Logo
×

Follow Us

অন্যান্য

জুলাই ঘোষণা লুটেরা মাফিয়াদের দলিল হয়েছে: ফরহাদ মজহার

Icon

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৫৩

জুলাই ঘোষণা লুটেরা মাফিয়াদের দলিল হয়েছে: ফরহাদ মজহার

দেশকাল নিউজ ডটকমের মুখোমুখি ফরহাদ মজহার।

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস যে জুলাই সনদ ঘোষণা করেছেন, তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন লেখক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক চিন্তক ফরহাদ মজহার। তার মতে, এই সনদ লুটেরা মাফিয়াদের দলিল হয়েছে, এতে জনগণের অভিপ্রায় নেই। আর এটি দেওয়া উচিত ছিল গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের, যা গত বছরই দিলে ভালো হতো।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক বছর পূর্তিতে সাম্প্রতিক দেশকালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক গত এক বছরের মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন। এতে সরকারের প্রতি, তরুণদের রাজনৈতিক দলের প্রতি তার হতাশা ফুটে উঠেছে।

ফরহাদ মজহার মনে করেন, ৫ আগস্ট বিজয়ী জনগণকে আবার পরাজিত হতে হয়েছে। তবে এতে জনগণের লড়াই থেমে যাবে বলে মনে করেন না তিনি।

এই এক বছরে সরকারের কী অর্জন দেখেন?

বিরাট অর্জন। আমি কথা বলতে পারছি, এর চেয়ে বেশি কী অর্জন চাইব আমি? আমি লোকের কাছে যেতে পারছি। আমার সঙ্গে কথা বলতে আসছে। এটা তো বিশাল ব্যাপার।

কারণ জনগণকে শিক্ষিত করা ছাড়া তো আমি অগ্রসর হতে পারব না। আমাকে গালি দিক যাই দিক! একবার ভাববে এই লোকটা ঠিকই তো বলে।

ব্যর্থতা কী দেখেন?

রাষ্ট্র গঠন করতে না পারার ব্যর্থতা। কেন পারে নাই এটা বোঝা গিয়েছে। আগে ধারণা ছিল না। এটা করতে গিয়ে বুঝি, আমাদের এখানে যে সামাজিক-বুদ্ধিবৃত্তিক স্তরটা আছে, সেটা বোকামোর স্তরে আছে।

এটা যেহেতু নাই, এটার জন্য আমি ঘরে বসে থাকব নাকি এটাকে ঠিক করব? তাহলে আমার আগামী লড়াইটা বুঝে গেলাম—পরিষ্কার, এটা বিরাট লাভ আমার জন্য। এটা তো আমি আগে বুঝি নাই যে এত খারাপ অবস্থা সমাজের।

জুলাই সনদকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

ড. ইউনূস করেছেন জুলাই সনদ। কিন্তু জুলাই সনদ করার কোনো অধিকার উনার নাই। উনি গণঅভ্যুত্থানের কেউ না, উনি গণঅভ্যুত্থানের ফল। ফলে জনগণের অভিপ্রায় যখন আপনি ঘোষণা দেন, এটাকে বলে ঘোষণা। এই ঘোষণার আইনি এবং রাজনৈতিক মানে হলো প্রোক্লেমেশন। যেমন, ‘প্রোক্লেমেশন অব ইন্ডিপেনডেন্স’, যে আমরা কেন স্বাধীনতা চাই। তো আমরা কেন জুলাই গণঅভ্যুত্থান করলাম এবং আমরা কী চাই, তাকে বলে ঘোষণা। আমরা বলব। এটা তো কারও বলার অধিকার নাই। জনগণের বলার অধিকার।

এটা কখন বলতে পারত? এটা বলতে পারত ৫ তারিখের (২০২৪ সালের ৫ আগস্ট) পরপরই, হয় রাজু ভাস্কর্য অথবা শহীদ মিনারে। তারা বলতে পারত, ‘এই হল ঘোষণা, আমরা এটা কায়েম করতে চাই এবং এটা কায়েম করবার জন্য আমরা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করছি।’

কেন? ‘কারণ আমরা সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করতে চাই। অতএব, যুদ্ধ করে আমরা এটাকে প্রতিষ্ঠা করি।’এটাকে বলে ঘোষণা।

কিন্তু যা হয়েছে, এগুলো তো তামাশা। এই তামাশা ড. ইউনূস শুরু করেছেন প্রথম। উনি ছাত্রদেরকে জুলাই ঘোষণা দিতে দিলেন না কেন? খুব সহজ। যদি আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কথা বলতাম, এটা অবশ্যই কোনো না কোনো পরাশক্তির স্বার্থের বিপক্ষে যেত। শুধু ভারতের বিপক্ষেই যেত না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেও যেত।

কারণ, জনগণ তো যুক্তরাষ্ট্রের দালাল না, ভারতের তো দালাল নয়ই, তাহলে জনগণ তো সকল প্রকার পরাশক্তির হাত থেকে মুক্তি চায়। এটাকে বলে জুলাই ঘোষণা।

তার মানে আপনার প্রথম থেকেই এই ব্যাপারে আপত্তি ছিল?

আগাগোড়ায় আপত্তি। আমি কখনও গ্রহণ করিনি। কারণ, কখনই আমি চাইনি এই ধরনের সেনা-সমর্থিত উপদেষ্টা সরকার ‘শেখ হাসিনার সংবিধান রক্ষা করব’ এই শপথ নিয়ে গঠিত হোক। এটাই ছিল জনগণের সঙ্গে প্রথম বেইমানি।

এটা তো জনগণের অভিপ্রায়কে ব্যক্ত করে না। জনগণ গণতন্ত্র চাইছে। জনগণ কোনো ফ্যাসিবাদ চায় নাই। জনগণ সেনাশাসন চায় নাই। আপনি বাইরে দিয়ে কী করলেন? আপনার একটা আস্তরণ ঘুরিয়ে আপনি সেনাশাসন চালালেন—ইন দ্য নেম অব উপদেষ্টা সরকার।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫