসত্তর থেকে প্রতিটি গণ-অভ্যুত্থানের আগে বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ প্রেরণা দিয়েছিল পাথর ভাঙতে। ক্ষমতার ছায়াকেন্দ্র ভাঙলেও ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ ও ব্যবস্থা অটুট থাকার রয়েছে আলামত। ফলে সত্যিকারের চিন্তা ও সংস্কার বাস্তবায়নে নতুন রাজনীতিতে সংস্কৃতিচর্চার বিকল্প নেই।
প্রখ্যাত নৃবিজ্ঞানী এডওয়ার্ড বার্নেট টেইলরের মতে, ‘সংস্কৃতি হলো সেই জটিল সামগ্রিক চেতনা, যার মধ্যে রয়েছে জ্ঞান, বিশ্বাস, শিল্প, আইন, নৈতিকতা, প্রথা এবং সমাজের সদস্য হিসেবে মানুষের অর্জিত সামগ্রিক ক্ষমতা ও অভ্যাস।’ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমরা কত অবহেলায় না রেখেছি।
একনায়কতন্ত্রের দুঃসহ অধ্যায় থেকে মুক্তি পেতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে বারবার। অবশেষে হাজারো শহীদের ত্যাগে পালিয়েছে সেই স্বৈরাচার। তারপর কেটে যাচ্ছে ১২ মাসের বেশি সময়। নতুন চিন্তা, বন্দোবস্ত, নির্বাচন ও সংস্কারের আলাপ করতে ক্লান্ত নেতা থেকে কর্মী। শিক্ষা-সংস্কৃতি নিয়ে সিরিয়াস ভাবনা দেখছি না কোথাও। অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই অবস্থা। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যকার স্বাভাবিক কথোপকথন বা পারস্পরিক আলাপচারিতা, গান-কবিতা, বই পড়া উধাও হয়ে গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের দায়সারা নোটিশে ফিরতে বললেও নেই তদারকি। এর মাঝে কোনো উপদেষ্টা বা রাজনৈতিক নেতাও বলেননি জাতি তোমাদের প্রতি কৃতজ্ঞ; কিন্তু এখন ক্লাসে যাওয়া জরুরি। কারণ ভবিষ্যৎনির্ভর করছে তোমাদের জ্ঞান, সেই সঙ্গে উদ্ভাবন ও উদ্যোগ কাজে লাগানোর ওপর।
স্বাধীনতার ৫৫ বছরে আমাদের, সাহিত্য সংস্কৃতি-শিক্ষাব্যবস্থা কোথায় দাঁড়িয়ে আছে? আমরা অনেকবার শিক্ষা কমিশন গঠন, সংশোধন করেছি পাঠ্যক্রম, খরচ করেছি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার; তার পরও জাতিকে এমন সাহিত্য সংস্কৃতি, মূল্যবোধের শিক্ষাব্যবস্থা দিতে ব্যর্থ হয়েছি, যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করবে। এবারও ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছি, কিন্তু সাহিত্য সংস্কৃতি, শিক্ষা নিয়ে একটিও নেই। এতেই প্রমাণ হয়, আমাদের অগ্রাধিকার!
একটি আদর্শ রাষ্ট্রে, রাজনৈতিক দল বা নেতার মধ্যে সাংস্কৃতিক বোধ না থাকলে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সমাজ, তা ভাবা যায়? সংস্কৃতিহীন সমাজ কাঠামো মাকাল ফলের মতো।
খ.
চিকিৎসাব্যবস্থা যেমন আমাদের দৃশ্যমান সুস্থ রাখে, তেমনি রাজনীতি সমাজকে করে গতিময় এবং সংস্কৃতি জীবনকে করে পরিস্ফুটিত বা ছন্দময়। এমন পরিস্থিতে স্বৈরাচারী শাসন যেমন আমাদের কাম্য নয়, তেমনি সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা ছাড়া জনজীবন হয় দুর্বিষহ।
রাজনৈতিক দল, সামাজিক আন্দোলন ও বুদ্ধিজীবী মহলে সংস্কৃতির চর্চা হলে তা বৃহত্তর সমাজের কাজে লাগে। কারণ শিক্ষার মধ্য দিয়ে মানুষ নিজে ও চারপাশকে সুন্দর ও সমৃদ্ধ করার যে প্রবণতা; তারই মধ্যে নিহিত থাকে সংস্কৃতি। সংস্কৃতি যেমন ব্যক্তিগত জীবনের ব্যাপার, তেমনি সমষ্টিগত সমাজেরও। এর মাঝে বোঝাপড়ার ঘাটতি, দেশি-বিদেশি আত্মঘাতী চিন্তায় জড়ালে সংস্কৃতির আগ্রাসন ঘটে।
নব্বইয়ের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে গত দেড় দশকে রাজনৈতিক দলগুলোতে নীতিহীনতা এবং মূল্যবোধ সংকটে রাজনৈতিক পথচলা দুরবস্থায় পড়েছে। আদর্শের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবার আগে দলের ভেতর গণতন্ত্রের চর্চা করতে হবে। দলীয় গণতন্ত্র এবং নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও কার্যকর হতে হবে। রাজনৈতিক দলের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র বার্তা দেয় সমাজে কোন ধরনের গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে। সময়ের আলোচিত দল বিএনপিসহ প্রায় রাজনৈতিক দলের প্রধানের হাতেই থাকে সর্বময় ক্ষমতা। ফলে আমাদের কোনো দলেই গণতন্ত্র, জবাবদিহি, গঠনমূলক সমালোচনা, ভোটে নেতা নির্বাচনের সংস্কৃতি নেই বললেই চলে।
আমরা জানি, সমাজ শৃঙ্খলার জন্য দেশের পুলিশ প্রশাসনে প্রতি বছরে বরাদ্দ বাড়ে, প্রয়োজনও বটে। কিন্তু মানসিক শৃঙ্খলা-মূল্যবোধের জন্য সাহিত্য সংস্কৃতির বিকল্প নেই। সেই সংস্কৃতি নিয়ে দায়িত্বশীল কারো আলাপ নেই, অর্থ ছাড়া ভিশন-মিশন নেই রাজনীতিতে। অন্যদিকে মানুষ ছাড়া আর কোনো প্রাণীরই সংস্কৃতি নেই। মানুষ কেবল বেঁচে থেকেই সন্তুষ্ট থাকেন না, নিজের উন্নতি করতে চেষ্টা করে। বেঁচে থাকার ও উন্নতি করার জন্য মানুষকে চিন্তা ও কাজ করতে হয়। এই চিন্তা করা শেখায় সংস্কৃতি, নির্মাণ করে রুচিসম্মত সমাজ, ইভ টিজিং, ধর্ষণ ও বাল্যবিয়ের মতো বহুমাত্রিক সংকট দূর করে সংস্কৃতি। অথচ এই খাতে রাষ্ট্রের বরাদ্দ ১ শতাংশও না।
এমন ঘোরতর বিষয়ে জাতীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরও কথা বা প্রতিশ্রুতি নেই। সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা নেই। দু-একজন কবি, লেখক ও শিক্ষক কথা বললেও সে কথার বাস্তবায়ন নেই। বিএনপি, এনসিপি ও জামায়াত গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দলের গত ছয় মাসে
২৪-২৫টি রাজনৈতিক বক্তৃতা শুনলাম। কারো মুখে সংস্কৃতির নিজস্বতা বা লাইব্রেরি/পাঠাগার, সমাজ বিকাশে বই পড়ার ভূমিকার সিরিয়াস আলাপ শুনিনি। সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছে নির্বাচন, সংস্কার, সংবিধান ও নতুন বন্দোবস্ত। টেলিভিশনে দু-একজন দায়সারাভাবে বলেছেন সংস্কৃতি নিয়ে। প্রশ্ন হচ্ছে সংস্কৃতিবিষয়ক এমন ‘পরমাণু বাজেট’ আর সংস্কৃতিবিমুখ নতুন বন্দোবস্তে, এত এত রাজনীতিবিদ নিয়া আমরা কি করব!
জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে, লাইব্রেরি, পাঠাগার, ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মাজার, সুফি দরবার শরিফ, পাগল-ফকিরদের মাজার ও বাউল-ফকিরদের আখড়া-আস্তানায় হামলা হয়েছে।
সাংস্কৃতিক ক্লাব ও ঐতিহাসিক নিদর্শনও আক্রমণের শিকার হয়েছে। বেশির ভাগ ঘটনা প্রশাসনিক শূন্যতায় এবং সেপ্টেম্বরজুড়ে শিথিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে। তবে ময়মনসিংহে ২০০ বছরের পুরোনো একটি মাজারে বার্ষিক ওরস ও কাওয়ালি গানের উৎসবে হামলার তিন দিন পর
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মাজার বা বাউল সংগীত, কাওয়ালি গানের আসরে কোথাও কোথাও হামলা হচ্ছে, সব জায়গায় না। একটি জায়গায় হলেও আমরা টলারেট করব না, আমাদের অবস্থানটা খুব পরিষ্কার, এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণু।’
এই সোচ্চার অবস্থান কিছুটা কাজে লাগলেও রাজনৈতিক সংগঠন বা নেতাদের যথাযথ দায়িত্বশীল ভূমিকা দেখিনি, দেখিনি লাইব্রেরি, পাঠাগারের পাশাপাশি বাংলায় সুফি দর্শনের নিদর্শন আগলে রাখার আন্তরিকতা। অথচ সুফি দরগাহ ও মাজারগুলো বাংলার মানুষের কাছে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সব ধর্মের, সব মতের সঙ্গে পারস্পরিক হাত ধরাধরি করে চলা আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতি। ফলে এর সঙ্গে যুক্ত হাজারো মানুষের প্রাণে চলে অন্তর্দহন।
গ.
বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়নে প্রতিটি জেলার মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির,স্কুল-কলেজের হিসাব থাকলেও লাইব্রেরি পাঠাগার বা সংস্কৃতি ক্লাবের কোনো হিসাব নেই। এনজিও থেকে
কৃষিজমি সব কিছুর তথ্য থাকলেও সংস্কৃতিচর্চার কোনো আলাপ নেই, নেই কোনো তথ্য জাতীয় বাতায়নে।
গণ-অভ্যুত্থানের পরও আমাদের আলো কোথায়! সংকট দেখি সর্বত্র! প্রসঙ্গত, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘সবাই বলছে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু কোন দিকে? মনে রাখতে হবে উন্নয়নের বিরাট একটা অংশ সংস্কৃতি, সংস্কৃতির অংশ পাঠাগার। পাঠাগার মানুষকে নানা বিষয় জানতে ও বুঝতে ভূমিকা রাখে। আধুনিক যুগে মানসিক স্বাস্থ্য ছাড়া কোনো উন্নয়ন দীর্ঘস্থায়ী হবে না। আর মানসিক স্বাস্থ্য সুন্দর রাখতে গভীরভাবে কাজ করে বই ও পাঠাগার, তথা সংস্কৃতির অবিরাম চর্চা।’
সারা দেশে সরকারি গ্রন্থাগার আছে ৭১টি। এর বাইরে বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত এক হাজার ৫৩২টি গ্রন্থাগার সরকারিভাবে নিবন্ধিত। বাংলাদেশ গ্রন্থসুহৃদ সমিতির প্রকাশনা থেকে পাওয়া যায়, বেসরকারি গ্রন্থাগার আছে এক হাজার ৩৭৬টি। পাঠাগার আন্দোলন বাংলাদেশ নামক সংগঠন দাবি করছে, কেবল ৪৭টি জেলায় দুই হাজার ৫০০টি পাঠাগার আছে। তবে দেশে গ্রন্থাগার বা পাঠাগার কতটি, সে হিসাব সরকারি কোনো সংস্থার কাছে নেই গণগ্রন্থাগার সমিতি দেশের সব গণগ্রন্থাগারের তথ্যসংবলিত গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রও নতুন করে নির্দেশিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে। সরকারি ৭১টি গ্রন্থাগারকে দেখভালের দায়িত্বে আছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর। বেসরকারি গ্রন্থাগারকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র। দুটো প্রতিষ্ঠানই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের মাধ্যমে বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলোকে সরকার বার্ষিক পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। এর মধ্যে অর্ধেক টাকা চেকের মাধ্যমে এবং অর্ধেক টাকার বই গ্রন্থকেন্দ্র থেকে সরবরাহ করা হয়। গত বছর দেশের এক হাজার ১০টি বেসরকারি পাঠাগারকে ক, খ, গ-তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে অনুদান দেওয়া হয়।
বই হাতে, মুঠোফোনে যেভাবে পড়ে পড়ুক, জ্ঞানের সঙ্গে থাকুক। কিংবা অডিও শুনুক, তবু জানুক আগামীকে। কারণ হতাশা কাটাতে ও দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের জন্য দরকার পড়ুয়া সমাজ। প্রকৃত জ্ঞানার্জন ও প্রাণশক্তির বৃদ্ধির জন্য দেশের সবখানে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা কিংবা অনলাইনে পাঠাগার পরিচালনার জন্য সবার আন্তরিকতা অত্যন্ত জরুরি।
এখন কে আগে এগিয়ে আসবে নাগরিক না রাজনৈতিক দল না রাষ্ট্র! রাজনৈতিক দলের ঘোষণাপত্রে সংস্কৃতি বা পাঠাগার নিয়ে নেই কোনো প্রতিশ্রুতি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বললেও মূল্যবোধের বিকাশে বই নিয়ে নেই আলাপ। গবেষক সাইফুর রহমানের মতে, রাষ্ট্র যে দুরারোগ্য রোগে ভুগছে মূলত তার জন্য দায়ী সমাজের নেতৃত্ব, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, আমলা, পেশাজীবী, গণমাধ্যম ও ব্যবসায়ী শ্রেণি। সাধারণ মানুষ সহজ ও সরল প্রকৃতির। তাই দেশের দুরবস্থার জন্য তারা মোটেও দায়ী নয়, এমন একটি ধারণা সমাজে রয়েছে। তবে একটি কথা প্রচলিত আছে, যার মর্মার্থ হলো, ‘যে দেশের জনগণ যেমন, রাষ্ট্র ঠিক তেমনই হয়ে থাকে।’ দেশের সম্পদ লুটের জন্য একজন দুর্বৃত্ত নেতা যেমন দায়ী, অজ্ঞতাবশত অথবা সামান্য টাকার লোভে ওই মানুষটিকে যে ভোট দিয়েছে সেও দায়ী।
দার্শনিক হান্না আরেন্ডট বলেন, রাজনীতির অন্যতম প্রধান কাজ মানুষকে সক্রিয় নাগরিকে রূপান্তর করা। গত ৫০ বছরে আমরা গতানুগতিক রাজনীতির পালাবদলে দেখেছি বিপরীত চিত্র। তারা অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে, চেয়ারে বসে আর কথা রাখে না। বঞ্চিত করে সাধারণ নাগরিককে ন্যায্য সুবিধা থেকেও। দুর্নীতি, টাকা পাচার, উন্নয়নের নামে লুটপাট রীতিমতো নিয়মসিদ্ধ করেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরে নতুন নেতৃত্ব বলছে, সংবিধান পরিবর্তন না হলে স্বৈরশাসন আবারও ফিরে আসবে, সেটা সম্পূর্ণ সঠিক না হলেও কাছাকাছি। এর সঙ্গে যোগ করব, রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্র পরিবর্তন ও মূল্যবোধের সংস্কৃতি চর্চা।
অনেক হতাশার পরও তারুণ্যের মাঝে আশা রাখতে চাই। কারণ পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতির সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এনসিপির উত্থানের মধ্যে রয়েছে অভিনবত্বের আকর্ষণ। এই মুহূর্তে তাদের উচিত পুরোনো বিতর্কে জড়ানোর পরিবর্তে নিজেদের ভবিষ্যতের দল হিসেবে উপস্থাপন করা, বুদ্ধিবৃত্তিক পাঠে নিজেদের তৈরি করা এবং নিজস্ব সংস্কৃতিচর্চায় এগিয়ে নেওয়া। মনে রাখতে হবে, রাজনীতির চিরন্তন শিক্ষা হলো ইতিহাসের পথরেখায় সঠিক সময়ে সঠিক লড়াই করা।
লেখক : কবি, গবেষক;
আহ্বায়ক আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পরিষদ