গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি শহীদদের স্বপ্ন যেন বৃথা না যায়

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১২:৩৯

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এই গণ-অভ্যুত্থান কেবল রাজনৈতিক অনিয়মের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ছিল না। বরং দীর্ঘদিনের জমে ওঠা ক্ষোভ, বঞ্চনা ও রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছিল একটি প্রজন্মের সুসংগঠিত প্রতিক্রিয়া। আন্দোলনে বহু মানুষ শহীদ, আহত ও নিখোঁজ হয়েছেন। এক বছর পর প্রশ্ন ওঠে, তাদের স্বপ্ন আজ কতটা বাস্তবায়িত হলো?
প্রতিটি গণ-আন্দোলনের মতো, এই অভ্যুত্থানও তার সময়ের সীমাকে অতিক্রম করে একটি অধিকতর ন্যায়সংগত, গণতান্ত্রিক ও সম-অধিকারের সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখেছে। অন্তর্বর্তী সরকার যদিও আন্দোলনের ফসল হিসেবে ক্ষমতায় এসেছে, তবে তাদের দক্ষতা ও কার্যকারিতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। অর্থনৈতিক দুরবস্থা, মূল্যস্ফীতি, বেকারত্বের ঊর্ধ্বগতি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি আজকের বাস্তবতা। এমনকি
গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় আজও কোনো জবাবদিহি নেই। বিচারের আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে ন্যায়বিচার ব্যাহত হচ্ছে মামলা বাণিজ্য ও প্রশাসনিক গড়িমসির কারণে।
দলীয় সংকীর্ণতা ও ব্যক্তি স্বার্থে ভাঙন ধরেছে সম্মিলিত আন্দোলনের চেতনায়। এমন একটি প্রেক্ষাপটে সামনে আসছে নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।
মনে রাখতে হবে শহীদদের স্মরণ কেবল আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ রাখলেই চলবে না। চব্বিশের চেতনা আমাদের শিখিয়েছে, অন্যায়ের কাছে নীরব থাকা মানে অন্যায়ের অংশীদার হওয়া, আর প্রতিরোধ মানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি আলোকিত ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এখন সময় সেই চেতনাকে শুধু স্মৃতিতে ধরে রাখার নয়; বরং তা প্রতিদিনের কাজে, সিদ্ধান্তে ও সমাজ গঠনে রূপান্তরিত করার।