 
					রাজধানী ঢাকায় নাগরিক জীবনের নিরাপত্তা আজ গভীর প্রশ্নের মুখে। বাসাবাড়ি থেকে বেরিয়ে মানুষ নিরাপদে ঘরে ফিরবে, সেই নিশ্চয়তাও যেন নেই। দুর্ঘটনা, অব্যবস্থাপনা আর উদাসীনতার শহরে অস্বাভাবিক মৃত্যু এখন নিত্যকার ঘটনা। যার সর্বশেষ উদাহরণ মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে তরুণ আবুল কালামের মর্মান্তিক মৃত্যু।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধনের পর থেকে যানজটের নগরীতে মেট্রোরেল অনেকের জীবনে নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। কিন্তু ফার্মগেট এলাকার এই দুর্ঘটনার পর সেই নির্ভরতার জায়গা এখন দখল করেছে নানা আশঙ্কা। এর আগেও ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে একই এলাকায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। তখন সৌভাগ্যবশত প্রাণহানি ঘটেনি। কিন্তু এবার ৩৫ বছর বয়সী আবুল কালামের মৃত্যু প্রমাণ করে, প্রথম ঘটনার পরও কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো। তাই একে নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলাজনিত মৃত্যু বলা যায়।
তবে প্রশ্ন শুধু মেট্রোরেলেই সীমাবদ্ধ নয়। রাজধানীতে এখন প্রায় প্রতিদিনই মৃত্যু আসে কখনো ভবনধসে, কখনো আগুনে বা কখনো সড়কে। বেশির ভাগ ভবনেই অগ্নিনিরাপত্তা নেই, নির্মাণে তদারকি নেই-সব মিলিয়ে নগরজীবন আজ নিরাপত্তাহীন।
আমরা মনে করি, এখনই রাজধানীর প্রতিটি স্থাপনা, গণপরিবহন প্রকল্পে নিয়মিত তদারকি ও প্রযুক্তিগত পর্যবেক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। আধুনিক নগর পরিবহন ব্যবস্থা মানে শুধু দ্রুতগতি নয়, বরং নাগরিকের নিরাপত্তা ও আস্থার নিশ্চয়তা। ঢাকায় সেই আস্থা টিকিয়ে রাখতে হলে এখনই চাই স্বচ্ছ তদন্ত, কঠোর জবাবদিহি ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের নিশ্চয়তা। তা ছাড়া রাষ্ট্রের কাজ শুধু তদন্ত কমিটি গঠন কিংবা ক্ষতিপূরণে সীমাবদ্ধ নয়, বরং দায়ীদের চিহ্নিত ও শাস্তি নিশ্চিত করাও তার দায়িত্ব।


