
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সাম্প্রতিক দাঙ্গা সফলভাবে নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্থির পরিস্থিতিতে কিছুটা স্বস্তি এনেছে।
এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে শুরু হওয়া আন্দোলন দ্রুতই সংঘর্ষ, সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ ও ১৪৪ ধারা জারির মতো চরম অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে রূপ নিয়েছিল। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, গুইমারায় গুলিতে তিনজন পাহাড়ি নিহত এবং মেজরসহ ১৬ জন সেনা ও পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে।
ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ হবে, এটাই স্বাভাবিক ও যৌক্তিক; কিন্তু এই প্রতিবাদ যখন ব্যাপক সহিংসতা, অবরোধ ও সশস্ত্র সংঘাতের জন্ম দেয়, তখন প্রশ্ন ওঠে এই আন্দোলনের পেছনে কেবল ন্যায়বিচার চাওয়াই কি মূল উদ্দেশ্য, নাকি তৃতীয় কোনো পক্ষের ইন্ধন ও স্বার্থসিদ্ধি কাজ করছে? পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টার অভিযোগ-ধর্ষণের ঘটনাকে ইস্যু বানিয়ে তৃতীয়পক্ষ ফায়দা নেওয়ার জন্য ইন্ধন জোগাচ্ছে। এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের ইন্ধনে খাগড়াছড়িতে অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখা দরকার।
খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও সংঘটিত সহিংসতা, সড়ক অবরোধ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ এই বার্তাই দেয় যে, কোনো স্বার্থান্বেষী পক্ষ আইনকে তোয়াক্কা না করে অস্থিতিশীলতা জিইয়ে রাখতে চাইছে।
খাগড়াছড়ির কিশোরী ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত বাকি দুজনকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সহিংসতা, অগ্নিকাণ্ড, লুটপাটের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা অপতথ্য ছড়িয়ে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা জরুরি। সহিংসতায় নিহত, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো ও যৌক্তিক ক্ষতিপূরণ দেওয়াটাও রাষ্ট্র ও সরকারের জরুরি কর্তব্য বলে আমরা মনে করি।