রেডক্রস জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন করোনাভাইরাসের চেয়ে বড় হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতএব করোনা সঙ্কটের মতো জলবায়ু পরিবর্তনকেও একই ধরনের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত বিশ্বকে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (আইএফআরসি) নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, এমনকি মহামারির ভয়াবহ প্রকোপের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের ধ্বংসযজ্ঞ বিরতি নেবে না।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভাভিত্তিক সংস্থাটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, মার্চ মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখন মহামারির ঘোষণা দিলো সেসময় থেকে হিসেব করলে ১৯৬০-এর দশকের পর থেকে বিশ্বে শতাধিক বিপর্যয় ঘটেছে এবং সেসব বিপর্যয়ের বেশিরভাগ ছিল জলবায়ু সম্পর্কিত। ৫ কোটিরও বেশি মানুষ এসব বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এক ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে আইএফআরসি সেক্রেটারি জেনারেল জগান চাপাগেইন বলেন, কভিডের অস্তিত্ত্ব এখন অবশ্যই সরাসরি আমাদের পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়দের উপর প্রভাব ফেলছে। ইতিমধ্যে ১৩ লাখের বেশি মানুষ মহামারির ক্ষতির শিকার হয়েছে এবং চলমান বিশ্ব অত্যন্ত মারাত্মক সঙ্কট মোকাবেলা করছে।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, আইএফআরসি আশঙ্কা করছে- জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানবজীবন ও পৃথিবীতে আরো উল্লেখযোগ্য মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে। খুব শিগগির কভিড-১৯ এর এক বা একাধিক ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনা দেখা দিলেও দুর্ভাগ্যক্রমে জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো ভ্যাকসিন নেই।
বিশ্ব উষ্ণায়নের উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এই পৃথিবীতে মানুষের জীবনকে সত্যিকার অর্থে রক্ষার জন্য আরো অনেক বেশি টেকসই ব্যবস্থা ও বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে।
আইএফআরসি বলেছে, সাম্প্রতিক দশকগুলিতে চরম আবহাওয়া ও জলবায়ু সম্পর্কিত ঘটনাগুলোর ফ্রিকোয়েন্সি ও তীব্রতা ইতোমধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেবলমাত্র ২০১৯ সালে বিশ্ব ৩০৮টি দুর্যোগের কবলে পড়ে। তাদের মধ্যে ৭৭ শতাংশ জলবাযু বা আবহাওয়া সম্পর্কিত। এসব দুর্যোগে প্রায় ২৪ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সংস্থাটি আরো জানায়, ১৯৬০ এর দশক থেকে জলবায়ু ও আবহাওয়া সম্পর্কিত বিপর্যয়ের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে ও তা ১৯৯০ এর দশক থেকে প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। -এএফপি