জলবায়ু পরিবর্তন: অভিযোজন সক্ষমতা বাড়ানো হবে দক্ষিণ এশিয়ায়

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২০, ০৯:১০

ছবি: ইউএনবি
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে অভিযোজন বাড়াতে ও ত্বরান্বিত করতে ঢাকার গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশন (জিসিএ) বড় ভূমিকা রাখবে।
জিসিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাট্রিক ভারকুইজেন বলেন, অভিযোজন প্রক্রিয়া গতিশীল ও ত্বরান্বিত করতে কোন বিষয়টি কাজ করছে ও কোনটি কাজ করছে না তা আমাদের জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে পুরো অঞ্চলে বিশেষত বাংলাদেশে প্রচুর অভিযোজনের কাজ হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সাফল্যের গল্পগুলোর মাধ্যমে এ অঞ্চলে সেরা অনুশীলনগুলোর প্রতিরূপ বাস্তবায়নে দৃঢ় নজর দিতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বার্তাসংস্থা ইউএনবিকে বলেছেন, আমরা জিসিএ’র মাধ্যমে আমাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরব। আমি আশা করি আমরা যখন আমাদের সফলতার উদাহরণগুলো তুলে ধরব তখন অন্য অংশীদাররা এ বিষয়ে এগিয়ে আসবে।
এ অঞ্চলে জলবায়ু সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সত্যিকারভাবে বাংলাদেশকে কোনো প্রতিশ্রুতি ও সহায়তা করবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই, আমরা এমনটা পেয়েছি তবে তা সীমিত। ঢাকাতে জিসিএ কেন্দ্র হওয়াই এক ধরনের সমর্থন ও আরো অনেক দেশ এগিয়ে আসবে বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। বাংলাদেশ একাই অনেক ভালো কাজ করছে।
বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক ২০১৯ অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকবিলায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় অভিযোজন কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে এবং এ দেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ফোরাম ও ভালনারেবল টোয়েন্টি (ভি২০) গ্রুপ অব মিনিস্টারস অব ফিন্যান্সের বর্তমান সভাপতি।
গণমাধ্যমসহ সবার সহায়তা চেয়ে পরারাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্যে আমাদের প্রচার চালাতে হবে। আমরা একই পৃথিবীতে বাস করছি। আমাদের বিশ্বকে রক্ষা করতে হবে। সেজন্য আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। আমাদের অংশীদাররা বিশেষ করে যুক্তরাজ্য আমাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করে আসছে।
তিনি বলেন, তবে তা প্রত্যাশার চেয়ে এখনো অনেক কম। অন্য অংশীদারদের কীভাবে এগিয়ে আসা উচিত সে বিষয়ে কথা বলতে হবে। এটি কেবল আমাদেরই সমস্যা নয়। এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা ও বৈশ্বিকভাবে একে মোকাবিলা করতে হবে। সব দেশকেই এগিয়ে আসতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
প্যাট্রিক বলেন, এ অঞ্চলের সরকার, অংশীদার ও উন্নয়ন অংশীদারদের প্রচেষ্টার সাথে সামঞ্জস্য রেখে তারা কাজ করতে খুবই আগ্রহী। একসাথে কাজ করলে তা আরো সঙ্গতিপূর্ণ, শক্তিশালী ও কার্যকর হবে।
বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ও সমর্থন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ডাচ সরকারের সমর্থন রয়েছে। তবে সামনের দিনগুলোতে জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা ও সাহায্য করার জন্য সামগ্রিকভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আরো অনেক কিছু করা প্রয়োজন রয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকায় দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক কেন্দ্র গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশন (জিসিএ) স্থাপনকে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের মাইলফলক হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। অভিযোজন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও সবচেয়ে কার্যকর অনুশীলনগুলো সবার সাথে ভাগ করে নিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত আছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৮২ বছরব্যাপী ‘ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ প্রণয়ন করেছে।
এ অঞ্চলে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে সফল ও উল্লেখিত অগ্রগতি অর্জনে বাংলাদেশ তার প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবে বলে আশাবাদী।
গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় সিজিএ’র নতুন আঞ্চলিক কার্যালয় জিসিএ বাংলাদেশের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সিজিএ’র চেয়ারম্যান ও জাতিসংঘের অষ্টম মাহসচিব বান কি মুন ও নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট উপস্থিত ছিলেন। জলবায়ুর জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় কার্যকর অভিযোজনকে ত্বরান্বিত ও এগিয়ে নিতে দক্ষিণ এশীয়ার বিভিন্ন দেশের সরকার, সিটি মেয়র, ব্যবসায়ী নেতা, বিনিয়োগকারী, সম্প্রদায় ও সুশীল সমাজের সহায়তায় আঞ্চলিক কার্যালয় কাজ করবে। -ইউএনবি