‘চীনা সংশ্লিষ্টতা’য় ড্রাগন ফলের নাম বদলে দিলো ভারত

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২১, ১২:১৩

ভারতে গুজরাটের রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, ড্রাগন ফলের নামের সাথে ‘চীনা সংশ্লিষ্টতা’ থাকার কারণে এর নাম বদলে নতুন নামকরণ হবে ‘কমলম্’, যা পদ্ম ফুলের সংস্কৃত নাম।
গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঠাট্টা-মস্করার ঝড় বইছে, এক কথায় এবার ফলের নাম নিয়ে টানাটানিতে তোলপাড় সামাজিক মাধ্যম।
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি তার সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। পদ্ম ফুল হিন্দুদের জন্য পবিত্র ও এটি ভারতের জাতীয় ফুল। অন্যদিকে পদ্ম ফুল ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নির্বাচনি প্রতীকও।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়েছে। গুজরাট রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতে এখন এই ফলটির চাষ হয়। ক্যাকটাস পরিবারের এক ধরনের ফল ড্রাগন ফল। এই ফলের বাইরের আবরণে রয়েছে অনেকটা ড্রাগনের গায়ের চামড়ার মতো খোঁচা খোঁচা আঁশ, আর এর থেকেই এই ফলের নাম ড্রাগন ফল। এই ফল উৎপাদন হয় উষ্ণমন্ডলীয় আবহাওয়ায়, আর মধ্য আমেরিকা এর আদি জন্মস্থান। দক্ষিণ আমেরিকা থেকেই মূলত এই ফলের আমদানি। কিন্তু এই ফলের নামের কারণে ভারতে অনেকে মনে করে এই ফল এসেছে চীন দেশ থেকে।
ভারতে প্রতিবেশী চীনাদের সাথে ড্রাগন নামটা জড়ানোর সংস্কৃতি অনেক দিনের। একইভাবে ভারতীয়দের কথা উল্লেখ করতে চীনে হাতি শব্দটা ব্যবহারেরও প্রচলন রয়েছে।
গত বছর গ্রীষ্ম মওসুমে হিমালয় সীমান্তে বৈরি দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাতের পর থেকে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে শীতল সম্পর্ক বিরাজ করছে।
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী রুপানি গত মঙ্গলবার ড্রাগন ফলের নাম বদলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ড্রাগন ফল নামটি যথাযথ নয়। তাছাড়া ড্রাগন নামটি বললেই চীনের কথা প্রথমে মাথায় আসে। কাজেই এই ফলের নাম আমরা বদলে এর নাম ‘কমলম্’ দিয়েছি।
এর বেশি কিছু জানাননি রুপানি। কিন্তু তার এই মন্তব্যের পর থেকে সামাজিক মাধ্যম উত্তাল হয়ে উঠেছে ঠাট্টা-মস্করায়।
একজন টুইটারে মন্তব্য করেছেন, ‘চীনের ভারতীয় ভুখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সত্যিকার সৃজনী জবাব কী হতে পারে সামরিক ঐতিহাসিকরা সেটা জেনে নিন - এর জবাব হল সরকারিভাবে থাই ফলের নাম বদলে দেয়া। আমাদের সাথে কোনো গোলমাল বাঁধানোর চেষ্টা করলে এমন কড়া জবাবই পেতে হবে। আমরা সব কিছুর নাম বদলে দিতে পারি’।
বিজেপি সরকারের আমলে শহর থেকে রাস্তা সবকিছুর নাম বদলের যে হিড়িক পড়েছে, এসব ঠাট্টা-তামাশার মধ্যে দিয়ে সেইসব সিদ্ধান্তকে এক হাত নিয়েছেন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা।
অনেকেই বিজেপির এই উদ্যোগকে সমালোচনা করেছে এই বলে যে, ভারতের শতাব্দী প্রাচীন ইসলামী শাসনের ইতিহাস বিজেপি সরকার ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলতে চায়, ভারতের ইতিহাস নতুন করে লিখেত চায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার।
দিভেশ ভগত নামে একজন ঠাট্টার সুরে টুইট করেছেন, ‘ওরা এখন ফলের নামও বদলাতে শুরু করেছে!’
আরেকজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘তিনি অন্তত আশ্বস্ত যে ফলটা অন্তত তিনি খেতে পারবেন।’ -বিবিসি