
বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস আজ ১৪ নভেম্বর (শনিবার)। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ডায়াবেটিস-সেবায় পার্থক্য আনতে পারেন নার্সরাই’।
বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯১ সালে ১৪ নভেম্বরকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এইদিনেই বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক বেনটিং জন্ম নিয়েছিলেন ও তিনি বিজ্ঞানী চার্লস বেস্টের সাথে একত্রে ইনসুলিন আবিষ্কার করেছিলেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, ডায়াবেটিস হলে ক্লান্তি, অবসন্নতা, ওজন হ্রাস, পিপাসা ও ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাবের লক্ষণ দেখা দেয়। ডায়াবেটিসের কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবার এড়িয়ে চলা ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকা যায়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও সরকারি-বেসরকারিভাবে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ডায়াবেটিস সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে চিকিৎসক, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি ও গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
ডায়াবেটিক রোগীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে নার্সরা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ডায়াবেটিস যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে একজন ডায়াবেটিক রোগীকে নিয়মিত নিজে নিজে রক্ত পরীক্ষা ও ইনসুলিন দেয়া ছাড়াও ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয় জানা থাকা আবশ্যক। নার্সরা ডায়াবেটিক রোগীদের এসব বিষয়ে উপযুক্ত স্বাস্থ্যশিক্ষা দিতে পারলে যে কোনো ডায়াবেটিক রোগীর পক্ষেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়ে উঠবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের উদ্যোগের কারণেই দিবসটি ‘জাতিসংঘ দিবস’-এর মর্যাদা লাভ করেছে যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের।
তিনি বলেন, ডায়াবেটিক রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে আনা ও উপযুক্ত ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকদের পাশাপাশি নার্সরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। কারণ ডায়াবেটিস সুনিয়ন্ত্রণে রাখার ওপরই একজন ডায়াবেটিক রোগীর সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন নির্ভরশীল। আর এ কারণে নার্সরা যদি ডায়াবেটিক রোগীকে রক্ত পরীক্ষা, ইনসুলিন দেয়া ছাড়াও অন্যান্য বিষয়গুলো শিখিয়ে দিতে পারেন তবে ডায়াবেটিস-সেবায় বিশাল বদল আসতে পারে। এর জন্য নার্সদেরও উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অর্ধেকের বেশি মানুষ জানেনই না যে তারা এই রোগে আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, সাধারণত ৩০ বছরের বেশি বয়সীদের টাইপ-২ (শরীরে ইনসুলিনের ঘাটতি থাকে) ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। খাদ্যাভাসে পরিবর্তন ও নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে এ ধরনের ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। এজন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি সচেতনতা। আর এ কাজে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন নার্সরা।